ক্রিকেটারদের কেলেঙ্কারি || প্রশ্নবিদ্ধ দেশের ভাবমূর্তি!

আপডেট: জানুয়ারি ২৪, ২০১৭, ১২:০৮ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড আবারো বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়েছে। বিব্রত হওয়ার কারণ একর পর এক ঘটেই চলেছে, পিছু ছাড়ছে না। জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা একটার পর একটা অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার সাথে জড়িয়ে পড়ছে যা বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভাবমূর্তির জন্য মোটেও শোভন নয়। দেশে- বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।
জাতীয় দলের ক্রিকেটার আরাফাত সানির বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনে মামলা করার পর এবার যৌতুকের দাবিতে মারধরের অভিযোগে আদালতে আরেকটি মামলা করেছেন তার স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দেয়া এক তরুণী। ঢাকার মহানগর হাকিম আদালত সোমবার নালিশি মামলাটি আমলে নিয়ে সানির বিরুদ্ধে সমন জারির আদেশ দিয়েছেন। সানিকে ৫ এপ্রিলের মধ্যে আদালতে হাজির হয়ে তার ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। ১৯৮০ সালের যৌতুক নিরোধ আইনে করা এ মামলায় ২০ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে মারধর করার অভিযোগ আনা হয়েছে আরাফাত সানির বিরুদ্ধে। এর আগে গত ৫ জানুয়ারি ওই তরুণী তথ্য-প্রযুক্তি আইনে একটি মামলা করেন, যে মামলায় রোববার ( ২২ জানুয়ারি) আমিনবাজার থেকে সানিকে গ্রেপ্তার করে এবং পরে এক দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ।
মামলার তথ্য মতে, আরাফাত সানির সঙ্গে ২০১৪ সালের ৪ ডিসেম্বর ওই তরুণীর বিয়ে হয়। বিয়ের পর তারা বাসা ভাড়া নিয়ে একসঙ্গে থেকেছেন। একসঙ্গে তারা বিদেশে বেড়াতেও গিয়েছেন। সানির পরিবার তাদের বিয়ে মেনে না নেয়ায় তাকে তুলে নেয়া হয়নি। গত বছর জুন মাসে সানি ফেইসবুকে একটি ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে মেসেঞ্জারে তাদের কিছু অন্তরঙ্গ ছবি পাঠান এবং নানাভাবে হুমকি দিতে শুরু করেন- এই অভিযোগে প্রথম মামলাটি দায়ের হয়। এসব অভিযোগ সানির পরিবারের পক্ষ থেকে অস্বীকার করা হয়েছে।
ক্রিকেটারদের নারী কেলেঙ্কারির ঘটনা এটাই প্রথম নয়Ñ বরং এটি উদ্বেগজনক হারে বেড়েই চলেছে। কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ে প্রতিশ্রুতিশীল দুএকজন ক্রিটের খুব দ্রুত ফুরিয়ে গেছেন এমন নজিরও আছে। যা কারুরই প্রত্যাশা ছিল না। ক্রিকেটার মেহরাব হোসেন অপু, পেস বোলার শাহাদত হোসেন, রুবেল হোসেন, বিপিএলের সময় সাব্বির আহমেদ রুম্মন ও আল-আমিনের নাম কেলেঙ্কারি সাথে জড়িয়ে আছে। এর মধ্যে সাহাদত হোসেন দম্পত্তির বিরুদ্ধে শিশু কাজের মেয়ের ওপর অমানুষিক নির্যাতনের অভিযোগে মামলা হয়। এসব ক্রিকেটারদের নিয়ে ক্রিকেট বোর্ডকে নাজুক পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হয়েছে। অনেকের বিরুদ্ধে বোর্ডের পক্ষ থেকেও ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কিন্তু ঘটনাক্রম থেমে নেই। একের এক ঘটনা ঘটেই চলেছে। এটা খুবই দুঃখজনক।
বাংলাদেশের ক্রিকেট জাতিকে মর্যাদার এক নতুন মাত্রা দিয়েছে। ক্রিকেটের সাফল্যের ওপর ভর করেই পৃথিবীর দেশে দেশে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা সগৌরবে উড্ডীন হচ্ছে, এক অন্যরকম সক্ষম বাংলাদেশের পরিচিতি তুলে ধরছে। নিঃসন্দেহে জাতি এর জন্য গৌরববোধ করে। আবেগ দিয়ে, ভালবাসা দিয়ে প্রতিটি বাঙালি হৃদয়ে বরণ করে থাকে। দলের পরাজয়ে হৃদয় ভাঙ্গে। সেই ক্রিকেট দলের কোনো সদস্য অনাকাক্সিক্ষত কোনো কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়লে প্রতিটি বাঙালি আহত হয়, কষ্ট পায়। কোনো খেলোয়াড়ের কাছে এমন আচরণ কেউ প্রত্যাশা করে না, এটা লজ্জার। খেলোয়াড়সুলভ আচরণই প্রত্যাশিত। আর এটি অর্জনে ব্যর্থ হলে তা স্বদেশি ক্রিকেটপ্রেমীদের ভালবাসার অপমানই শুধু নয়Ñ দেশের বাইরেও দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হয়।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ