চাঁপাইনবাবগঞ্জে ক্যারেট ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি আম ব্যবসায়ীসহ সাধারন ক্রেতাগণ

আপডেট: মে ৩১, ২০২৩, ২:১৬ অপরাহ্ণ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি :


আমের রাজধানী চাঁপাইনবাবগঞ্জে বাংলাদেশের বৃহত্তম আম বাজার কানসাটে পুরাদমে চলছে ক্রয় বিক্রয় । প্রতিদিন অর্ধশত ট্রাক আম দেশের বিভিন্নস্থানে পাঠাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। এসব আম পাঠাতে পুরো মৌসুমজুড়ে ব্যবহার করা হয় প্লাস্টিকের ক্যারেট। আম নষ্টরোধে বিগত কয়েক বছর ধরে বেড়েছে ক্যারেট ব্যবহার। অধিক মুনাফা লুটতে জেলাজুড়ে তৈরি হয়েছে ক্যারেট সিন্ডিকেট।

এক বছরের ব্যবধানে একটি ক্যারেটের দাম বাড়িয়েছে ১০০ টাকা। এতে জিম্মি হয়ে পড়েছে আম ব্যাবসায়ীরা । এনিয়ে আম বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় আলোচনাও হয়েছে। তারপরেও এই সিন্ডিকেট ভাংতে পারেনি প্রশাসন। তবে আশ্বাস দিয়েছেন দ্রুত অভিযানে সিন্ডিকেট ভাঙার।
কানসাট বাজারের আম আড়তদার ইয়াকুব আলী বলেন-কাঁচা ও পাকা আম পরিবহনের সময় নিরাপদ রাখতে প্লাস্টিকের ক্যারেট ব্যবহার করা হয়। এতে আমের গুনগত মান ঠিক থাকে। বাজারে বিক্রি করতেও সুবিধা হয়।

ইয়াকুব আলী আরও বলেন, গত আম মৌসুমে কানসাট বাজারে একটি খালি ক্যারেট কিনেছেন ৯০-৯৫ টাকায়। এবার একই ক্যারেট কিনতে হচ্ছে ১৮০-১৮৫ টাকায়। এতে আমের অধিকাংশ টাকা ক্যারেটেই চলে যাচ্ছে।

আম ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম বলেন,আম পরিবহনে বিগত বছরগুলোতে বাঁশের তৈরি খাঁচি ব্যবহার করা হত। এতে আম নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীরা নিরাপদ হিসেবে ক্যারেট ব্যবহার করছে। আমও নিরাপদ থাকছে। ব্যবসায়ীদের চাহিদা দেখে জেলায় ক্যারেট সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে। গুটিকয়েক ব্যবসায়ী অধিক লাভের আশায় লাখ লাখ ক্যারেট মজুদ করে রেখে ইচ্ছেমত দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এতে মজুদদাররা লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্থ্য হচ্ছে ক্ষুদ্র ও মাঝারাী আম ব্যবসায়ীরা।

অপর ব্যবসায়ী সাইদুর রহমান বলেন,ক্যারেট সিন্ডিকেটের সদস্যরা খুবই শক্তিশালী। তারা পুরো জেলা নিয়ন্ত্রণ করে। ঢাকা ও চট্রগ্রামে একেকটি ক্যারেটের কেনা দাম ১০০ টাকার উপরে না। তারপরেও দ্বিগুন দামে এখানে বিক্রি করছে। সিন্ডিকেট ভাংতে পারলে ক্যারেটের দাম সহনীয় পর্যায়ে থাকবে।
ক্যারেট ব্যবসায়ী ফারুক হোসেন বলেন,ঢাকা,চট্রগ্রামসহ দেশের বিভিন্নপ্রান্ত থেকে ক্যারেট সংগ্রহ করতে হয়। কেনা এবং পরিবহন খরচ বাদ দিয়ে প্রতি ক্যারেটে সর্বচ্চো ৩ থেকে ৪ টাকা লাভ করে বিক্রি করা হয়।

অপর ব্যবসায়ী মো.সেলিম বলেন,দেশে আমদানি কমে যাওয়ায় মোকামে ক্যারেটের দাম বেড়ে গেছে। যার কারনে এখন একটি ক্যারেট কিনতে হচ্ছে ১৫০-১৬০ টাকায়। খরচ বাদ দিয়ে সামান্য লাভ রেখে খুচরা ও পাইকারি বিক্রি করি। এখানে কোন সিন্ডিকেট নেয়।

নাম না প্রকাশ করার শর্তে একজন ট্রাক নিয়ন্ত্রক (দালাল) বলেন,চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা থেকে প্রতি মৌসুমে চার মাস প্রায় ৬০ হাজার গাড়ী আম দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়। প্রতি গাড়ীর আমে ক্যারেট ব্যবহার হয় ৫০০টি। এসব ক্যারেট স্থানীয় বাজার থেকেই কিনতে হয়। সব মিলিয়ে জেলায় শত কোটি টাকার ক্যারেট বাণিজ্য হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল হায়াত বলেন আজকে,ক্যারেট মজুদদারদের সভা করে সতর্ক করা হয়েছে। অধিক দামে ক্যারেট বিক্রি করলে অভিযান চালিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ