ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমি’র নয়া পরিচালক হরেন্দ্র নাথ সিঙের অপসারণের দাবি

আপডেট: ডিসেম্বর ৮, ২০২৪, ২:৩৯ অপরাহ্ণ


সংবাদ বিজ্ঞপ্তি :


রাজশাহী বিভাগীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমির নয়া পরিচালক হরেন্দ্র নাথ সিং-কে দ্রুত অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। রোববার বেলা ১১টায় রাজশাহী মহানগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে রাজশাহী জেলার সকল সম্প্রদায়ের জনগণের আয়োজনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধন শেষে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশানর এর মাধ্যম দিয়ে সংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা বরজাহান আলী, ক্রীড়া সংগঠক আসাদুজ্জামান আসাদ, আবিবাসী নেতা অনিক টুডু, জয়ন্ত বিশ্বাস, জুই মার্ডী, সুকুমার বিশ্বাস, মাইকেল, শাহাদুর টপ্প্য, গেবিন্দ উড়াও নরেন হেম্ব্রমসহ অ্যান আদিবাসী ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ।

উপস্থিত নেতৃবৃন্দরা বলেন, তারা আদিবাসী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান রাজশাহী বিভাগীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমি সর্ম্পকে অবহিত এবং সম্প্রতি নতুন পরিচালক হরেন্দ্র নাথ সিং সর্ম্পকেও অবগত। তারা বলেন, হরেন্দ্র নাথ সিং বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির রাজশাহী সদরের সাবেক সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশার বিশ্বস্ত কর্মী এবং ওয়ার্কার্স পাটির অঙ্গ সংগঠন জাতীয় আদিবাসী পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক।

জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী মাওবাদী সংগঠনের সাথে যোগসাজসে বাংলাদেশের আদিবাসীদের অধিকার আদায়ের নামে আন্দোলন সংগ্রাম করে জাতীয় তথা রাষ্ট্রীয় শান্তি ও সম্প্রীতি বিনষ্টের অপরাজনীতি করে চলেছে।

এ নিয়ে ২০১০ সালে ডেসটিনি নামে একটি জাতীয় পত্রিকায় বাংলাদেশি আদিবাসী নেতাকে নিয়ে উদ্বিগ্ন পশ্চিমবঙ্গ
শিরোনামে একটি খবর প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি করেন কলকাতার শুভ পাল নামে এক সাংবাদিক। সেখানে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশের এক আদিবাসী রাজনৈতিক নেতাকে নিয়ে এখন বেশ উদ্বেগে পড়েছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য প্রশাসন।

জঙ্গমহলে আদিবাসী আন্দোলন নিয়ে এই নেতা কিছু দিন যাবৎ খোঁজখবর রাখছেন বলে সে সময়ে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছিলেন। শুধু তাই নয়, রবীন্দ্রনাথ সরেন নামে এই বাংলাদেশি নাগরিক কলকাতায় এক স্বনামধন্য লেখিকাসহ বেশ কিছু ‘রাজনৈতিক নেতার সঙ্গেও যোগাযোগ রাখতেন বলে সে সময়ে গোয়েন্দারা রিপোর্ট দিয়েছিলেন।

গোয়েন্দাদের সন্দেহ, সরাসরি না হলেও ঘুরপথে মাওবাদীদের সঙ্গে সরেনের যোগাযোগ রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। পশ্চিমাঞ্চলের তিন জেলায় তিনি কয়েকবার গেছেন বলেও তারা জানিয়ে ছিলেন। সন্দেহজনক এই বাংলাদেশি আদিবাসী নেতার গতিবিধি সম্পর্কে বিস্তারিত গোয়েন্দা রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরের পক্ষ থেকে সে সময়ে কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছিলো, রবীন্দ্রনাথ সোরেনকে যেন আর ভারতীয় ভিসা মঞ্জুর না করা হয়। ঢাকাসহ বাংলাদেশের ভারতীয় হাইকমিশনের অধীন সমস্ত ভিসা অফিসকে এ বার্তা পাঠানো হয়েছে।

গোয়েন্দা দফতরের খবর, রবীন্দ্রনাথ সোরেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সক্রিয় সদস্য। পার্টির আদিবাসী ফ্রন্টের নেতাও তিনি। আন্তর্জাতিকতাবাদে বিশ্বাসী বামপন্থী দল বলে ভারতের সিপিআই-পিসিএমের সঙ্গে ওয়ার্কার্স পার্টির যোগাযোগ রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছিলো।
তারা আরো বলেন এই হরেন্দ্র নাথ সিং প্রয়াত রবীন্দ্রনাথ সরনের একান্ত কাছের মানুষ এবং অনুসারী।

এজন্য তার সাথে মাওবাদীদের যোগসাজস রয়েছে। একারণে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জনগণসহ সর্বস্তরের জনগণ বিপদে পড়বে বলে বক্তারা উল্লেখ করেন। বক্তারা বলেন, পতিত ও ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ও জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত রবীন্দ্রনাথ সরেন এর উত্তরসূরী এবং ভারতের মাওবাদী বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের গুপ্তচর হরেন্দ্র নাথ সিং যদি একাডেমির পরিচালকের পদে নিযুক্ত থাকেন তাহলে আদিবাসীদের মাঝে বিবাদ-বিভাজন বৃদ্ধি পাবে ও আদিবাসী-বাঙালির সৌহার্দপূর্ণ সর্ম্পক নষ্ট হবে। এতে করে রাষ্ট্রের সুনামও খুন্ন হবে।

সবদিক বিবেচনা করে অনতিবিলম্বে ভারতের মাওবাদী বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের গুপ্তচর হরেন্দ্র নাথ সিংকে একাডেমির পরিচালক পদ থেকে দ্রুত অপসারণ করে একজন প্রকৃত বাংলাদেশি এবং জাতীয়বাদ ও মুক্তিযুদ্দের চেতনায় বিশ্বাসী এমন একজন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির ব্যক্তিকে অত্র একাডেমির পরিচালক পদে নিয়োগ দিয়ে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির জনগণ এবং তাদের সংস্কৃতি রক্ষা করার দাবি জানান তারা। আর দ্রুত তাদের দাবি না মানলে আগামীতে আরো কঠোর কর্মসূচী দেবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন তারা।

 

 

 

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ