রবিবার, ২ এপ্রিল, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৯ চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ ।
গুরুদাসপুর প্রতিনিধি
নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর হাটে সরকারি জায়গা দখল করে দোকান নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। নাজিরপুর ইউনিয়ন জামায়াতের আমীর নাজিম উদ্দিন প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে ওই স্থাপনাটি নির্মাণ করছেন।
গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. ইয়াসমিন আক্তার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর নির্মাণকাজ বন্ধের জন্য নাজিরপুর ইউনিয়ন ভূমি সহকারিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ইউনিয়ন ভূমি সহকারি আবুল কালাম আজাদ জানান, নির্মাণকাজ বন্ধের জন্য কয়েক দফা তাকে মৌখিক নির্দেশ দিয়েও কাজ হয় নি। সর্বশেষ গতকাল বৃহস্পতিবার কাজ বন্ধের জন্য নোটিশ দেয়া হয়েছে নাজিম উদ্দিনকে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নাজিরপুর কাঁচাবাজারের পাশে নন্দকুঁজা নদীর তীর ঘেঁষে উত্তর-দক্ষিণ বরাবর ছয় কক্ষ বিশিষ্ট মার্কেট নির্মাণকাজ চলছে। বাইরে থেকে কেউ যাতে বুঝতে না পারে, সেজন্য টিনের বেড়া দিয়ে ওই নির্মাণকাজ ঘেরাও করে রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৬০ ভাগ নির্মাণকাজ শেষ করা হয়েছে।
নাজিরপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে, নাজিরপুর মৌজার ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত (শ্রেণি ভিটা) ১১৩ দাগের ১৩ শতক জায়গা জুড়ে নাজিম উদ্দিন গত প্রায় একমাস ধরে দোকানের জন্য পাকা ঘর নির্মাণ করছেন। কতিপয় স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি দখলদারের পক্ষ নেওয়ায় নির্মাণ কাজটি বন্ধ করা সম্ভব হয় নি। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে।
ইউনিয়ন ভূমি সহকারি আবুল কালাম আজাদ আরো জানান, নিয়মনীতি উপেক্ষা করে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে নাজিম উদ্দিন ওই জায়গাটি জবর দখল করে রয়েছেন। সরকারি জায়গাটি ছেড়ে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন সময় ইউনিয়ন ভূমি অফিস থেকে মৌখিকভাবে ছেড়ে দেয়ার জন্য বলা হলেও কাজ হয় নি।
উপরন্ত জায়গাটি অবৈধভাবে ভোগদখল করার জন্য প্রায় দশ বছর আগে সরকারকে বিবাদী করে নাটোর সহকারি জজ আদালতে মামলা (২৮/০৭ অ.প্র.) দায়ের করেন। সর্বশেষ চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি গুরুদাসপুরের সহকারি কমিশনারকে (ভূমি) প্রতিপক্ষ করে ওই সম্পত্তির আইনি যাবতীয় কার্যক্রম স্থগিতের জন্য আবেদন করেছে অবৈধ দখলদার নাজিম উদ্দিন।
নাজিরপুর হাট ইজারাদার নজরুল ইসলাম বলেন, জায়গাটি খাসখতিয়ানভুক্ত হওয়ায় সেখানে সপ্তার প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার অস্থায়ী হাট বসিয়ে সরকারি রাজস্ব আদায় করা হতো। কিন্তু ওই জায়গাটি টিনের বেড়া দিয়ে ঘিরে ভেতরে পাকা ঘর নির্মাণ করায় হাট বসানো যাচ্ছে না।
এসব অভিযোগ অস্বীকার করে দখলদার নাজিম উদ্দিন বলেন, জায়গাটি তাদের নিজস্ব। তবে ৭৪ এর রেকর্ডকালিন সময়ে অর্ধেক সম্পত্তি খাসখতিয়ানভুক্ত করা হয়েছে। জায়গাটি নিয়ে আদালতে মামলা রয়েছে।