নিজস্ব প্রতিবেদক:রাজশাহীতে কয়েকদিন থেকেই মেঘলা আকাশ ও বৃষ্টির পর সোমবার ভোর থেকে ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে ছিলো। কুয়াশা ছিল সকাল ১০টা পর্যন্ত। এরপর আসতে আসতে কমতে থাকে। এ যেন প্রকৃতির খেয়ালি আচরণ। দেখে মনে হয় যেন শীতের ঘন কুয়াশার। তবে এই ঘন কুয়াশার আমের মুকুলের ক্ষতির আশঙ্কা করছে কৃষি বিভাগ।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিস বলছে, এবছর অনেক দেরিতে বিদায় নিয়েছে শীত। ফাল্গুনেও দেখা মিলেছে শীতের আমেজ। রোজার শুরুতে একদিন তাপমাত্রা বাড়লেও এরপর আবারও নিম্নমুখি। রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকছে ১৪ থেকে ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। সারাদেশের মতো উত্তরাঞ্চলেও থাকার কথা গরম। কিন্তু দিনে কিছুটা গরম অনুভূত হলেও রাতে শীত অনুভূত হচ্ছে। এর আগেও গত বছর চৈত্রে কুয়াশার দেখা মিলেছিল।
কৃষি বিভাগ বলছে, দীর্ঘ সময় শীত থাকায় এবার মসুর, খেসারি, সরিষা, গমসহ রবিশস্যের ফলন ভালো হয়েছে। আবার গরম না থাকায় রাজশাহী অঞ্চলের অধিকাংশ গাছে আমের মুকুল বের হয়নি। এতে আমের ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আর এরকম ঘন কুয়াশার হলে মুকুলের আরও ক্ষতি হবে। বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশংকাও আছে।
অক্টোবরের মাঝামাঝি মৃদু শীত শুরু হয় উত্তরাঞ্চলে। নভেম্বরে হালকা শীত ও ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে তীব্র শীত পড়ে। এবছর ফেব্রুয়ারিতেও ভালো শীত লক্ষ্য করা গেছে। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে অর্থাৎ যখন ফাল্গুন মাসের শুরু হয়, তখন থেকেই মূলত বিদায় নিতে থাকে শীত। তবে এ বছর দেখা গেছে এর ব্যতিক্রম। মার্চেও হালকা শীত অনুভূত হচ্ছে। দিনে তাপমাত্রা থাকলেও রাতে হালকা শীত অনুভূত হচ্ছে। উত্তরাঞ্চলে চৈত্রমাসে দেখা দেয় দাবদাহ। কিন্তু এবার চিরচেনা সে তাপপ্রবাহ দেখা মিলছে না।
রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পর্যবেক্ষক আবদুস সালাম বলেন, সোমবার ভোর থেকে কুয়াশা পড়ে যা সকাল ১০টা পর্যন্ত স্থায়ী ছিল। তবে দুপুরের দিকে সূর্যের মুখ দেখা যায়। রাজশাহীতে সূর্যোদয় হয়েছে ভোর ৬:০৮ মিনিটে। কিন্তু ঘন কুয়াশার কারণে সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। ভোর ৬টায় রাজশাহীর তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর এদিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোজদার হোসেন জানিয়েছেন, এমন কুয়াশা রাজশাহীর আমের মুকুল ও গুটির জন্য ক্ষতিকর হবে। ঘন কুয়াশা দীর্ঘস্থায়ী হলে আমের মুকুলে ‘পাউডারি মিলডিউ’ নামে এক ধরনের রোগ দেখা দেয়। এতে আমের মুকুল ঝরে পড়ে। যার প্রভাব পড়ে আমের ফলনেও। যদিও এখন রাজশাহীর অধিকাংশ গাছে আমের গুটি চলে এসেছে।