কাজ ফেলে লাপাত্তা ঠিকাদার, ভোগান্তি চরমে

আপডেট: ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২৫, ২:৪৯ অপরাহ্ণ

শাহীন রহমান, পাবনা :


কয়েক বছর ধরে বেহাল অবস্থা ছিল পাবনার চাটমোহর উপজেলার জারদিস মোড় থেকে মান্নানগরের আঞ্চলিক মহাসড়কটির। দীর্ঘদিনের ভোগান্তির পর সংস্কার কাজ শুরু হওয়ায় এই সড়কের চলাচলকারীরা একটু স্বস্তি প্রকাশ করেছিলেন।

কিন্তু সেই স্বস্তি বেশিদিন টেকেনি, স্বস্তির সংস্কার কাজ এখন অভিশাপে পরিণত হয়েছে। ৫ আগস্টরের পরবর্তী পরিস্থিতিতে লাপাত্তা হয়েছেন ঠিকাদার, ফলে বন্ধ রয়েছে সংস্কার কাজ। এতে দুর্ভোগের শেষ নেই সাধারণ মানুষের।

সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ১১ জুন তূর্ণা এন্টারপ্রাইজ প্রাইভেট লিমিটেড নামের সিরাজগঞ্জের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়। ১৮ কিলোমিটারের এই সড়ক সংস্কারের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬ কোটি ৪২ লাখ ৬১ হাজার টাকা।

কাজ সমাপ্ত করার শেষ সময় আগামী ১০ ফেব্রুয়ারী। সেই হিসেবে আর মাত্র ২ দিন বাকি রয়েছে কিন্তু সড়কে ১২ কিলোমিটার পাথর ফেলেই লাপাত্তা ঠিকাদার। ঠিকাদার আজাদুর রহমানের বিরুদ্ধে এর আগেও অনেক কাজ শেষ না করেই যোগাসাজসে কোটি কোটি টাকার বিল তোলার অভিযোগে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে।

সরেজমিন দেখা যায়, ১৮ কিলোমিটার সড়কের ১২ কিলোমিটারের পুরণো কার্পেট উঠিয়ে নতুন করে পাথর দেয়া হয়েছে। সেই পাথর এখন উঠে চলাচলের বাধা সৃষ্টি করছে। বাকি ৬ কিলোমিটার ব্যস্ততম এই সড়কে হাটু সমান বালু হয়েছে। এতে আটকা পড়ে কেউ গাড়ি ঠেলে তুলছেন বা কারো বালু মধ্যে পড়ে বেহাল অবস্থা হয়েছে।

বালি আর ধুলামাখা পথ দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই চলছে মালবাহী পরিবহনসহ যাত্রীবহণকারী ছোট বড় গণপরিবহন। সড়কের পাশের সকল গাছপালা ইতোমধ্যেই নষ্ট হয়ে গেছে। ঘর-বাড়িগুলো ধুূলায় ঢাকা পড়েছে। সড়কের ধুলার কারণে একদিকে যেমন যান চলাচলের বিগ্ন সৃষ্ট হচ্ছে। অন্যদিকে পরিবেশ ও স্বাস্থ্যগত ভাবে নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে সড়কের ধারে বসবাসকৃত স্থানীয় মানুষদের।

স্থানীয় বাসিন্দা, পথচারী ও গাড়ির চালকরা জানান, এই সড়কটি জেলার অন্যতম ব্যস্ততম আঞ্চলিক মহাসড়ক। প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে ১০-২০ হাজার গাড়ি চলাচল করতো। কিন্তু এখন যে অবস্থা তাতে কয়েকশ’ গাড়ি চলে। বালুর মধ্যে পড়ে অনেক গাড়ি আটকা পড়ে।

অনেকে আহত হয়েছেন। পরিচ্ছন্ন পোষাকে একবার এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করলেই সেটি আর ব্যবহার উপযোগী থাকছে না। মাথা ঢেকে আর মুখে মাস্ক পড়েও চলাচল করা যায় না। এখনই যে অবস্থা তাতে সামনে বর্ষার সময় আসলে এই সড়ক দিয়ে কোনো মতেই আর চলাচল করা যাবে না।

ঠিকাদারের গাফিলতির কথা স্বীকার করলেন সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর, পাবনার নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল মনসুর আহমেদ। তিনি বলেন, ‘এখানে ঠিকাদারের গাফিলতি আছে। আমরা ইতোমধ্যেই একাধিকবার তাকে সতর্ক করেছি এবং নোটিশ দিয়েছি।

ইতোমধ্যেই তার চুক্তি বাতিল করার জন্য বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ বরাবর চিঠি দিয়েছি। এখন দেখা যাক তার বিরুদ্ধে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কি ব্যবস্থা নেয়।’
এব্যাপারে যোগাযোগ করেও ফোন রিসিভ না করাঢ লাপাত্তা হওয়ায় ঠিকাদার আজাদুর রহমানের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

Exit mobile version