গুরুদাসপুরে চাহিদার চেয়ে ৫০ হাজার বেশি কোরবানির পশু প্রস্তুত

আপডেট: জুন ৩, ২০২৩, ১২:৫৮ অপরাহ্ণ


আবুল কালাম আজাদ :


এক মাসেরও কম সময় আছে মুসলিম উম্মাহর দ্বিতীয় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ইদুল আজহা। নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলায় আসন্ন ইদুল আজহা উপলক্ষে বিক্রির জন্য ৯০ হাজার কোরবানির পশু প্রস্তুত করছেন খামারিরা।উপজেলার অভ্যন্তরে কোরবানির পশুর ৪০ হাজার চাহিদ পুরণ করেও ৫০ হাজার উদ্বৃত্ত থাকবে, যা দেশের অভ্যন্তরে রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায় বিক্রির জন্য প্রস্ততি নিচ্ছেন খামারি ও ব্যবসায়ীরা।

বিগত ৩ বছর অতিমারি কোভিড-১৯ বৈশ্বিক করোনাকালিন সংক্রমণ প্রতিরোধে দেশব্যাপী লকডাউনের মধ্যে উপজেলার ভিতরে এবং বাহিরের জেলায় হাট বসিয়ে কোরবানির পশু বিক্রি করা যাবে কিনা এই আশংকায় গড়ে উঠেছে অনেকগুলো অনলাইন প্লাটফর্ম। এতে প্রস্তুতকৃত কোরবানির পশু বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন খামারি ও ব্যবসায়ীরা।

গুরুদাসপুর উপজেলা প্রানিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আলমগির হোসেন জানান-৯০ হাজার কোরবানির পশু মধ্যে ২৯,৭৬৭ টি গরু,( ষাঁড় ২০,৬২৭ টি,বলদ ২৭৪৭ টি, গাভী ৬৩৯৩ টি) , মহিষ ৩০,৫৭৪ টি, ৫১, ৬৮০ টি ছাগল ৫,৬০৬ টি ভেড়া ও অন্যান্য ৯ টি। এসব পশুর বাজারমূল্য অন্তত সাড়ে ৪০০ কোটি টাকা। গত বছরের তথ্য মতে গুরুদাসপুর উপ জেলায় প্রায় ৩০ হাজার ৫০০ কোরবানির পশু জবাই হয়েছে।

এবারে প্রায় ৪০ হাজার পশু কোরবানি বলে আশা করছে উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ। উপজেলায় চাহিদার চেয়ে অতিরিক্ত আরও ৫০ হাজার পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। উপজেলায় মোট খামারির সংখ্যা ২৩ হাজার। এর মধ্যে বাণিজ্যিক খামার ৮১ টি। কোরবানির দিন যতই এগিয়ে আসছে এলাকার মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বাহির থেকে কোরবানির যোগ্য পশু কিনে এনে মজুদ করছে। এতে উপজেলায় কোরবানির পশুর সংখ্যা লক্ষাধিক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

খামারিদের সাথে যোগাযোগ করে জানা যায়, অধিকাংশ খামারি নিজেদের গচ্ছিত ক্ষুদ্র খুদ্র পুঁজি বিনিয়োগ করে কোরবানির পশু পালন করছেন। আবার অনেকের রয়েছে ব্যাংক, এনজিও এবন গ্রামীণ সমিতি থেকে নেওয়া চড়াসুদের ঋণ। খামারি ও মৌসুমি সৌখিন ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ভারতীয় গরুর চাপে আগে কোরবানির পশুর খাতে বিনিয়োগ করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

ফলে অনেকেই এই খাতে বিনিয়গে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিলেন। গত তিন বছর কোভিড-১৯ করোনায় কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়েছিল তাদের। তবে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ও ব্যক্তি উদ্যোগে কোরবানির পশু কেনাবেচার জন্য গড়ে অসংখ্য অনলাইন প্লাটফর্ম গড়ে ওঠায় যে গুলো থেকে ক্রেতা সহজেই পশু পছন্দ করে কিনতে পেরেছেন। এবার ক্ষতিগ্রস্ত হলে অনেক খামারিরা পথে বসে যাবেন। খামারিরা জানান, প্রাণিসম্পদ বিভাগের পরামর্শে পুষ্টিকর খাবার- খৈল, গম, ভুষি, ছোলাসহ সবুজ ঘাস খাইয়ে খুব সহজেই গবাদিপশু মোটাতাজা করেছেন। ক্ষতিকর স্টেরয়েড বা হরমোন ব্যবহার করা হয়নি।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জানান, এবারে কোরবানি ইদে চাহিদার চেয়ে অনেক বেশি কোরবানির পশু উপজেলায় প্রস্তুত হচ্ছে। আর কো পরিমাণ পশু খামার ও বাড়তে আছে তার গণনার কাজ চলমান আছে। মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা ও স্বেচ্ছাসেবিরা খামারে এবং বাড়িতে গিয়ে পশুর স্বস্থ্য বিষয়ে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন। এছাড়া ভ্রাম্যমান পশু হাসপাতালের মাধ্যমে জরুরি সেবা দেওয়া হচ্ছে।

জেলা ও উপজেলা প্রানিসম্পদ অধিদপ্তর জানায়, নাটোর জেলায় পশুর হাট ও অনলাইন ডিজিটাল পশুর হাটসহ ৯টি অনলাইন প্লাটফর্ম আরও কয়েকটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। কোরবানির হাটে প্রাণিসম্পদ দপ্তরের ভ্রাম্যমান পশু হাসপাতাল ও মেডিকেল টিম কাজ করবে। কোনো পশু রোগাক্রন্ত হলে জরুরি সেবা দিবে মেডিকেল টিম। একই সঙ্গে হাট থাকবে ক্যাশলেস ব্যবস্থাও। ক্রেতার চাইলে মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমেও পশু কিনতে পারবেন।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ