পাবনা প্রতিনিধি:
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে দেশজুড়ে কারফিউ জারির পর ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় ক্ষতির মুখে পড়েছে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে পাকশী বিভাগ। যাত্রীবাহী ট্রেনগুলো চলাচল বন্ধ থাকায় গত দশ দিনে প্রায় ১৫ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) শাহ সুফী নুর মোহাম্মদ সোমবার (২৯ জুলাই) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের পাকশী বিভাগীয় কার্যালয় সূত্র বলছে, দেশের সর্বাধিক এলাকা জুড়ে পাকশী রেলওয়ে বিভাগ গঠিত। পাকশীতে রয়েছে বিভাগীয় রেলওয়ের সদর দপ্তরের কার্যালয়। গুরুত্বপূর্ণ এ বিভাগের আওতায় প্রতিদিন ১১৪টি যাত্রীবাহী ট্রেন রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন রুটে চলাচল করে থাকে। এর মধ্যে ৫৬টি আন্তঃনগর ট্রেন রয়েছে।
রেলওয়ের হিসাব অনুযায়ী, এসব যাত্রীবাহী ট্রেন থেকে প্রতিদিন ঈশ্বরদীর পাকশী রেলওয়ে বিভাগ গড়ে দেড় কোটি টাকা আয় করে থাকে। এছাড়াও মাল ও তেলবাহী ট্রেন থেকে আয় হয় রেলওয়ের।
নাশকতার আশঙ্কায় গত ১৯ জুলাই (শুক্রবার) দিবাগত রাত থেকে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে সকল ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হয়। পরদিন ২০ জুলাই (শনিবার) সকাল থেকে পর্যায়ক্রমে ১১৪টি যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে। এতে প্রতিদিন শুধুমাত্র পাকশী রেল বিভাগে যাত্রী খাতে দেড় কোটি টাকা আয় থেকে বঞ্চিত হয়। সে হিসেবে গত দশদিনে গড়ে প্রায় ১৫ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে।
একইসঙ্গে মাল ও তেলবাহী ট্রেনও কয়েকদিন বন্ধ থাকায় ক্ষতির মুখে পড়েছে পাকশী রেল বিভাগ। এরই মধ্যে সীমিত পরিসরে গত মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) থেকে মালবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
তবে পরিস্থিতি হওয়ার সঙ্গে যাত্রী খাতে আয় বাড়াতে এরই মধ্যে কিছু ট্রেন চলাচলের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে পাকশী রেল বিভাগ। উর্ধতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি পেলেই ট্রেন চালানো শুরু হবে।
রেলওয়ে সদর দপ্তর পাকশী বিভাগীয় কার্যালয়ের প্রকৌশলী-২ বীরবল মন্ডল বলেন, “যাত্রীবাহী সকল ট্রেন চালানোর প্রস্তুতি রয়েছে আমাদের। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি পেলে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে ট্রেন চলাচল শুরু করা হবে।’
এদিকে যাত্রী খাতে রেলের আয় কমে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) শাহ সুফী নুর মোহাম্মদ বলেন, ‘সেবার মান বেড়ে যাওয়ায় দেশে দিন দিন ট্রেনে যাত্রী পরিবহনের সংখ্যাও বাড়ছে। কিন্তু কোটা সংস্কার আন্দোলনের কারণে নিরাপত্তার স্বার্থে পাকশী রেল বিভাগে ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে ট্রেনের যাত্রী খাতে প্রতিদিনের আয় কমেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রী ট্রেনগুলো সারা দেশে চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার। তবে সেটি কবে থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বা ট্রেন চলাচল শুরু হবে সে বিষয়ে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না বলেও জানান তিনি।’