শনিবার, ১ এপ্রিল, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৮ চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ ।
আকাশপরীর গল্প
চন্দনকৃষ্ণ পাল
সেদিন রাতের বেলা,
দুচোখ মেলে তাকিয়ে দেখি
কি যে দারুণ খেলা।
বাগান ভরা আলো
গভীর কালো রাতের বেলা
বাতি কে জ্বালালো?
বাতির আলো নয়
আকাশ পরীর শরীর থেকে
বাগান আলোময়।
হাসে আকাশ পরী
হাসিতো নয় রূপোর ঝলক
ঝরছে রূেেপার জরি।
মুগ্ধ আমি হই,
উঠবো কি আর অবাক হয়ে
তাকিয়ে শুধু রই।
পরী আমায় ডাকে,
দীঘল দুই চোখে যেনো
মায়ার ছবি আঁকে।
লাফিয়ে উঠি যেই
কোথায় গেলো আকাশপরী
কোথাও কেউ নেই।
শীতবস্ত্র দিন
সাঈদ সাহেদুল ইসলাম
ওই শিশুদের শীত জামা নেই
কাঁপছে শরীর-হাড় শীতে,
আপনারা কি দেখতে পারেন
এসব মনের আরশিতে?
ওই যে বুড়োরÑ বস্তিতে বাস
কাঁপছে শীতে ঠকঠকে,
শীতের চোটেই ঘুমোয়নি সে
চোখ দুটো লাল টকটকে।
মায়ের মতোন বয়েসি বুড়ির
দীর্ঘশ্বাস ও দম বলেÑ
সয় না যে শীতÑ শরীরটা যে
ঢাকতে না পাই কম্বলে!
তাদেরকে শীতবস্ত্র তো দিন
কাজ সে হবে সুন্দরও,
মানুষ নামেই- বাড়বে সুনাম
আর মানবিক গুণ, দরও।
খুকি যায় ইসকুলে
আলমগীর কবির
চুলে খুকি বেণী করে
হাসি হাসি মুখে,
আনন্দ খেলা করে
মামণির বুকে।
হেলে দুলে সুর করে
ছড়া পড়ে খুকি,
মন জুড়ে কত আশা
দিয়ে যায় উঁকি।
খুকি যায় ইসকুলে
বই খাতা হাতে,
দলবেঁধে মিনা বিনা
ভাইয়ার সাথে।
ইসকুলে পড়া কত
মন কাড়া ছড়া কত,
ঠোঁটে হাসি আছে;
ছুটি হলে ইসকুল
নেই আর কোনো ভুল,
বই খাতা রেখে খুকি
গল্পের ঝাঁপি খোলে
মামণির কাছে।
আমার বাবার রক্তে
আরাফাত শাহীন
হঠাৎ করেই পাক বাহিনী
হামলে পড়ে দেশে,
কামড়ে ধরে নারী-পুরুষ
শেয়াল শকুন বেশে।
গভীর রাতের আহাজারি
কান্না হয়ে বাজে,
নরক যেন নেমে এল
বাংলাদেশের মাঝে।
দলে দলে যুদ্ধে ছোটে
মুক্তিপাগল লোক,
অস্ত্র দিয়ে তাড়িয়ে দিবে
ভীনদেশী সব জোঁক।
সেদিন রাতে আমার বাবাও
অস্ত্র হাতে নিয়ে,
যুদ্ধ করে জয়ের তরে
সর্বশক্তি দিয়ে।
আমার বাবা শহীদ হলেন
মাগরিবের অক্তে,
স্বাধীন হলো প্রিয় স্বদেশ
আমার বাবার রক্তে।
লক্ষ্মী দিদি
রাখাল সুজন
আমার দিদি লক্ষ্মী দিদি
দিদি আমার জান,
দিদি আমার সকাল বিকাল
ঘুম পাড়ানি গান।
দিদি আমার চ¤পা-বেলি
সূর্যমুখি ফুল,
দিদি আমার ঝালও যেমন
মিষ্টিও অতুল।
দুষ্টুমিতে করে আদর
আবার করে রাগ,
যখন-তখন যা-ই খাবে
দেবেই আমায় ভাগ।
পুতুল খেলার সাথী
ইউসুফ কবিয়াল
পুতুল খেলার সাথীরা আজ
জীবন নিয়ে খেলে
ফুল কাননের ফুলে ফুলে
রঙিন ডানা মেলে।
বরই পাতার প্লেটে আজ
খায় না তারা ভাত
চালের ফুটোয় দেখে তারা
জোছনা পোড়া রাত।
পুতুল খেলার সাথীরা পড়ে
বারো হাতের শাড়ি
বুকের তাকে নুইয়ে রাখে
উনুন পোড়া হাড়ি।
দোলনা দোলে শিশুর কোলে
শিশুর মেলা রোজ
পুতুল খেলার সাথীদের
কেউ নেয় না খোঁজ।
সেই দুখেই পরান জ্বলে
আমার জ্বলে হিয়া
পুতুল খেলার সাথীদের
বাল্যে না দাও বিয়া।
ডাহুক পাখি
সৈয়দ মাশহুদুল হক
বাড়ির পাশে ঝোপের ভিতর
ডাহুক পাখি ডাকে
কাঠবিড়ালীর ছুটা দেখে
লুকায় পাতার ফাঁকে।
খানিক পরেই ভয় কাটিয়ে
বিলের দিকে বাড়ে
কানিবগি বারণ করে
যাসনে বিলের ধারে।
কিন্তু ডাহুক শুনে না তা
কানিবগির মানা
বিলের ধারে যায় ছুটে সে
খোঁজতে খাবার-খানা।
শিকারিরা হঠাৎ করেই
দিলো সেথায় হানা
ডাহুক তাতে পড়লো ধরা
সঙ্গে নিয়ে ছানা।
বন্দি হয়ে ডাহুক কাঁদে
খাঁচার ভিতর শোকে
আগলে ধরে ছানা দুটো
নিজের লোমশ বুকে।
শীতের কিচ্ছা
সোহানুজ্জামান মেহরান
হিমকুয়াশা শীত সকালে
জানাই শীতের শুভেচ্ছা,
কাছে এসো তোমাদের আজ
বলবো শীতের দু কেচ্ছা।
হাজার মানুষ উঠান মাঝে
খাচ্ছে শীতের গুড়মুড়ি,
কেউ বা আবার লেপের তলে
কাউকে দিচ্ছে শুড়শুড়ি।
দেয় না গোসল শীতের দিনে
পানি ভীষণ ঠা-া রে,
কেউ বা আবার লেপকাঁথাটা
টানে নিজের আন্ডারে।
কাঁপে শরীর থরথরিয়ে
লাগে মনে অশান্তি,
কেউ তো আবার ছুটে চলে
ঠিলে ভরে রস আনতি।
কেউ বা শীতে ঘুমের রাজা
দুপুর বেলাও নাক ডাকে,
যদিও কাঁঠাল গাছের ডালে
কা কা করে কাক ডাকে।
বাংলা মা
মহিউদ্দিন আল মহী
বাংলা আমার মা
বাংলা আমার দেশ
মায়ের চোখে পানি কেন
আউলা কেন কেশ?
মা কেঁদেছে কষ্টে যাদের
করবো তাদের শেষ।
নতুন দিনের শপথ
রুমান হাফিজ
একটা বছর চলে গেলো
এখন সেটা পুরানো
ফের এসেছে নতুন বছর
স্বপ্নটাকে উড়ানো।
গেলো বছর যা হয়েছে
এবার যেন তাই না হয়
তার লাগি আজ সবার মনে
অজানা এক সংকা ভয়।
নতুন দিনে নতুন করে
সপথ নেবো সকলে
খারাপটাকে সরিয়ে দিয়ে
করব ভালোর দখলে।
দেশের ভালো চায় যারা
করবে না সে পায়তারা।
সবাই যদি এক হয়ে যাই
দেশটা সোনার হবে
শান্তি সুখের বীণটা বেজে
উঠবে হেসে তবে।