মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২০ কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
সোনার দেশ ডেস্ক
চাঁদের প্রাচীনতম গর্তগুলির মধ্যে একটিতে নেমেছে ভারতের চন্দ্রযান-৩। রোভার প্রজ্ঞানের ক্যামেরায় তোলা ছবিগুলি বিশ্লেষণ করে এমনটাই মত বিজ্ঞানীদের। তাঁরা জানিয়েছেন, চাঁদের যে অংশে ভারতের মহাকাশযান পৌঁছেছে, সেখানে এর আগে কেউ কখনও পৌঁছতে পারেনি। আনুমানিক ৩৮৫ কোটি বছর আগের গর্তে পা রেখেছে চন্দ্রযান-৩।
আমদাবাদে ইসরোর ফিজ়িক্যাল রিসার্চ ল্যাবরেটরির বিজ্ঞানীরা চন্দ্রযান-৩-এর ক্যামেরায় তোলা ছবিগুলি বিশ্লেষণ করেছেন। সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে তাঁরা জানিয়েছেন, চাঁদে যে গর্তে চন্দ্রযান-৩ নেমেছে, যেখানে এখনও রয়েছে রোভার প্রজ্ঞান, সেই গর্ত নেকটারিয়ান যুগে তৈরি হয়েছে। প্রায় ৪০০ কোটি বছর আগে সে যুগের অস্তিত্ব ছিল। চাঁদের এই প্রাচীনতম অংশে এর আগে পৃথিবী থেকে কোনও অভিযান সফল হয়নি বলেও জানিয়েছেন তাঁরা।
ফিজিক্যাল রিসার্চ ল্যাবরেটরির প্ল্যানেটারি সায়েন্স ডিভিশনের সহকারী অধ্যাপক এস বিজয়ন সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বলেন, ‘‘চন্দ্রযান-৩ যেখানে নেমেছে, তার অনন্য ভূতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। আগে কখনও সেখানে কোনও অভিযান হয়নি। প্রজ্ঞান রোভারের ক্যামেরায় তোলা ছবিগুলিই বলে দিচ্ছে, গর্তটির প্রাচীনতা কতটা। ওই ছবি থেকে চাঁদের বিবর্তন সম্পর্কেও ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।’’
বস্তুত, মহাকাশে কোনও গ্রহ বা উপগ্রহের পৃষ্ঠে গ্রহাণু ধাক্কা মারলে যে গর্ত তৈরি হয়, সেগুলিকে ‘ক্রেটার’ বলা হয়। তেমনই একটি ‘ক্রেটারে’ নেমেছিল চন্দ্রযান-৩। গর্তটি প্রায় ১৬০ কিলোমিটার বিস্তৃত। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ওই গর্ত অর্ধবৃত্তাকার।
২০২৩ সালের অগস্ট মাসে চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছে ‘সফ্ট ল্যান্ডিং’ (পাখির পালকের মতো অবতরণ) করেছিল ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর তৈরি চন্দ্রযান-৩-এর ল্যান্ডার বিক্রম। তার পেট থেকে বেরিয়েছিল রোভার প্রজ্ঞান। এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চাঁদের মাটিতে রোভারটি ঘুরে বেরিয়েছে এবং তথ্য সংগ্রহ করে পৃথিবীতে পাঠিয়েছে।
পরে চাঁদে সূর্য ডুবে গেলে চন্দ্রযান-৩-এর শক্তিও ফুরিয়ে গিয়েছে। এখনও চাঁদের মাটিতেই নিষ্ক্রিয় ভাবে পড়ে রয়েছে ওই ল্যান্ডার এবং রোভার। তবে ‘ঘুমিয়ে’ পড়ার আগে রোভারের ক্যামেরায় চাঁদের অদেখা অংশের নানা ছবি উঠেছে। এখনও সেগুলি নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে এর আগে পৃথিবীর আর কোনও দেশ পৌঁছতে পারেনি।
তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার অনলাইন