গোদাগাড়ী সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে দুদকের অভিযান

নিজস্ব প্রতিবেদক:

দলিল রেজিস্ট্রেশন, তল্লাশি, নকল উত্তোলনসহ অন্যান্য কাজে সেবা প্রার্থীদের হয়রানি এবং ঘুস দাবিসহ অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে গোদাগাড়ী সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে রাজশাহী দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় এ অভিযান পরিচালনা করে।

রাজশাহী দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইনের নেতৃত্বে এনফোর্সমেন্ট টিমে ছিলেন- সহকারী পরিচালক তানভীর আহমেদ সিদ্দীক, উপসহকারী পরিচালক মাহবুবুর রহমান।
দুদক সূত্রে জানা গেছে- রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার এর কার্যালয়ে দলিল রেজিস্ট্রেশন, তল্লাসি, নকল উত্তোলনসহ অন্যান্য কাজে সেবা প্রার্থীদের হয়রানি এবং ঘুস দাবিসহ নানাবিধ অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে গোদাগাড়ী উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে এনফোর্সমেন্ট টিম প্রথমে নাম পরিচয় গোপন করে সাব রেজিস্ট্রি অফিস ও দলিল লেখকদের রুম পর্যবেক্ষণ করে।

পর্যবেক্ষণকালে টিম জানতে পারে, অফিসটি প্রতি সপ্তাহে তিনদিন অর্থাৎ রোববার, সোমবার ও মঙ্গলবার দলিল রেজিস্ট্রি করা হয়। ফলে রেজিস্ট্রি অফিসে দলিল রেজিস্ট্রি না হওয়ায় অফিসে কোন সেবাগ্রহীতা উপস্থিত পাওয়া যায়নি। এমনকি দু’একজন নাম মাত্র দলিল লেখক উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত দলিল লেখকদের সঙ্গে এনফোর্সমেন্ট টিম সেবা প্রার্থীদের হয়রানি এবং ঘুস দাবিসহ নানাবিধ অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে কথা বলেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলিল লেখক দুদককে জানায়, দলিলের সার্টিফাইড কপি তোলার জন্য সরকারি ফি’র অতিরিক্ত ৮০০ থেকে ১০০০ হাজার টাকা অফিসের লোকজনকে প্রদান করতে হয়। অন্যদিকে কোন সেবাগ্রহীতা না থাকায় অভিযোগে উল্লিখিত বিক্রয় কবলা দলিল করতে ১৫০০ টাকা, পাওয়ার অব এটর্নিতে ৩০০০ টাকা, বণ্টননামা দলিল করতে ১০ হাজার টাকা এবং ত্রুটিযুক্ত দলিল করতে ২০ হাজার টাকা অতিরিক্ত খরচ সংক্রান্ত বিষয়ের সত্যতা নিরুপণ করা সম্ভব হয়নি। তবে উপস্থিত দলিল লেখকরাও এ বিষয়ে কথা বলতে অপরাগতা প্রকাশ করেন।
এছাড়া অফিসে সাব-রেজিস্ট্রার মো. সাদেকুর রহমান উপস্থিত না থাকায় তার বক্তব্য গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে অফিস সহকারী লাইলুন নাহারকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি কোন সদ্যুত্তর দিতে পারেননি। সেবা প্রার্থীদের হয়রানি এবং ঘুস দাবির বিষয়ে এনফোর্সমেন্ট টিম অত্র রেজিস্ট্রি অফিসে কর্মরত সকলকে কঠোরভাবে সতর্ক করেন। টিম অভিযোগের বিষয়ে কিছু রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে। সংগৃহীত রেকর্ডপত্র পযালোচনাপূর্বক কমিশন বরাবর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করবে।
এ বিষয়ে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন জানান, তেমন অসংগতি পাওয়া যায়নি। গোদাগাড়ী সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে রোববার, সোমবার ও মঙ্গলবার রেজিস্ট্রি করা হয়। এদিন বুধবার হওয়ার কারণে সেখানে সেবাগ্রহীতাদের পাওয়া যায়নি। তাই অভিযোগগুলো উদঘাটন করা যায়নি।