মঙ্গলবার, ৩ অক্টোবর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৮ আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
গোদাগাড়ী প্রতিনিধি
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার গোমা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৭২ জন। শিক্ষক রয়েছেন ৪ জন। উপজেলা সদর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দুরে বিদ্যালয়টির অবস্থান হওয়ায় শিক্ষকরা নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ২ ঘণ্টা বিলম্বে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়। আর নির্ধারিত সময়ের আগেই স্কুল ত্যাগ করে শিক্ষকরা। এতে করে গোমা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
অভিভাবকরা অভিযোগ করে জানান, ৪ জন শিক্ষকের মধ্যে ১ জন শিক্ষক বিপিএড কোর্স করার জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জ পিটিআই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে রয়েছে। ৩ জন শিক্ষক কর্মরত থাকলেও ২০১৫ সালের মার্চ মাস থেকে প্রধান শিক্ষকের পদটি শূন্য রয়েছে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন সাইদুল ইসলাম।
অভিভাবকরা অভিযোগ করেন, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রাজশাহী শহরে অবস্থান করায় প্রতিদিনই বিদ্যালয়ে আসে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ২ ঘণ্টা বিলম্বে। আরেক সহকারী শিক্ষক শর্মিলা রানী ও আসে সকাল ১০ টার পরে। এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে এ প্রতিবেদক গতকাল সোমবার সকাল ৯ টা থেকে সকাল সাড়ে ১১টা পর্যন্ত বিদ্যালয়ে অবস্থান করাকালীন সময়ে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসলেও প্রধান শিক্ষক আসেন সকাল সাড়ে ১১ টার সময়।
এ প্রসঙ্গে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সাইদা ইসলাম বলেন, সময় মত পরিবহন না পাওয়ার কারণে বিদ্যালয় আসতে মাঝে মধ্যে কিছুটা বিলম্ব হয়। এলাকার অভিবাবকরা অভিযোগ করেন, বিদ্যালয়ে শিক্ষকরা কখনো অভিভাবক ও মা সমাবেশ করে না। বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের নির্ধারিত সময়ে না আসার কারণে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে গেছে।
সোমবার সরেজমিনে দেখা যায়, ১৭২ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে উপস্থিত ছিল মাত্র ১০০ জন ছাত্র/ছাত্রী। বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির পরীক্ষার ফলাফলে দেখা যায়, গত ২ বছরে বিদ্যালয়টিতে কোন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পাইনি। যারা পাশ করেছে তাদের ফলাফলও খুব একটা ভাল না। বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের নির্ধারিত সময়ে না আসা ও ফলাফল খারাপের জন্য এলাকাবাসী উপজেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে অভিযোগ করলেও শিক্ষকদের উপস্থিতির ক্ষেত্রে কোন পরিবর্তন ঘটে নি। এমনকি বিদ্যালয়টিতে উপজেলা শিক্ষা অফিসের পক্ষ থেকে মনিটরিং করা হয় না।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার রাখি চক্রবর্তী বলেন, কয়েকটি ক্লাস্টারে ভাগ করে বিদ্যালয়গুলি মনিটরিং করেন একজন সহকারী শিক্ষা অফিসার। আর সব বিদ্যালয়েই উপজেলা শিক্ষা অধিদফতরের আওতায় আছে। শিক্ষকদের গোমা স্কুলে শিক্ষকের উপস্থিতির বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।