কোল্ড ইনজুরিতে নষ্ট হচ্ছে কৃষকের পান

আপডেট: ফেব্রুয়ারি ১, ২০২৪, ১২:০৬ পূর্বাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক, মোহনপুর প্রতিনিধি:শৈত্যপ্রবাহ ও ঘন কুয়াশার কারণে পানে কোল্ড ইনজুরিতে সহ শীতজনিত বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। ফলে পানপাতা লালচে, হলুদবর্ণ ছাড়াও শুকিয়ে মারা যাচ্ছে। এমন অবস্থায় রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলায় পানের বরজগুলোতে। মোহনপুর ছাড়াও জেলার বাগমারা, দুর্গাপুর ও পুঠিয়া পানের চাষ হয়। ওইসব এলাকার পানের বরজগুলোও একই অবস্থা বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলায় এবছর পান চাষ হয়েছে ১ হাজার ৩১৭ হেক্টর জমিতে। এই অঞ্চলের অর্থকরি এই ফসলটি কেনা বেচায় স্থানীয়ভাবে গড়ে উঠেছে হাট-বাজার। ফলে চাষীদের পান কেনা-বেচায় দূরের কোথাও যেতে হয় না। একই অবস্থা বাগমারা, দুর্গাপুর ও পুঠিয়ায়। এই উপজেলাগুলোতে পান বিক্রি ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় চাষীদের মধ্যে পান চাষের অগ্রহ রয়েছে।

সরেজমিনে মোহনপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার পানের বরজগুলো ঘুরে দেখা গেছে, শৈত্যপ্রবাহ ও ঘন কুয়াশার কারণে পানপাতায় কোল্ড ইনজুরি দেখা দিয়েছে। একই সাথে কোনো কোনো পানের বরজে কোল্ড ইনজুরিতে গোড়া পচন দেখা দিয়েছে। ফলে পানপাতা লালচে, হলুদবর্ণ হয়ে যাচ্ছে। আবার কিছু কিছু পানের পাতা শুকিয়ে যাচ্ছে।

চাষীরা জানায়, প্রথম পান লালচে ও হলুদবর্ণের হয়ে যাচ্ছে। এরপরে পাতার নিচের অংশে শুকাতে শুরু করছে। এক পর্যায়ে পুরো পানপাতা শুকিয়ে ঝড়ে যাচ্ছে। এতে করে আর্থিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে জানান চাষীরা। তারা বলছেন বছরের এই সময়ে তুলনামূলক পানের দাম বেশি থাকে। তাই তাদের লোকসানটাও বেশি হচ্ছে।

কেশরহাট পৌর সভার হরিদাগাছি গ্রামের কৃষক আতাউর রহমান পলাশ বলেন, শীতজনিত কারণ প্রায় দুই সপ্তা যাবত বরজের পান ঝরে পড়ছে। তবে রোদ পড়লে ঝরছে কম। তার প্রায় ১০ কাঠা জমিতে পানবরজ রয়েছে। এই শীতের তার পানে কোল্ড ইনজুরি হওয়ায় প্রায় ১০ হাজার টাকার পান হয়েছে। পান পাতার সুরক্ষায় তিনি পলিথিন ব্যবহার করছেন।

উপজেলার সইপাড়া গ্রামের লুৎফর রহমান নামে এক কৃষক জানান, তার ১ বিঘা জমিতে পানের বরজ রয়েছে। প্রতিবছর শীতের মৌসুমে ঠান্ডা বাতাসে পানপাতা ঝরে পড়ে। একই সাথে পানের কাণ্ডের অংশ শুকিয়ে নষ্ট হয়ে যায়। তবে বেশি পানের পাতার নিচের অংশ থেকে শুকিয়ে যাচ্ছে। পানের বরজে কীটনাশক ব্যবহার করা হলেও পান ঝরেপড়া বন্ধ হয়নি। এরপরও হেক্সোকোনাজল, রিডোমিল গোল্ড, কনফিডর জাতীয় কীটনাশক (ওষুধ) স্প্রে করা হচ্ছে।

কেশরহাটের কীটনাশক দোকানি কোবাদ আলী বলেন, ঠান্ডায় পান ঝরেপড়া বন্ধের জন্য সঠিকভাবে কোনো কীটনাশক কাজে আসে না। তবে কৃষকরা রিপকর্ড কনফিডর, সালকক্স, চিলেটেড জিংক ও রুট শক্তি এই জাতীয় কীটনাশক ব্যবহার করে থাকে।

এ বিষয়ে মোহনপুর উপজেলা কৃষি অফিসার মোসা. মোস্তাকিমা খাতুন বলেন, কোল্ড ইনজুরি থেকে রক্ষার জন্য চাষীদের পলিথিন ব্যবহারের কথা বলা হচ্ছে। এছাড়া কিটনাশক ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ