কৃষিতে আশীর্বাদ হয়ে ঝরলো বৃষ্টি II ফুদকি পোকার আক্রমণ থেকে বাঁচলো আম মুকুল

আপডেট: মার্চ ২১, ২০২৪, ১২:১০ পূর্বাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক:চৈত্রের প্রথম সপ্তাহেই আশীর্বাদ হয়ে ঝরছে গুড়ি গুড়ি। গত বছরও ঠিক এ সময়েই বৃষ্টি হয়েছিলো। তবে কৃষিতে এবারের বৃষ্টি গত বছরের চেয়ে বেশি আশীর্বাদতুষ্ট। কারণ এবার আম মুকুলে ফুদকি পোকার আক্রমণ ছিলো বেশি। বৃষ্টি না হলে আমের উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারতো বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। আমের পাশাপাশি লিচু মুকুল ও বোরো আবাদসহ সকল আবাদের জন্যই এ বৃষ্টিকে আশীর্বাদ হিসেবে মানছে কৃষি দপ্তর।

রাজশাহীতে মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) দিবাগত রাত ২টা ১০ মিনিট থেকে বুধবার (২০ মার্চ) ৫টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত বিরতি দিয়ে কখনো মুষলধারে আবার কখনো গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি ঝরেছে। যে বৃষ্টি প্রাণ-প্রকৃতিতে সজীবতা এনেছে।

রাজশাহী আবহওয়া অফিসের তথ্যমতে, মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) দিবাগত রাত দেড়টা থেকে বুধবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত ১২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আর সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত ১৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়। বুধবার রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে সকাল ৬ টায় ১৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরআগে তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে ছিল। এরমধ্যে গত ১৫ মার্চ রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৩৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক একেএম গাউসুজ্জামান বলেন, আকাশে মেঘ আছে। তবে ৭ টার পরে বৃষ্টি কমে গেছে। রাতে বৃষ্টি হলেও হতে পারে। তবে আশা করছি, বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) আবহওয়া স্বাভাবিক হয়ে আসবে। বেলা ১০-১১ টার মধ্যে রোদ উঠতে পারে।

আশীর্বাদ  হয়ে বৃষ্টি হওয়ায় বুধবার দিনের তাপমাত্রাও কমে যায়। দুপুরের পর ঠান্ডার মাত্রা বাড়তে থাকে। সন্ধ্যার পর শীতের কাপড় মুড়িয়েই বের হতে হয়েছে মানুষকে। এতে জনজীবনে সাময়িক দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু তাপমাত্রার তীব্রতায় নগরীর আইল্যান্ডে ঝলসে নুয়ে পড়ার মতো অবস্থা তৈরি হওয়া বাহারি ফুল গাছগুলো সজীবতা ফিরে পেয়েছে। তার চেয়েও বেশি লাভবান হয়েছে রাজশাহীর ১৯ হাজার ৬০২ হেক্টর জমির আমের আবাদ, ৫৩০ হেক্টর জমির লিচুর আবাদ ও ৭০ হাজার ১৬০ হেক্টর জমির বোরো আবাদসহ অন্যান্য ফসলের।

এদিন পবা উপজেলার কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কড়া সূর্যের তাপে প্রায় ওষ্ঠাগত হওয়া আম মুকুলগুলোর মাঝে সজীবতা ফিরে আসছে। ফুদকি পোকার আক্রমণও কমতে শুরু করেছে। বৃষ্টির ছোঁয়ায় সবুজের মাঝে প্রাণ চাঞ্চল্যতা ফিরেছে। ধুলামাখা পথে ফিরেছে স্বস্তি।

পবার কৃষক আব্দুল গণি জানান, বাগানে বেশকিছু আম গাছ আছে। এবার এমনিতেই মুকুল কম। এরমধ্যে ছিলো পোকার আক্রমণ। বৃষ্টিটা হওয়াতে ভালোই হয়েছে। মুকুলগুলোর বোটা শক্ত হবে।
রাজশাহী আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মাহমুদুল ফারুক বলেন, এই বৃষ্টি কৃষির জন্য আশীর্বাদ। ক্ষতি হতে পারে এমন পরিমাণ বৃষ্টি হয় নি। বরং আম মুুকুল ও বোরো আবাদসহ সকল ফসলের জন্য বৃষ্টিটা ভালো। সঙ্গে ফুদকি পোকার ডানা ভেঙে এর আক্রমণও কমে গেছে। তবে কিছু গম যেগুলো নুয়ে পড়েছিলো সেখানে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু ক্ষতি হতে পারে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১৯ মার্চও বৃষ্টি হয়েছিলো। একদিনে প্রায় ২ দশমিক ৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছিলো। যা কৃষিতে ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছিলো।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ