কয়েনের থেকে ছোট, এক বার চার্জ দিলেই ফোন চলবে ৫০ বছর!

আপডেট: জানুয়ারি ২১, ২০২৪, ১:৪৫ অপরাহ্ণ


সোনার দেশ ডেস্ক :


একটিই মাত্র ব্যাটারি। ১০ টাকার কয়েনের থেকেও ছোট। কোনো রকম চার্জ ছাড়া সেই ছোট্ট ব্যাটারিই না কী ৫০ বছর অবধি চাঙ্গা রাখতে পারবে বিভিন্ন বৈদ্যুতিন যন্ত্রকে!
শুনতে অদ্ভুত লাগলেও চিনের এক দল বিজ্ঞানীর দাবি, তাঁরা এমনই এক ‘অবিনশ্বর’ ব্যাটারি তৈরি করেছেন যা বছরের পর বছর ধরে বৈদ্যুতিন যন্ত্রের ‘প্রাণভোমরা’ হয়ে কাজ করবে। কোনো রকম চার্জও সেই ব্যাটারিতে দিতে হবে না।

ওই স্টার্টআপ সংস্থার বিশেষজ্ঞদের দাবি, ছোট্ট এই ব্যাটারি চার্জ দেয়ার দরকার তো নেই-ই, এমনকী রক্ষণাবেক্ষণেরও তেমন প্রয়োজন নেই। ৫০ বছর ধরে ওই পারমাণবিক ব্যাটারি বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম বলেও দাবি করেছেন তারা।
সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই স্টার্টআপ সংস্থার দাবি, তথ্য প্রযুক্তিগত দিক থেকে ওই ব্যাটারি এক যুগান্তকারী আবিষ্কার।

সংস্থার তরফে এ-ও জানানো হয়েছে, ব্যাটারিটি নিয়ে বর্তমানে মোবাইল ফোন এবং ড্রোনের মতো বৈদ্যুতিন যন্ত্রের উপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে।
সংস্থার মতে, ব্যাটারিটি এমন ভাবেই তৈরি করা হয়েছে যাতে তা মহাকাশ গবেষণায় ব্যবহৃত যন্ত্র, এআই (কৃত্রিম মেধা), চিকিৎসা সরঞ্জাম, উন্নত সেন্সর থেকে ছোট ড্রোন এবং রোবটের মতো প্রযুক্তিতে ব্যবহার করা যায়।

সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পারমাণবিক ওই ব্যাটারিটির দৈর্ঘ্য, প্রস্থ এবং উচ্চতা ১৫ মিলিমিটার। পারমাণবিক আইসোটোপ এবং হিরের পাতলা আস্তরণ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে সেটি।
ব্যাটারিটির নির্মাতাদের দাবি, সংস্থাটি সফলভাবে ওই কয়েনের থেকে ছোট ব্যাটারিতে ৬৩টি আইসোটোপকে একত্রিত করতে সক্ষম হয়েছে।
পারমাণবিক ব্যাটারিটির নিরাপত্তার ওপর জোর দেয়া হয়েছে বলেও দাবি ওই স্টার্টআপ সংস্থার।

সংস্থার দাবি, ওই ব্যাটারি থেকে যে তেজস্ক্রিয় বিকিরণ হবে তা শরীরের কোনো ক্ষতি করবে না। পেসমেকারের মতো গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা যন্ত্রেও ওই ব্যাটারি ব্যবহার করা যাবে বলে সংস্থাটির দাবি।
পরিবেশের উপরেও ওই ব্যাটারির কোনো বিরূপ প্রভাব নেই বলে চিনা সংস্থাটির তরফে দাবি করা হয়েছে।
বর্তমান ব্যাটারি ১০০ মাইক্রোওয়াটের হলেও ২০২৫ সালের মধ্যে সেটির ক্ষমতা ১ ওয়াট পর্যন্ত বৃদ্ধির চেষ্টা চলছে বলে সংস্থাটির তরফে জানানো হয়েছে।

এ-ও দাবি করা হয়েছে, ব্যাটারিতে এমন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে যার সাহায্যে আইসোটোপ থেকে শক্তি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ শক্তিতে রূপান্তরিত করা সম্ভব হবে।

ওই চিনা সংস্থার দাবি, কনকনে ঠান্ডা এবং কাঠফাটা গরমেও ব্যাটারিটির কার্যক্ষমতা ঠিক থাকবে। হিমাঙ্কের ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস নীচে থেকে ১২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মতো ভয়ঙ্কর তাপমাত্রাতেও সঠিক ভাবে কাজ করতে পারবে ব্যাটারিটি।
২০২১-২০২৫ সালের মধ্যে চিন পারমাণবিক ব্যাটারি ক্ষুদ্রকরণের জন্য যে পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা নিয়েছে, এই ব্যাটারি তার উল্লেখযোগ্য মুখ বলে প্রমাণিত হতে পারে।
তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার অনলাইন