বুধবার, ২৯ মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ ।
নিজস্ব প্রতিবেদক
নগরীর একটি ছাত্রাবাসে অভিযান চালিয়ে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ১২ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার ভোরে নগরীর দেবিশিংপাড়া এলাকার একটি ছাত্রাবাসে এ অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় তারা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এর ফলে পুলিশের কয়েকজন সদস্য প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। এসময় সেখানে তল্লাশি চালিয়ে মওদুদী, জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযমের লেখা বই পুস্তক, ব্যক্তিগত রিপোর্ট বই, সাথী প্রস্তুতি ফরম এবং কয়েকটি ব্যানার জব্দ করা হয়। পুলিশকে জখম করার অভিযোগের মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, রাব্বি হুসাইন, সাইফুল ইসলাম, আল-আমিন, মতিউর রহমান, গোলাম রব্বানি, শেফাউল হক, হায়দার আলী, রাকিব আহাম্মেদ, সালাম হুসাইন, জিহাদুল ইসলাম, তৌহিদুর রহমান ও আসফিয়া খান। রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র গতকাল সন্ধ্যায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এরা সকলেই রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থী এবং ছাত্রশিবিরের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী বলে জানান তিনি।
এদিকে নগরীর বোয়ালিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নাসির উদ্দিন বাদি হয়ে পুলিশকে জখম করার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। পরে গতকাল বিকেলে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এসআই নাসির উদ্দিন জানান, নগরীর দেবিশিংপাড়া এলাকায় একটা বাড়ি ভাড়া নিয়ে শিবিরের ১২ জন নেতাকর্মী সাংগঠনিক তৎপরতা বাড়ানোর জন্য কাজ করছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল ভোরে পুলিশ বাড়িটি ঘিরে ফেলে। এসময় শিবিরের নেতাকর্মীরা নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড সংঘটনের উদ্দেশ্যে গোপন বৈঠক করছিলেন। শিবিরের নেতাকর্মীরা বাড়িটির দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থতলায় মেস করে থাকত, কিন্তু মেসের কোনো নাম ছিল না। এই জন্য বাইরে থেকে বোঝার উপায় ছিল না যে এই বাড়িতে শিবিরের সাংগঠনিক কাজ চলে।
তিনি আরও জানান, পুলিশ অভিযান চালাতে গেলে তারা পুলিশকে আঘাত করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন। এ কারণে তাদের আটক করতে প্রায় সকাল হয়ে যায়। ওই বাড়ি থেকে শিবিরের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের বিভিন্ন নথিপত্র পাওয়া গেছে। এছাড়া উদ্ধার করা হয়েছে বেশকিছু জিহাদি বই। জিজ্ঞাসাবাদের সময় তারা নিজেরাও স্বীকার করেছে যে, তারা সক্রিয়ভাবে শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তাদের মধ্যে ছয়জন শিবিরের সাথী রয়েছে। বাকিরা কর্মী।
এ ব্যাপারে নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আমান উল্লাহ জানান, কয়েকজন পুলিশ সদস্য প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। গ্রেফতারকৃত শিবির নেতাকর্মীদের জিঙ্গাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন জানানো হবে। তবে আহত পুলিশ সদস্যদের নাম জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন এ পুলিশ কর্মকর্তা।