খোলাবাজারে ডলার বিক্রি ১২৫ টাকা দরে, সতর্ক বিক্রেতারা

আপডেট: আগস্ট ১, ২০২৪, ১০:০৫ অপরাহ্ণ

সোনার দেশ ডেস্ক:


খোলাবাজারে ১২৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার দাম সর্বোচ্চ ১১৯ টাকা বেঁধে দিলেও মানি এক্সচেঞ্জ তা মানছে না।
চলতি সপ্তাহের শুরুতে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রবাসী আয়ের প্রবাহ কমে যাওয়ার প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকেই ১২০-১২১ টাকা থেকে বেড়ে ১২৫ টাকায় ডলার বিক্রি শুরু করে, এখনো সেই দামে বিক্রি করছে। এখনো বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে ডলার।

বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারণ করে দেওয়া আছে খোলাবাজারে ১১৯ টাকা বেশি দরে ডলার বিক্রয় করা যাবে না। গত কয়েক মাস ধরে এ নির্দেশনা বলবৎ আছে। এ সময় ১১৯-১২০ টাকা দরে ডলার বিক্রি হয়েছে। কিন্তু চলতি সপ্তাহে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ও ইন্টারনেট বন্ধের কারণে প্রবাসী আয় দেশে আসা দুই সপ্তাহ আগের তুলনায় কমে অর্ধেকে নামার খবরে ১১৯ টাকা থেকে খোলাবাজারে ডলারের দাম উঠে ১১৫ টাকা।

এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ১১৯ টাকা দরে ডলার বিক্রির বিষয়টি আবার স্মরণ করিয়ে দেয়। এরপর মানি এক্সচেঞ্জ অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকেও স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয় ১১৯ টাকা দরে ডলার বিক্রির বিষয়টি। কিন্তু তাতে কোনো কাজই হয়নি। খোলাবাজারে ১২৫ টাকা দরে ডলার বিক্রি হচ্ছে।

খোলাবাজারে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অস্থিরতা সুযোগ নিয়ে ডলারের বেশি দাম নিচ্ছে বলে স্বীকার করেন মানি এক্সচেঞ্জ অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা।
তারা বলেন, যারা বেশি দামে বিক্রি করছেন, তাদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।

তারা এও বলেন, খোলাবাজারের ডলার বিক্রেতাদের ডলারের উৎস প্রবাসীরা। তারা এডি ব্যাংকের মতো ডলার পায় না, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে থেকে পায় না। তাদের কাছে প্রবাসী আয়ের উৎস সংকট। এই কারণে কোনো সংকট হলে আমরা আগে তার মুখোমুখি হই। এখনো তাই হচ্ছে।
এ বিষয়ে মানি এক্সচেঞ্জ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. জামান মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, আমরা নোটিশ দিয়েছি, মানি এক্সচেঞ্জ অ্যাসোসিয়েশনের কোনো সদস্য বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশিত ক্রলিং পেগ পদ্ধতিতে নির্ধারিত দরের এক টাকা যোগ করে সর্বোচ্চ ১১৯ টাকার বেশি দামে বিক্রি করলে এবং প্রমাণ পেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাতিল করা হবে মানি এক্সচেঞ্জ লাইসেন্সও।

তিনি বলেন, একশ্রেণির সুযোগ সন্ধানী ব্যবসায়ী অস্থিরতা সুযোগ নিয়ে থাকে। এবারও নিতে পারে। আমরা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করছি। সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় ইন্টারন্টে বন্ধ ছিল। সে সময় প্রবাসীরা টাকা পাঠাতে পারেনি। এই গুজবকে কাজে লাগিয়ে কেউ কেউ বাড়তি দাম দিতে পারে। তবে আমরা সজাগ আছি, যাতে কোনো মানি এক্সচেন্স হাউজ বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত দরের বেশি দামে ডলার বিক্রি করতে না পারে।

মানি এক্সচেঞ্জ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি যখন এমন কথা বলেন, তার আধা ঘণ্টা আগে রাজধানীর বৈদেশিক মুদ্রার খোলাবাজার মতিঝিল, দিলকুশা ও পুরানা পল্টনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত দরের ১১৯ টাকার চেয়ে ছয় টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। পুরানা পল্টনে একাধিক বুথে খোঁজ নিয়ে জানা যায় তারা সবাই ১২৫ টাকা দরে বিক্রি করছে। বেশি নিলে ‘কিছু’ কমে বিক্রি করতে পারে।

কিছু বলতে কত কম দামে বিক্রি করা সম্ভব হবে জানতে চাইলে ওখান থেকে জানতে চায়, ‘কত ডলার নেবেন এবং নেবেন কি না? তারপর বলছি কত কম দামে বিক্রি করা সম্ভব হবে।
পুরানা পল্টনের আরেকটি মানি এক্সচেঞ্জ বুথে যোগাযোগ করলে সাংবাদিক পরিচয় জানতে পেরে বিক্রি করার মতো ডলার নেই বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির প্রোপাইটর।

তিনি বলেন, মানুষ ডলার বিক্রি করার জন্য জন্য আসছে না। সবার মধ্যে আতঙ্ক কাজ করছে। এ কারণে ডলার সরবরাহ পাচ্ছি না। বিক্রি করতেও পাচ্ছি না। পরেক্ষণই প্রতিষ্ঠানটির একজন ডলার ক্রেতাকে বাইরে থেকে ধরে আনেন। একই অবস্থা দেখা গেল দিলকুশার আরেকটি প্রতিষ্ঠানে। প্রথমে ১২৫ টাকা দরে বিক্রি করতে সম্মত হয়। পাশাপাশি প্রাপ্ত ডলারও আছে বলে জানান। পরে সাংবাদিক পরিচয় জানতে পেরে ডলার নেই, তাই এখন বিক্রি করতে পারবে না। পরে ডলার এলে খবর দেবে বলে জানালেন।
তথ্যসূত্র: বাংলানিউজ

Exit mobile version