বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
ইয়াজিম ইসলাম পলাশ
শীতের সন্ধ্যা। প্রকৃতিতে বইছে হিমেল হাওয়া। হালকা হালকা শীতেও জয়শ্রীর নাকে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে আছে। যেনো বরফ দেয়া পানির গ্লাসের বাইরের অংশের মতো। ফর্সা গালে গোলাপী রঙের আভা ফুটে উঠেছে। ঝালে শোঁসাচ্ছে আর বলছে খালা আরো একটু ভর্তা দেন তো। উহ্! কি ঝাল। ধনে পাতা ভর্তায় সত্যিই একটু ঝাল হয়েছে। ঝালের পরিমান যতই বাড়ে ভর্তার স্বাদ যেনো ততই বেড়ে যায়। আর এই ধনে পাতা ভর্তা দিয়েই কালাই রুটি খাচ্ছে জয়শ্রী। এটা জয়শ্রীর একার চিত্র নয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের সন্ধ্যার নিয়মিত চিত্র একটা। সবাই আসে এ কালাই রুটি আর ভর্তার লোভে। ভিড় জমে কালাই রুটির দোকানে। মাঝে মাঝে অপেক্ষা করতে হয় রুটি তৈরিতে দেরির জন্য। আর এই স্বল্প সময়ে চলে আড্ডা। স্বল্প সময় পেরিয়ে আরো অনেক দূর। আর সময় গড়াতে গড়াতে কখন যে রাত হয়ে যায় সেদিকে খেয়ালই থাকে না কারো। খেতে খেতে এই গল্প সেই গল্প করতে করতে ঘড়ির কাঁটার কথা আর মনে থাকে না। আজ পরীক্ষা কেমন দিলিরে মামা? বলল রবিন। ধুর! এসব বাজে প্রশ্ন যে কই থেকে করে স্যার? দিলাম আরকি, বলল সায়েম। এখন তো এমন বলছিস, পরীক্ষার সময় তো ঠিকই প্রথম হবি তুই! বলল জয়শ্রী। কখনো কখনো চলে তুমুল তর্ক, যেনো চায়ের কাপের ঝড়ের মতো। মাঝে মাঝে চলে অভিমান পর্বও। তবে ক্ষণিকেই মিশে যায় সেই মিষ্টি অভিমান। ছোট্ট ছোট্ট খুুনসুটি আর প্রশ্নের আড়ালে বেড়িয়ে আসে জানার মাঝে নানা অজানা তথ্য। হঠাৎ করেই ফরিদের প্রশ্ন, বেশ তো কালাই রুটি খাচ্ছো! বলতো কি দিয়ে তৈরি? মাষকলাই এর গুড়া আর আতপ চাউলের গুড়া দিয়ে তৈরি আঁটার দ্বারা এ রুটি তৈরি হয়, উত্তর দিলো জহুরুল। বেশির ভাগ সময়ই সাধারণের মাঝে অসাধারণ প্রশ্ন চলে এসব আড্ডায়। অনেকে স্বপ্নও দেখে আড্ডায়। পাঁচ মিনিটের আড্ডায় চলে যায় পাঁচ বছর পরের জীবনে। শেষ হয়না স্বপ্নের কথার ঝুলি। আড্ডা ছাড়া যেনো জীবনই চলেনা। হাঁসি, কান্ন্্া আর আনন্দ ভাগাভাগির আড্ডার ক্যাম্পাস জীবনটা সত্যিই অসাধারণ। লেখক : গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী।