গাজায় যুদ্ধবিরতি বিশ্ববিবেকের দাবি

আপডেট: নভেম্বর ৬, ২০২৩, ১২:০৬ পূর্বাহ্ণ

ইসরায়েলকে অন্ধ সমর্থন গণহত্যারই সমর্থন!

ফিলিস্তিনিদের ওপর ধারাবাহিক ধ্বংসযজ্ঞ ও হত্যাকে যে সব দেশ ও সংগঠন-সংস্থা ইসরাইয়েলকে সমর্থন জানাচ্ছে তারা কি প্রকৃতপক্ষে ‘গণহত্যা’কে সমর্থন করছে! যুদ্ধ বিরতির দাবি বারবার যখন উপেক্ষিত হয় এবং বিশ্বের কিছু সংখ্যক ক্ষমতাধর দেশ নিরব থাকছে, ইসরায়েলকে অর্থ ও অস্ত্র দিয়ে সহায়তা করছে এবং অস্ত্র বিরতি প্রত্যাখ্যান করছে- সে ক্ষেত্রে এটা স্পষ্টতই বলা যায় যে, ওইসব দেশ গণহত্যাকেই সমর্থন করছে। এই মানসিকতা সভ্যতার পরিপন্থি। কিন্তু ওইসব রাষ্ট্রের মানবতাবিরোধী কাজকে তাদের নিজ নিজ দেশের মানুষেরাই ধিক্কার জানাচ্ছেন। এমনকি ইসারাইলের মানুষ ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরোধিতা করছে। গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে লাখো মানুষ সড়কে নেমে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন। ফিলিস্তিনের পক্ষে শনিবার ও রোববার তারা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।

যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, সেনেগাল, তুরস্ক, যুক্তরাষ্ট্র প্রভৃতি দেশে ফিলিস্তিনিদের ওপর পরিচালিত গণহত্যার বিরদ্ধে বিক্ষোভ হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা নিজ নিজ দেশের সরকারের প্রতি যুদ্ধ বিরতি মানতে ইসরায়েলকে চাপ সৃষ্টির তাগিদ জানাচ্ছেন।

গাজায় হামাস ও ইসরায়েলি বাহিনির মধ্যেকার সংঘাতে এ পর্যন্ত ৯ হাজার ৪৮৮ ফিলিস্তিনি গাজায় নিহত হয়েছেন। বহু শিশুর প্রাণ গেছে। আর ইসরায়েলে গেল ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় এক হাজার চারশোরও বেশি লোকের প্রাণ গেছে।

এমনই ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যেই ইসরায়েলের ঐতিহ্য বিষয়ক মন্ত্রী আমিচাই এলিয়াহু বলেছেন, অবরুদ্ধ গাজায় পারমাণবিক বোমা ফেলা উচিত। শনিবার রেডিও কোল বেরামার সাথে এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ দায়িত্ব জ্ঞানহীন বক্তব্য দেন। এ ধরনের বক্তব্য সব ধরনের সম্ভাবনাকে বাতিল করে দেয়। এটা এমন এক পরিস্থিতি যা সহিংসতার বিস্তারকে উসকিয়ে দেয়। প্রতিহিংসাকে প্রতিহিংসা দিয়ে কিছু সময়ের জন্য বশ করা যায় বটে কিন্তু তা আবার শক্তির মহীরূহ হয়ে আত্মপ্রকাশ করে। ইতিহাস সাক্ষী- এই প্রতিহিংসার জের ধরে শত শত জনপদ ধ্বংস হয়ে গেছেÑ যারা এক সময় প্রতাপশালী ছিল। ফিলিস্তিনি এবং ইসরায়েলের মধ্যে চলে আসা ৭৫ বছরের বিরোধ মীমাংসার একটা পথ বিশ্ব নেতৃত্বকেই খুঁজে বের করতে হবে। প্রতিহিংসা ও সহিংসতা কোনোভাবেই গ্রাহ্যপথ হতে পারে না। এ সত্য উভয় পক্ষকেই উপলব্ধি করতে হবে। সময়ের চাহিদা ও গুরত্ব বিবেচনায় অসলো চুক্তির পথেই হাঁটতে হবে। কিন্তু এই মুহূর্তে আগে প্রয়োজন যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করা।