রবিবার, ১৮ মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৪ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ।
সেলিম সরদার, ঈশ্বরদী (পাবনা)
পাবনার ঈশ^রদী উপজেলার লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নের নির্ভৃত পল্লী বিলকেদার গ্রামের কৃষক আছাদ প্রামানিক ২০০৬ সালে ৩৫ হাজার টাকায় শখের বশে একটি এঁড়ে বাছুর কিনে গরু পালন শুরু করেন। এখন তার খামারে গরুর সংখ্যা অর্ধ শতাধিক। প্রতিটি গরুর ওজন ৭ থেকে ৮ মণ করে। তার খামারে যে পরিমাণ গরু আছে তার গড় মূল্য এক কোটি টাকারও ওপরে। শখ করে একটি গরু লালন পালন করতে শুরু করা আছাদ প্রামানিক এখন এই উপজেলার কোটিপতি খামারি। আছাদ প্রামানিকের খামারে অর্ধশতাধিক গরুর মধ্যে এবার তার এক জোড়া ষাঁড় বিশেষভাবে নজর কেড়েছে। ষাঁড় দুটির একটি কালো এবং অন্যটি সাদা কালো মিশ্রিত পাখরা। গরু দুটির প্রতিটির ওজন ২০ থেকে ২৩ মণ।
এর একেকটির দাম ধরা হয়েছে ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা করে। আসন্ন ইদুল আজহার আগে বিক্রি করার জন্য পরম মমতায় লালন করা ষাঁড় দুটি দেখতে অনেকেই আসছেন তার খামারে। ফ্রিজিয়ান জাতের গরু দুটির উচ্চতা প্রায় ৫ ফুট আর দৈর্ঘ প্রায় সাড়ে ছয় ফুট। ঈশ্বরদী উপজেলায় এত বড় সাইজের কোরবানির গরু আর নেই বলে দাবি করেন আছাদ প্রামানিক। তিনি জানান, তার খামারের গরুকে ঘাস খাওয়ানোর জন্য ৪ বিঘা জমিতে ঘাসের আবাদ করেন সারা বছর। নিজের জমির ঘাস ছাড়াও খড়, গমের ভূষি, ছিলকা খাওয়ান। খামারের সব গরুকে খাওয়ানোর জন্য প্রতি মাসে ব্যয় হয় প্রায় দেড় লাখ টাকা। গরুগুলিকে দেখাশোনা, খাওয়ানো ও পরিচর্যা করতে তিনি নিজে এবং তার এক ছেলে ছাড়াও ৩-৪ জন লোক সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকেন।
খামারের এই জোড়া ষাঁড় দুটি শান্ত স্বভাবের বলে জানান আছাদ প্রামানিক।
আছাদ প্রামানিকের নাতি পাবনা অ্যাডওয়ার্ড কলেজের শিক্ষার্থী রিফাত প্রামানিক জানান, দাদুর হাতে গড়া এই খামারে গরুকে খাওয়ানো, ঘাস কাটা, পরিচর্যাসহ বিভিন্ন কাজে আমার বাবা, আমিসহ পরিবারের সবাই কমবেশি সময় ব্যয় করি। আমাদের ভালো লাগে।
আছাদ প্রামানিকের খামারে গরু দেখতে আসা রফিকুল ইসলাম বলেন, সাধারণত সব খামারে এত বড় গরু চোখে পড়েনা। লোকমুখে শুনে আমি গরু দুটি দেখতে এসে খামার গড়ে তোলার বিষয়ে আমার মনেও আগ্রহ জন্মেছে।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. নাজমুল হোসাইন বলেন, ঈশ্বরদীর বিভিন্ন গ্রাম, শহর এবং পশুহাটের আশেপাশে প্রচুর গরুর খামার গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে বিলকেদার গ্রামের আছাদ প্রামানিকের খামারের এই দুটি গরুর মত এত বড় গরুর খোঁজ ঈশ্বরদীতে এখনো পাওয়া যায়নি। প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে তার গরু পালনে সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হয়ে থাকে।