মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৭ মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
আখতার বানু বীণা
বিশাল পৃথিবীতে শতভাগ মানুষের প্রায় অর্ধেক নারী। আদিযুগ থেকে বর্তমান শিল্প সাহিত্য, সভ্যতাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীর অবদান পুরুষের চেয়ে কম নয়। নারী প্রেরণার উৎস, শান্তির প্রতীক, গর্ভধারিণী, মাতৃভাষার আধার, সৌন্দর্য্যের প্রতীক। নারী কখনও কন্যা, কখনও বোন, কখনও বউ. কখনও মা। একটি সময় ছিল যখন নারীদের ভাগ্য পুরুষের ওপর নির্ভরশীল ছিল, স্বতন্ত্র সত্তা ছিল না।
সুখের বিষয় নারী আজ নিজ গুনে অন্ধকারাচ্ছন্ন জীবন থেকে বেরিয়ে আলোকিত জগতের প্রাঙ্গণে এসে দাঁড়িয়েছে। শিক্ষাক্ষেত্রে, সংসারে, গৃহস্থালি কাজে, বসতবাড়ির কাজে, অফিস আদালতসহ নানা ক্ষেত্রে কাজ করছে। নারী স্বাবলম্বী হয়েছে। তাই তাদের বেড়েছে দারুণভাবে কর্মব্যস্ততা। কারণ প্রাচীন প্রথা অনুসারে সংসারের দায়িত্ব পালনের পর, তারা অফিস- আদালতসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করছে। ফলে বেশিরভাগ নারীই শারীরিক ও মানসিক দিকের প্রতি নজর দিতে পারছেন না।
নিজের প্রতি এই অবহেলা নিজেকে চরম দুর্ভোগের মধ্যে ফেলছে। প্রায় সময়ই আমরা অনুভব করি কাজের দক্ষতা ও সফলতা আনতে সুস্থ থাকা প্রয়োজন কিন্তু সামর্থ্যরে বাইরে কাজ করে আমরা হাঁপিয়ে উঠি- অসুস্থ হয়ে পড়ি। ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগসহ নানান জটিল রোগে জড়িয়ে পড়ছি।
তাই সকল কাজের মধ্যে মনে রাখতে হবে- মানুষের শ্রেষ্ঠ সম্পদ নিজ জীবন, শরীর ও সুস্থতা। এসবের জন্য নিজেকেই নিজের প্রতি যতœশীল হতে হয়। যার জন্য প্রয়োজন নিয়মানুযায়ী খাওয়া দাওয়া করা, ঘুমানো, ঘুম থেকে ওঠা, ব্যায়াম, রূপচর্চা করা, গোসল করা, মানসিক চাপ কমানো এবং বিনোদনের ব্যবস্থা থাকা। পারিবারিক কাজের চাপ কমানোর জন্য একজন কর্মব্যস্ত নারী যা করতে পারেন তা হলো-
শারীরিক সৌন্দর্য বজায় রাখতে রূপচর্চা করতে হবে। প্রতিদিন হাটাসহ আধাঘণ্টা ব্যায়াম করবেন। কাজের মাঝে দুই আড়াই ঘন্টা পর পাঁচ থেকে দশ মিনিট হাটাহাটি/বিশ্রাম করবেন। কর্মস্থলে ডেস্কে বসার জায়গাটি আরামদায়ক কিনা দেখে নিবেন। যাদের প্রতিদিন ওষুধ খেতে হয় তারা ওষুধ ডাইনিং টেবিলে রাখুন, কিছু ওষুধ ভ্যানিটি ব্যাগে রাখুন এবং খেতে ভুলবেন না। মাসের একটি নির্দিষ্ট সময়ে সব ওষুধ কিনে নেবেন যেন হঠাৎ ফুরিয়ে গিয়ে বিড়ম্বনায় না পড়েন।
আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা, কোনো ধরনের অসুখকে শরীরে পুষে রাখবেন না তা যত ছোট হোক না কেন। কারণ তা ভবিষ্যতে জটিল আকার ধারণ করে। কর্মব্যস্ততার মাঝেও বিনোদনের ব্যবস্থা রাখবেন যাতে আপনি মানসিকভাবে ভালো থাকেনÑধর্মীয় অনুভূতিসহ, বই পড়া, গান শোনা, গান গাওয়া, মেডিটেশান, ভ্রমণ এসবের সাথে থাকবেন।
লেখক: সহকারী অধ্যাপক, মাদার বখশ গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ