গ্রামীণ যাত্রাপালা দেখতে গুজিশহর ছুটছে মানুষ

আপডেট: জানুয়ারি ২৭, ২০২৩, ৬:১০ অপরাহ্ণ


নিয়ামতপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি :


বাঙালি জাতির ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির একটি বড় অংশ জুড়ে রয়েছে ‘গ্রামীণ যাত্রাপালা’। যা আগলে রাখতে পারলে সেই জাতির ঐতিহ্য ধরে রাখা সম্ভব।
নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার গুজিশহর ‘প্রেম গোসাই’ মেলা উপলক্ষে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ‘গ্রামীণ যাত্রাপালা’। যা দেখার বিভিন্ন বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার মানুষ ভীড় করছে মেলায়।

গুজিশহর প্রেম গোসাই মেলা দীর্ঘদিন ধরে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। পরপর দুবছর করোনার কারণে মেলা অনুষ্ঠিত না হলেও এ বছর স্বরূপে ফিরেছে এই মেলাটি। মেলায় মিষ্টান্নের দোকানের পাশাপাশি রয়েছে কাঠের তৈরি খাট, আলমারি, ড্রেসিং, মেয়েদের কসমেটিকসসহ রয়েছে হরেক রকমের দোকান। মেলায় আগত দর্শনার্থীদের বিনোদন দিতে রয়েছে সার্কাস। আর রাত হলেই মানুষ ছুটে আসছে ‘যাত্রাপালা’ দেখার জন্য।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সন্ধ্যার পর থেকেই মানুষের ভীড় চোখে পড়ার মতো। মেলার চারিদিকে মানুষ আর মানুষ। কেউ কাটছেন আগাম টিকেট।
রাজশাহী বাগমারা থেকে যাত্রা দেখতে এসেছেন শাহীন আলম(৪৫)। তিনি প্রতিবেদককে বলেন, কেউ যাত্রাপালার কথা বললে নেতিবাচক বিষয় মনে দোল খেত। এবার গুজিশহর মেলায় এসে তার ব্যতিক্রম দেখলাম। নির্দিষ্ট সময়ে শুরু হচ্ছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এরপর হচ্ছে যাত্রাপালা।

মানুষ মনে করতো যাত্রাপালা মানেই অশ্লীলতা। কিন্তু এ মেলায় সে চিন্তাধারার পরিবর্তন হয়েছে। যেভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে তাতে এ ধরনের যাত্রাপালা পরিবার-পরিজন নিয়ে দেখার মতো। জনগণকে আরও আকৃষ্ট করতে তিনি বেশি বেশি প্রচারণার ওপর জোর দিতে বলেন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে যাত্রাপালা দেখতে আসা মাসুদ রানা বলেন, এর আগেও যাত্রাপালা দেখেছি এই মেলায়। সেখানে অশ্লীলতা থাকলে এবারে অশ্লীলতার ছিটেফোঁটাও নেই। দেখে ভালো লাগছে। ভালো যাত্রাপালা হলে আবারও যাত্রাপালার হারানো গৌরব ফিরে আসবে।
মেলা কমিটি সূত্রে জানা গেছে, মেলাকে ঘিরে একটি কুচক্রী মহলের উস্কানিতে বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) যাত্রাপালা অনুষ্ঠিত হয় নি। এতে মেলায় আগত দর্শনার্থীরা হতাশ হয়ে ফিরে যান।

মেলা কমিটির সদস্য সচিব ও গুজিশহর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম বলেন, ঐতিহ্যবাহী এ মেলার নামডাক সারা দেশজুড়ে। মেলায় অনুষ্ঠিত গ্রামীণ যাত্রাপালা বিগত যত মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে তার থেকে ভালো অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। কিছু মানুষ বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রশাসনকে দিয়ে এই ঐতিহ্যবাহী মেলাকে নষ্ট করার চেষ্টা করছে। আশা করছি এই মেলার যাত্রাপালা সারাদেশে সুনাম অর্জন করবে।