এম এ আলম বাবলু,পার্বতীপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
দিনাজপুরের পার্বতীপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা ভিত্তিক ৫২৫ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়মিত কয়লা সরবরাহ না নেওয়ায় বড়পুকুরিয়ার খনি থেকে স্বাভাবিক কয়লা উত্তোলন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
জানা গেছে, ভূগর্ভ থেকে উত্তোলিত কয়লা বড়পুকুরিয়া কয়লা ভিত্তিক ৫২৫ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়মিত কয়লা সরবরাহ না নেওয়ায় বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির কোল ইয়ার্ড পরিপূর্ণ হওয়ায় কয়লা মজুদ রাখার সমস্যা দেখা দিয়েছে। ফলে খনির কয়লা উত্তোলন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
এ বছরের ৩ আগস্ট হতে খনির ১৪১৪ ফেইজ থেকে কয়লা উত্তোলন শুরু হয়ে নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে কয়লা উত্তোলন অব্যাহত রয়েছে। অক্টোবর মাস পর্যন্ত এই ফেইজ হতে প্রায় ৩ লাখ ৬৪ হাজার টন কয়লা উত্তোলিত হয়েছে। চলতি সালের ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত আরো ১ লাখ ২০ হাজার টন কয়লা উত্তোলিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
উত্তোলিত কয়লা সংরক্ষণের জন্য বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড (বিসিএমসিএল) এর ৩ টি কোল ইয়ার্ড রয়েছে। এর মধ্যে ১ টিতে সেডিমেন্ট কোল সংরক্ষণ করা হয়েছে। অপর ২ টি কোল ইয়ার্ডের ধারণ ক্ষমতা প্রায় ২ লাখ টন। বর্তমানে সেখানে ২ লাখ ৫০ হাজার টন কয়লা মজুদ রয়েছে।
কোল ইয়ার্ড পরিপূর্ণ হওয়ায় কয়লা সংরক্ষণের আর কোন জায়গা নেই। চলমান ১৪১৪ ফেইজ থেকে প্রতিদিন গড়ে ৪ হাজার ৫শো থেকে ৫ হাজার টন কয়লা উত্তোলিত হচ্ছে। তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৩ টি ইউনিট যথাযথ পরিচালিত না হওয়ায় আগস্ট মাস মাস থেকে তারা গড়ে দৈনিক ২ হাজার টন থেকে ২ হাজার ৫শো টন কয়লা সরবরাহ নিচ্ছে।
অর্থাৎ বিসিএমসিএল-এর কোল ইয়ার্ডে প্রতিদিন ২ হাজার ৫শো টন করে কয়লা জমা হচ্ছে। নিয়ম মাফিক দ্রুত কয়লার সরবরাহ নিতে ১ অক্টোবর এবং ২৩ আক্টোবর পত্র দ্বারা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে মৌখিক ভাবেও জানানো হয়েছে।
জানা যায়, খনি থেকে উত্তোলিত কয়লা ইয়ার্ডে সংরক্ষণ করা সম্ভব না হলে কয়লা উত্তোলন বাধাগ্রস্ত হবে। তা হলে বিসিএমসিএল এবং চিনা কনর্সোটিয়ামের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির প্রতিবন্ধকতা সহ বিভিন্ন জটিলতার সৃষ্টি হবে। অপরদিকে, ফেইজটিতে ক্ষতিকারক গ্যাস নিঃসরণসহ কয়লার স্বতঃস্ফূর্ত প্রজ্জ্বলনের আশংকা দেখা দিবে।
একটি নির্ভরশীল সূত্র জানায়, বড়পুকুরিয়ার কয়লাভিত্তিক ৫২৫ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৩ টি ইউনিটের মধ্যে ২ নম্বর ইউনিটটি ২০২০ সালের নভেম্বর মাস থেকে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বন্ধ রয়েছে। অন্য দুইটি ইউনিট চালু রয়েছে। এর মধ্যে বর্তমানে ১ নন্বর ইউনিটে ৬৫ মেগাওয়াট ও ৩ নম্বর ইউনিটে ১৩৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে।
পার্বতীপুরের বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী মো. সাইফুল ইসলাম বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,পরিকল্পনা মাফিক কাক্সিক্ষত পরিমাণ কয়লা খনি থেকে উত্তোলিত হচ্ছে। কিন্তু তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়মিত কয়লা গ্রহণ না করায় কয়লা উত্তোলন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।