মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৪ চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ ।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ অফিস
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার আমনুরায় স্থাপিত সিনহা গ্রুপের ৫০ মেগাওয়াট কুইকরেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিষাক্ত কালো ধোয়া ও মাত্রাতিরিক্ত কম্পণে এলাকার মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এছাড়া এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের গরম ও নোনা পানিতে ব্যাপক ফসলহানি হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সাধারণ মানুষ।
গতকাল মঙ্গলবার ঝিলিম ইউনিয়ন পরিষদ মিলনায়তনে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিপি) আয়োজিত ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের পরিবেশগত ও আর্থ সামাজিক প্রভাব নিরূপণ’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এসব কথা উঠে আসে। এসময় বক্তারা পিডিবির নির্মাণাধিন ১শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে পরিবেশ ও কৃষির যেন কোন ক্ষতি না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখার তাগিদ দেন।
ঝিলিম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তসিকুল ইসলাম তসির সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন পরিবেশ বিশেষজ্ঞ ড. নুর নেওয়াজ, রাজশাহী বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহরিয়ার আহম্মেদ, আমনুরা ১শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ইপিসি’র প্রতিনিধি মি. ঝাং, ইউপি সদস্য তাসলিমা বেগম, স্কুল শিক্ষক মনিরুল ইসলাম প্রমুখ।
সভায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান তসিকুল ইসলাম তসি বলেন, আমনুরায় স্থাপিত সিনহা গ্রুপের ৫০ মেগাওয়াট কুইকরেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিষাক্ত কালো ধোয়া ও মাত্রাতিরিক্ত কম্পনে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে মানুষের জীবন। কালো ধোয়ার কারণে আশেপাশের আমবাগানে ফল ধরছে না। চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বহু মানুষ। এছাড়া এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের গরম ও নোনা পানিতে আমনুরা মিয়াপাড়া এলাকার জমিতে ব্যাপক ফসলহানি হচ্ছে। ভূর্গস্থ পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ব্যবহার হওয়ায় দিন দিন নিচে নামছে পানির স্তর। এতে করে টিউবঅয়েলে পানি না উঠায় খাবার পানির সঙ্কট দেখা দিয়েছে। তাই পিডিবির নির্মাণাধিন ১শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কারণে এসব সমস্যা যেন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানান তিনি।
রাজশাহী বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহরিয়ার আহম্মেদ বলেন, পিডিবির নির্মাণাধিন ১শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে পরিবেশের কোন ক্ষতি হবে না।
সদর উপজেলার আমনুরা রেল স্টেশন এলাকায় ২০১৩ সালে সিনহা গ্রুপের ৫০ মেগাওয়াট কুইকরেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু হয়। এর পাশেই বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড নির্মাণ করছে ১শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র। নির্মাণাধিন এই বিদ্যুৎ প্রকল্পের পরিবেশগত ও আর্থ সামাজিক প্রভাব নিরূপণের লক্ষ্যে এই মতবিনিমসভার আয়োজন করা হয়।