রবিবার, ২ এপ্রিল, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৯ চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ ।
সোনার দেশ ডেস্ক
গুয়ামে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর সিদ্ধান্ত আপাতত স্থগিত করেছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন। মঙ্গলবার দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী পদক্ষেপ কি হয় তা আরও কিছু সময় নিয়ে দেখার পরই সিদ্ধান্ত জানাবেন কিম।
কেসিএনএ-র প্রতিবেদনে বলা হয়, “কিম জং উন পরিকল্পনাটি দীর্ঘ সময় ধরে পরীক্ষা করে দেখেছেন এবং উর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে এটি নিয়ে আলোচনাও করেছেন।” তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র কোরিয়া উপদ্বীপ ও এর আশেপাশের এলাকায় তাদের মারাত্মক বিপজ্জনক ও দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মকা- চালিয়ে যেতে থাকলে এবং উত্তর কোরিয়ার আত্মসংযমের পরীক্ষা নিতেই থাকলে ভবিষ্যতে গুরুত্বপূর্ণ একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, যার ঘোষণা এর মধ্যেই দেওয়া হয়েছে।” জুলাইয়ে দুইটি আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালায় উত্তর কোরিয়া। এর জেরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে দেশটির ওপর নতুন করে কঠোর বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে জাতিসংঘ।
এতে ক্ষুব্ধ উত্তর কোরিয়া ওয়াশিংটনকে ‘চূড়ান্ত সতর্ক বার্তা’ দিতে অগাস্টের মাঝামাঝি সময়ে প্রশান্ত মহাসাগরে যুক্তরাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত দ্বীপ গুয়ামের কাছে চারটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার পরিকল্পনার কথা জানায়।
উত্তর কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে তীব্র বাকযুদ্ধ ‘পরমাণু যুদ্ধ’ শুরু হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাকে ক্রামাগত বাড়িয়ে তুলছিল। এর মধ্যেই সোমবার দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইন পরিস্থিতি যাই হোক তার সরকার কোরীয় উপদ্বীপে নতুন করে যুদ্ধ প্রতিহত করবে বলে জোর দিয়ে জানান।
তিনি বলেছিলেন, “কোরীয় উপদ্বীপে সামরিক অভিযানের সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র দক্ষিণ কোরিয়াই নেবে এবং সিউলের মতামত না নিয়ে কেউই সামরিক অভিযানের সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।”
“যেকোনও উপায়ে যুদ্ধ আটকাতে দক্ষিণ কোরিয়া সরকার সব কিছু করবে।”সংকটের একটি কূটনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বানও জানান মুন।
তিনি দক্ষিণ কোরিয়া সফররত যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা জেনারেল যোসেফ ডানফোর্ডকে জানিয়েছেন, দক্ষিণ কোরিয়ার শীর্ষ অগ্রাধিকার শান্তি এবং এতেই দেশটির জাতীয় স্বার্থ নিহিত।
পাশাপাশি ‘উস্কানি ও শত্রুতামূলক সব বাগাড়ম্বর’ বন্ধ করতে উত্তর কোরিয়ার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
ওদিকে, জাপান সরকার যুক্তরাষ্ট্রের কাছে যে কোনও পরিস্থিতিতে তাদের সুরক্ষার যে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে তা পুনঃনিশ্চিত করতে চায়।
উত্তর কোরিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী মিত্র চীনকে ব্যবহার করে পিয়ংইয়ংয়ের উপর চাপ সৃষ্টি করতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।
জাতিসংঘের নতুন বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার অংশ হিসেবে সোমবার চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় উত্তর কোরিয়া থেকে লৌহ, সিসা, কয়লা ও সামুদ্রিক খাবার আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে; যা মঙ্গলবার থেকে কার্যকর হয়েছে।
তবে চীন সরকার অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ না করে বরং আলোচনার মাধ্যমে উত্তর কোরিয়ার পরমাণু অস্ত্র প্রকল্প নিয়ন্ত্রণের পথ খুঁজে বের করতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
তথ্যসূত্র: বিডিনিউজ