বুধবার, ২৯ মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ ।
গুরুদাসপুর প্রতিনিধি
গুরুদাসপুরে এ দুই শিশুকে শ্রমিককে পিটিয়েছে কারখানা মালিক- সোনার দশ
কাজে আসতে দেরি করায় আসায় নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার চাঁচকৈড় বাজারের এসকে ইঞ্জিনিয়ারিং ওর্য়াশপ নামের একটি ওয়েল্ডিং কারখানার দুই শিশু শ্রমিককে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে জখম করেছে কারখানার মালিক শিমুল শাহ (৩৫)।
আহত শিশু শ্রমিক আরিফ (১২) ও লিখনকে (১০) গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের একজন চিকিৎসক জানান, লোহার রড দিয়ে বেধড়ক পেটানোর কারণে আরিফের বাম হাত ও লিখনের ডান হাত জখম হয়েছে। এছাড়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। শিশুদের ওপর এমন অমানবিক নির্যাতন তাদের শারীরিক ও মানষিক সমস্যার কারণ হয়ে উঠতে পারে। ওই ঘটনায় শিশু আরিফের বাবা আবদুুল খালেক গুরুদাসপুর থানায় গত বৃহষ্পতিবার লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপপরিদর্শক (এসআই) সাইদুজ্জামান অভিযুক্ত শিমুলকে আটক করে। তবে বৃহষ্পতিবার গভীররাতে দেন দরবার পরে শিশু নির্যাতনকারী শিমুলকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।
শিশু আরিফ (১২) ও লিখন (১০) জানায়, তারা শিমুলের ওয়েল্ডিং কারখানায় কাজ করতো। বৃহষ্পতিবার কাজে আসতে দেরি হয় তাদের। ওই অজুহাতে কারখানার দরজা (সাটার) বন্ধ করে লোহার পাইপ দিয়ে তাদের বেধড়ক পেটায় শিমুল। এ সময় নির্যাতনের মাত্রা সইতে না পেরে লিখন পালিয়ে গেলেও আরিফকে কারখানায় আটকে রাখা হয়েছিল। পরে পুলিশকে ঘটনাস্থলে গিয়ে আরিফকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
নির্যাতনের শিকার শিশু আরিফ (১২) আবদুল খালেকের ছেলে ও লিখন (১০) জহুরুল ইসলামের ছেলে। তাদের উভয়ের বাড়ি উপজেলার মশিন্দা ইউনিয়নের শিকারপুর গুচ্ছগ্রামে। ওই দুই শিশুর বাবা আবদুুল খালেক ও জহুরুল ইসলাম জানান, তাদের নিজেদের ভিটা বাড়ি পর্যন্ত নেই। গুচ্ছগ্রামে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। সংসারের অভাব ঘুচাতে তাদের ছেলেদের ওয়েল্ডিং কারখানায় কাজে লাগিয়েছেন। কিন্তু নানা অজুহাতে তাদের শারীরিক নির্যাতন করা হতো। সর্বশেষ গত বৃহষ্পতিবার কারখানার মালিক শিমুল শাহ তাদের সন্তানদের ওপর অমানষিক নির্যাতন করেন। ছেলের ওপর অমানবিক নির্যাতন সইতে না পেরে বৃহষ্পতিবার বিকেলেই থানায় অভিযোগ দিয়েছিলেন আরিফের বাবা আবদুুল খালেক। পরে শিমুলের স্বজনদের অনুরোধের প্রেক্ষিতে গভীররাতে অভিযোগটি প্রত্যাহার করতে বাধ্য হন তিনি। তবে লিখনের বাবা জহুরুল ইসলাম বলেন, পারিপার্শ্বিক কারণে অভিযোগ তুলে নিতে বাধ্য হয়েছি।
তবে অভিযুক্ত শিমুল শাহ গতকাল শুক্রবার দুপুরে দুই শিশুকে মারপিটের কথা স্বীকার করে বলেন, মন- মেজাজ ভালো ছিলনা। তাই শাসন করেছি। রাতেই দেন-দরবার করে সুরাহা করেছেন আমার স্বজনরা। এ ব্যাপারে গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দিলীপ কুমার দাস মুঠোফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয় নি।