ক্লাস বন্ধ রেখে বিদ্যালয়ে গ্রন্থাগারিকের গায়ে হলুদ!

আপডেট: আগস্ট ১২, ২০১৭, ১:২১ পূর্বাহ্ণ

গোদাগাড়ী প্রতিনিধি


ক্লাস বন্ধ করে বিদ্যালয়েই গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান করলেন সহকারী গ্রন্থাগারিক। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে গোদাগাড়ী উপজেলার মহিশালবাড়ী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটে। বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষকের এমন আয়োজনে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে অভিভাবক মহল।
বৃহস্পতিবার বিকেলে বিদ্যালয়টির সহকারী শিক্ষক মিজানুর রহমান তার ফেসবুকে গায়ে হলুদের তিনটি ছবি শেয়ার করেন। ছবিগুলো জুড়ে দেন প্রধান শিক্ষক হায়দার আলীর ফেসবুকেও।
ছবির বর্ণনায় ওই শিক্ষক লেখেন, ‘মহিশালবাড়ী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী গ্রন্থাগারিক ইব্রাহিমের আগামীকাল (শুক্রবার) শুভ বিবাহ আল্লাহর অশেষ রহমতে সুসম্পন্ন হইবে। সে লক্ষ্যে আজ (বৃহস্পতিবার) অত্র বিদ্যালয়ে গায়ে হলুদের আয়োজন করা হয়।’ প্রকাশ হওয়ার পর পরই ভাইরাল হয়ে যায় এসব ছবি। পড়তে থাকে বিরূপ মন্তব্য।
প্রকাশিত ছবিগুলোতে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের আঙিনায় ঘটা করে গায়ে হলুদের আয়োজন করা হয়েছে। এর একটি ছবিতে সহকারী গ্রন্থাগারিক ইব্রাহিমের মুখে গামছা ধরে আছেন সহকারী শিক্ষক আশরাফুল হক। পাশে বসে রয়েছেন প্রধান শিক্ষক হায়দার আলী। আশপাশে ঘিরে দাঁড়িয়ে শিক্ষার্থীরা। সেখানে অন্য শিক্ষকরাও ছিলেন। সবার মুখে হাসি। ওই অনুষ্ঠানে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ইব্রাহিমকে একে একে মিষ্টিমুখ করান। বিদ্যালয় ভবনের ছাদে দাঁড়িয়ে শিক্ষার্থীদের এ আয়োজন উপভোগ করতে দেখা গেছে। পরদিন শুক্রবার উপজেলার মহিশালবাড়ি এলাকার বাসেদ আলীর মেয়ে নাজনিনেন সঙ্গে ঘটা করেই বিয়ে হয়েছে সহকারী গ্রন্থাগারিক ইব্রাহিমের। তার বাড়ি বিদ্যালয়ের পাশেই।
এদিকে, বিদ্যালয়ে এমন অনুষ্ঠান আয়োজন বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক হায়দার আলী বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই সহকারী গ্রন্থাগারিকের বিয়ে হচ্ছিলো না। তার বিয়ের এমন খবরে শিক্ষার্থীরা খুশি হয়ে এ আয়োজন করেছে। বিদ্যালয়ের টিফিন চলাকালীন পাঁচ মিনিটের মধ্যেই ওই অনুষ্ঠান শেষ করা হয়েছে। সমালোচনার বিষয়টিও স্বীকার করেন প্রধান শিক্ষক।
তবে বিদ্যালয়ে এমন অনুষ্ঠান আয়োজনের সুযোগ নেই বলে দাবি করেছেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার সামশুল কবির। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার রাতেই প্রধান শিক্ষকের ফেসবুকে সহকারী গ্রন্থাগারিকের গায়ে হলুদের ছবি দেখেছেন। পরে শুক্রবার সকালে এনিয়ে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে তার কথা হয়েছে। এ আয়োজনের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন প্রধান শিক্ষক।
তিনি যোগ করেন, বিদ্যালয়ে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান আয়োজনের সুযোগ নেই। তবে ফেসবুকে প্রকাশিত ছবি তারা প্রমাণ হিসেবে নেবেন না। কেবল অভিভাবকদের লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন।
অন্যদিকে, দফতরিক কাজে ঢাকায় অবস্থান করায় বিষয়টি জানেন না বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ নেওয়াজ। অন্যদিকে, এ বিষয়ে জানতে কয়েক দফা যোগাযোগ করে রাজশাহী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামের মুঠোফোনে সংযোগ পাওয়া যায় নি।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ