বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
শাহ মো. জিয়াউদ্দিন
প্রকৃতির ভূস্বর্গ হিসাবে পরিচিত কাশ্মীর। এই ভূস্বর্গ অশান্তির অনলে পুড়ছে দীর্ঘ দিন ধরে। কেন এই অশান্তির আগুনে জ্বলছে কাশ্মীর? তার জন্য দায়ী কি শাসক শ্রেণির দখলদারিত্ব রাজনীতি, নাকি ধর্মীয় কর্মকা- তার বিশ্লেষণের প্রয়োজন আছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইস বুকে এ দেশের মৌলবাদী আদর্শিকরা কাশ্মীর সমস্যাকে দেখছে হিন্দু-মুসলিম যুদ্ধ হিসাবে। ইতিহাস পর্যালোচনা করলে এই বিষয়টি আদৌ যুক্তিযুক্ত নয়। কাশ্মীর মূলত রাজনৈতিক দখলদারিত্বের শিকার আর এই কারণে আধিপত্যবাদীদের রোষানলে পুড়ছে প্রকৃতির এই ভূস্বর্গ। ভারতের অঙ্গরাজ্য জম্মু ও কাশ্মীরের উড়ি সেনা ছাউনিতে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হামলায় ১৮ জন নিরস্ত্র জওয়ান নিহত হয়।
এই জঙ্গি হামলা ঘটনানোর মূল হোতা পাকিস্তানের জঙ্গিগোষ্ঠি। হামলাটি যদিও ভারতীয় সেনা ছাউনিতে তবে এর প্রভাব পড়েছে পুরো উপমহাদেশে। সার্কভুক্ত দেশগুলির সাধারণ মানুষের ধারণা পাক-ভারত যুদ্ধ সমাসন্ন। বিশেষ করে বাংলাদেশে চায়ের দোকান বা যে কোন আড্ডার আলোচনায় বিষয়টি বেশ প্রাধান্য পাচ্ছে। এই হামলার পর বাংলাদেশ সরকার বলেছেন “সন্ত্রাস ও উগ্রবাদের প্রশ্নে বাংলাদেশের নীতি হলো জিরো টলারেন্স। তাই এই কঠিন সময়ে ভারতের পাশে থাকবে বাংলাদেশ। উড়ি সেনা ছাউনি আক্রমণ এবং নিরস্ত্র সেনাদের হত্যা করার মাধ্যমে এ অঞ্চলের শান্তিময় পরিবেশকে উত্তপ্ত করার একটি প্রচেষ্টা। বিশ্বের বিশেষ করে মধ প্রাচ্য জুড়ে যে অশান্তির আগুন জ্বলছে সেই আগুন এ অঞ্চলের কাশ্মীরে ছড়িয়ে পড়ে- তার অংশ এই জঙ্গিদের এই কর্মকা- বললে খুব একটা ভুল হবে না। উড়ি সেনা ক্যাম্পে হত্যাকা-ের পর পাকিস্তান ও ভারত দুই দেশের মধ্যকার সীমান্ত রেখায় উভয় দেশের সৈন্য সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। ফলে যে কোন সময় কারগিলের মতো ঘটনা ঘটতে পারে। কাশ্মীরের উড়ি সেনা ছাউনিতে ঘটনার পর সার্ক সম্মেলন অনশ্চিত হয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে ভুটান, ভারত, নেপাল, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও সর্বশেষ শ্রীলংকা পাকিস্তানের ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিতব্য সার্ক শীর্ষ সম্মেলনে যোগদান না করার কথা জানিয়ে দিয়েছে। আর এই কারণেই সার্ক সম্মেলন স্থগিত করা হয়েছে। ফলে আঞ্চলিক পারস্পারিক সর্ম্পকের বিষয়টি এখন প্রশ্নবোধক। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কাশ্মীরকে নিয়ে ১৯৪৭, ১৯৬৫ , ১৯৯৯ সালে কমপক্ষে তিনটি যুদ্ধ হয়েছে। এছাড়াও ১৯৮৪ সালের পর থেকে সিয়াচেনের হিমবাহ এলাকা নিয়ে এই দুই দেশ বেশ কয়েকটি খ- যুদ্ধে জড়িত হয়েছিল। যে কাশ্মিরকে ঘিরে এত সবÑ তার আদি ইতিহাসটা জানা সবার প্রয়োজন।
লোককথা অনুযায়ী কাশ্মীর মানে হলো শুস্ক ভুমি ( সংস্কৃত মতে কা হলো জল এবং শামিরা মানে শুস্ক)। দ্বাদশ শতাব্দীর মধ্য ভাগে কলহনের লেখা কাশ্মিরের ইতিহাস রাজতরঙ্গিণী থেকে জানা যায় যে, কাশ্মির উপত্যকা পূর্বে একটি হ্রদ ছিল। হিন্দু পুরাণে বর্ণনা করা আছে। সৃষ্টির দেবতা ব্রক্ষ্মার পৌত্র কশ্যপ বারামুলা (বরাহমুল) পাহাড়েরর একাংশ কেটে হ্রদের জল নিষ্কাশন করেন। আর কাশ্মীর সম্পূর্ণ শুকিয়ে গেলে কাশ্যপ ব্রাক্ষ্মণদের সেখানে বসতি স্থাপনের জন্য আমন্ত্রণ জানান। এই কাহিনি স্থানীয় ঐতিহ্যে আজও নাকি রয়ে গেছে। আর এই অঞ্চলের ভৌগলিক অবস্থাও অনেকটাই এই তথ্যকে সমর্থন করে। বারমুল্লা কাশ্মীরের একটি জেলার নাম। কশ্যপের সাথে হ্রদ নিষ্কাশনের যোগাযোগ ঐতিহ্যগত ইতিহাসেও পাওয়া যায়, যা বোঝা যায় উপত্যকায় বসবাসকারীদের প্রধান শহরের নাম কশ্যপ-পুরা থেকে। যার উল্লেখ আছে হেকাটেউসের লেখায় কাস্পাইরস বা হেরোটিডোটাসের লেখায় কাস্পাটাইরস নামে। টলেমি তার লেখায় কাশ্মীরকে কাস্পেইরিয়া নামে নির্দেশ করেছেন। ষষ্ঠ শতাব্দীতে ভারতে আসা চিনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাঙের লেখাতে জানা যায়, কাশ-মি-লো রাজ্যর কথা। আর তার মতে কাশ্মীর রাজ্যের অস্তিত্ব ছিল প্রথম শতাব্দিতে থেকে।
এক সময় কাশ্মীর হিন্দু ধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল থাকলেও পরে সেটি বৌদ্ধ ধর্মের কেন্দ্র হিসাবে গড়ে উঠে। এরপর কাশ্মীরের শৈব ধর্মের উত্থান হয়। ১৯৪৯ সালে শাহ মীর প্রথম মুসলমান শাসক হিসাবে কাশ্মীরের শাসন আরম্ভ করেন। মীর শাহের বংশের শাসন ছিল প্রায় ২০০ বছর। ১৫২৬ থেকে ১৭৭১ সাল পর্যন্ত কাশ্মির মোঘল শাসনের অধীন ছিল। তারপর আফগান দুরারানীদের শাসনাধীন ছিল ১৮২০ সাল পর্যন্ত। ১৮২০ সালে রণজিৎ সিঙের নেতৃত্বে শিখরা কাশ্মির দখল করে। রণজিৎ সিঙের আমলে ডোগরা রাজপুত বংশের গোলাব সিং তার সেনাপতি নিযুক্ত হন। ভারতীয় উপমহাদেশ বৃটিশ শাসনামলে এই কাশ্মীর বৃটিশদের করদ রাজ্যে পরিণত হয়। বৃটিশ শাসকদের সাথে অমৃতসর চুক্তির ভিতর দিয়ে ১৮৪৬ সালে জম্মু ও কাশ্মীর ৭৫ লক্ষ টাকার বিনিময়ে গোলাব সিং কিনে নেন। ১৯২৫ সালে হরিসিং কাশ্মীরের রাজা হন। কাশ্মীরের জনপ্রিয় নেতা শেখ আব্দুল্লাহ। তার জন্ম ১৯০৫ সালে। শেখ আব্দুল্লাহর জন্মের সময় কাশ্মীরের চলছিল হরিসিংয়ের রাজত্ব। শেখ আব্দুল্লাহ স্কুল শিক্ষক হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি ১৯৪২ সালে শ্রীনগরের একটি রিডিং রুম স্থাপন করেন। আর সেই রিডিং রুমে আলোচনা হতো কী করে কাশ্মীরের মুসলিম নাগরিকদের দুর্দশা দূর করা যায়। কাশ্মীরের মুসলমানদের শিক্ষিত করে তোলার উদ্যোগ নেন শেখ আব্দুল্লাহ। আর একই সময়ে কাশ্মীরের আরেক নেতা গোলাম আব্বাস জম্মুর মুসলমানদের নিয়ে ইয়ংমেনস মুসলিম এসোসিয়েশন তৈরি করেন। অপরদিকে পাঞ্জাবে ও লাহোরে কাশ্মীরী ও পাঞ্জাবী মুসলমানদের নিয়ে গঠিত হয় অল ই-িয়া কাশ্মীর কনফারেন্স। এই সংগঠনটি কাশ্মীরের রাজনীতি নিয়ে চর্চা আরম্ভ করে। এদিকে মোহাম্মদ ইকবাল দাবী তুলেন মুসলমানরা হবে স্বতন্ত্র। হরি সিং এর আমলে মুসলমানরা উপেক্ষিত ছিল। কাশ্মীরের মোট জনসংখ্যার বিরাট অংশ সেই সময় ছিল মুসলমান। তাই ওই সময়ে মুসলমানদের শিক্ষা ব্যবস্থা, চাকরির দাবিতে কাশ্মীরে শুরু হয় বিক্ষোভ। এই বিক্ষোভ ক্রমশ বাড়তে থাকে। তাদের দাবিগুলি তারা হরি সিঙের কাছে ডেপুটেশনে বলতে চায়। এই বিক্ষোভ চলাকালে আব্দুল কাদির নামে একজনকে রাজরক্ষীরা গ্রেপ্তার করে। আব্দুল কাদিরের বিচারের সময় জনতা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। বিক্ষুব্ধ জনতার উপর রা রক্ষীরা গুলি ছোড়ে, তখন রাজরক্ষীদের গুলিতে ২১ বিক্ষোভকারী নিহত হয়। এই ঘটনার পর থেকে শুরু হয় কাশ্মীরের স্বাধীনতা আন্দোলন। শেখ আব্দুল্লাহ তখন চিন্তা করেন এভাবে আন্দোলন করলে চলবে নাÑ তাই তিনি একটি রাজনৈতিক প্লাট ফরম গড়ে তুলেন যার নাম হয় অল জম্মু অ্যান্ড কাশ্মীর মুসলিম কনফারেন্স। শেখ আব্দুল্লাহর সেই রাজনৈতিক প্লাটফরমে প্রেমনাথ বাজাজ, গিরিধারী লাল ডোগরার মত অনেক হিন্দু নেতাও যোগ দিয়েছিলেন। তাই শেখ আব্দুল্লাহ তার রাজনৈতিক প্লাটফরমকে ধর্মনিরপেক্ষ সংগঠন হিসাবে গড়ার জন্য নাম পরিবর্তন করে ন্যাশনাল কনফারেন্স নাম দেন।
তখনকার সময়ে বৃটিশ রাজত্বে দুটো ভাগ ছিল। একটা বৃটিশ ইন্ডিয়া আরেকটা করদ রাজ্য। সেই সময় করদ রাজ্যের সংখ্যা ছিল ৫৬৫ টি। কোন কোন করদ রাজ্য ছিল এখনকার দিনের একটা ইউনিয়নের সমান আবার কোনটি ছিল বাংলাদেশের বর্তমান আয়তনের তিনগুণ। করদ রাজ গুলির মধ্যে বড় ছিল মহিসুর, হয়দ্রাবাদ, কাশ্মীর সহ বেশ কয়েকটি। করদ রাজ্যগুলিতে বৃটিশ আমলেও রাজতন্ত্র চালু ছিল। রাজ্যগুলি বৃটিশ সরকারকে কর দিতো আর সকল প্রশাসনিক ক্ষমতার মালিক ছিল রাজা। তাই রাজতন্ত্রে প্রজাদের কোন প্রকার ক্ষমতা ছিল না। ফলে রাজাকে ক্ষমতাচ্যুত করার দাবি উঠে সকল করদ রাজ্যে। অল ইন্ডিয়া পিপলস কনফারেন্স গঠন করা হয় সব রাজ্যের মানুষকে নিয়ে। এই অল ই-িয়া পিপলস কনফারেন্স এর প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন জহরলাল নেহেরু। জহরলাল নেহেরু ঘোষণা দেন সকল রাজ্য থেকে রাজাকে সরিয়ে গণতন্ত্র আনতে হবে। সেই সাথে তিনি বলেছিলেন, নেটিভ স্টেটকে ইন্ডিয়ার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে। হয় ভারতের সাথে নয় পাকিস্তানের সাথে যুক্ত হতে হবে। তবে কেউ স্বাধীন থাকতে পারবে না। নেহেরু কাশ্মীর গিয়ে শেখ আব্দুল্লাহর সাথে সমঝোতা করেন। আর তখনই কাশ্মীরের ন্যাশনাল কনফারেন্সে গোলমাল শুরু হয়। ন্যাশনাল কনফারেন্স বিভক্ত হয়ে যায়। জম্মুর মুসলিম নেতা গোলাম আব্বাসের নেতৃত্বে গঠিত হয় মুসলিম কনফারেন্স। গোলাম আব্বাসকে জিন্নাহ সমর্থন দেন। ফলে শেখ আব্দুল্লাহর সাথে জিন্নাহর সর্ম্পক খারাপ হয়। ন্যাশনাল কনফারেন্সের আন্দোলনের হরিসিং তল্পিতল্পা গুটিয়ে সরে পড়ে। ১৯৪৭ সালে বৃটিশ সরকার জানায় যে, কাশ্মীর ও অন্য করদ রাজ্যগুলি স্বাধীন হয়ে যাবে। কিন্তু নেহেরু তা মানেনি। প্রায় সব করদ রাজ্যের রাজারা ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট নেহেরুর ডাকে সাড়া দিয়ে ভারতে অন্তর্ভুক্ত হয়। শুধু বাদ থাকে জুনাগড়, হায়দ্রাবাদ এবং কাশ্মীর। সেই সময় জম্মু ও কাশ্মীরের প্রধানমন্ত্রী মেহেরচাদ মহাজন দিল্লি এসে নেহেরুর সাথে দেখা করেন। আর সৈন্য পাঠিয়ে কাশ্মীরকে ভারতে অন্তর্ভুক্ত করার অনুরোধ করেন। আর এভাবে কাশ্মীরের বড় একটা অংশ ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়- যা ভারতের জম্মু কাশ্মীর নামে পরিচিত একটি অঙ্গরাজ্য। ১৯৪৭ সালে মূলত কাশ্মীর তিনটি অংশে বিভক্ত হয়ে যায়। ভারতের অঙ্গরাজ্য জম্মু কাশ্মীর এর মধ্যে রয়েছে কাশ্মীর উপত্যকা, জম্মু ও লাদাখ অঞ্চল। গিলগিট, বালতিস্তান ও আজাদ কাশ্মীর রয়েছে পাকিস্তানের অংশে। আর চিনের অধীনের অংশ আকসাই চিন নামে পরিচিত কাশ্মীরেই একটি অংশ। এভাবেই তিন দেশের মাঝে বিভক্ত হয় মূল কাশ্মীর। এই কাশ্মীরে ভারত অংশ জম্মু কাশ্মীর অঙ্গ রাজ্যটি দীর্ঘদিন শেখ আব্দুল্লাহর পরিবার কর্তৃক শাসিত হয়েছে। চিনের অংশ নিয়ে তেমন কোন কথা শুনা যায় না তবে অরুণাচল নিয়ে ১৯৬২ সালে ভারতের সাথে চিনের বিরোধের সময় কাশ্মীর প্রসঙ্গটি এসেছিল। ভারত সমগ্র জম্মু কাশ্মীর রাজ্যটি তাদের বলে দাবি করে। তবে ২০১০ সালের হিসাবে ভারতের অধীনে রয়েছে কাশ্মীর উপত্যকা, লাদাখ এবং সিয়াচেন হিমবাহ যা মূল কাশ্মীরের ৪৩ শতাংশ আর পাকিস্তান কাশ্মীরের গিলকিট, বাতিলস্তান ও আজাদ কাশ্মীর নিয়ে ৩৭ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করছে।
বাকিটুকু চিনের কাছে। কাশ্মীর স্বাধীন হতে হলে তিন দেশ থেকে ভূখন্ড মুক্ত করতে হবে। তাই প্রশ্ন জাগে, কাশ্মীরের স্বাধীনতার প্রশ্নে সকল কাশ্মীরী জনগণ কি ঐক্যবদ্ধ কোন আন্দোলনে নেমেছে? ভারতের অঙ্গরাজ্য জম্মু কাশ্মীরে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন। এই সংগঠনগুলি উপত্যকার স্বাধীনতার নামে পুরো রাজ্যটিকে অশান্ত করে তুলছে। উড়ি সেনা ছাউনিতে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আক্রমণে এই উপমহাদেশের সার্কের স্থিতিশীলতাকে প্রশ্নের সম্মুখিন করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উপমহাদেশে বিভিন্ন মানুষের মন্তব্যে দেখা যায়, কেউ বলছেন ভারতের অঙ্গরাজ্য জম্মু কাশ্মীর পাকিস্তানের অংশ হয়ে গেলে ভালো, আবার কেউ বলছেন পাকিস্তানের অংশটুকু ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর অঙ্গরাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করা হোক। এই প্রক্রিয়াই কি কাশ্মীর স্বাধীন হয়ে যাবে? কাশ্মীরের স্বাধীন হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার একমাত্র কাশ্মীরের জনগণের এখানে শুধু ভারতের অঙ্গরাজ্য জম্মু ও কাশ্মির এর বিষয় টা সীমাবদ্ধ নয়- এটা সমগ্র কাশ্মিরের বিষয়। তাই ধর্ম বা র্বণের অজুহাতে নয়, আদি কাশ্মিরের অবস্থান বিচার করে কাশ্মিীরের স্বাধীনতার কথা বলা উচিত। তাই জাতিসংঘ কর্তৃক নির্ধারিত নিয়মে কাশ্মিীরের বিষয়টিতে সিদ্ধান্ত নেয়া দরকার। কাশ্মিীরের ভৌগলিক অবস্থানের কারণে এখানকার সন্ত্রাস বা বিচ্চিন্নতাবাদী কর্মকা-ের প্রভাব পড়ে সারা উপমহাদেশের রাজনীতিতে। যুদ্ধ, সন্ত্রাস, সহিংসতা বা বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন এর মাধ্যমে কোন দিনই কাশ্মীরের সমস্যার সমাধান হবে না। এ ধরনের বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের ফলে কাশ্মীরে হাজার হাজার মানুষের প্রাণ ঝরে যাচ্ছে। উপমহাদেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় এই সমস্যাকে জিইয়ে না রেখে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা দরকার।
লেখক :- কলামিস্ট