শনিবার, ১ এপ্রিল, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৮ চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ ।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ অফিস
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার নামোশংকরবাটী ফতেপুর মহল্লায় দুই শিশু হত্যাকা-ের ঘটনায় গ্রেফতারকৃত বাড়ির মালিক ইয়াসিন আলীকে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন করেছে পুলিশ। এছাড়া নিহত মেঘলা ও মালিহার শরীরে থাকা গয়না কেনার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে স্বর্ণ ব্যবসায়ী পলাশকে। এদিকে দুবাই থেকে মেঘলার বাবা মিলন রানা দেশে ফেরার পর বৃহস্পতিবার নিহত শিশু মেঘলার দাফন সম্পন্ন হয়েছে। ঘাতকের বিচার দাবীতে বিকেলে এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে স্থানীয় এলাকাবাসী।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম জানান, মেঘলা ও মালিহাকে হত্যার কথা স্বীকার করে বুধবার বিকেলে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী দেয় এই ঘটনায় গ্রেফতারকৃত বাড়ির মালিক ইয়াসিন আলীর ছেলের বউ লাকি আক্তার। কিন্তু এই হত্যাকা-ের ব্যাপারে ইয়াসিন আলী মুখ না খোলায় অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে বৃহস্পতিবার আদালতে আবেদন করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, সব দিক মাথায় রেখে আলোচিত এই ডাবল মাডারের তদন্ত চলছে। এরই মধ্যে মেঘলা ও মালিহার শরীরে থাকা গয়না কেনার অভিযোগে স্বর্ণ ব্যবসায়ী পলাশকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদিকে বৃহস্পতিবার ভোরে দুবাই থেকে বাড়িতে ফিরেছেন নিহত মেঘলার বাবা মিলন রানা। এরপর চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালের হিমঘর থেকে মেঘলার লাশ নিয়ে যাওয়া হয় তার বাড়িতে। এসময় সেখানে হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। একমাত্র মেয়ের লাশ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন তার বাবা-মা ও স্বজনরা। পরে দুপুর ২টায় জানাজার পর স্থানীয় গোরস্থানে দাফন করা হয় মেঘলাকে। বিকেলে এই হত্যাকা-ে জড়িত লাকি আক্তারের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে স্থানীয় এলাকাবাসী।
এদিকে বহস্পতিবার সকালে বিএনপির যুগ্মমহাসচিব সাবেক সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার অসংখ্য মানুষ মেঘলা ও মালিহার বাড়িতে গিয়ে স্বজনদের শান্তনা দিয়েছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের নামোশংকরবাটী ফতেপুর মহল্লার প্রবাসী মিলন রানার মেয়ে স্থানীয় ছোটমনি বিদ্যা নিকেতনের প্রথম শ্রেণির ছাত্রী সুমাইয়া খাতুন মেঘলা ও প্রতিবেশী আবদুল মালেকের মেয়ে একই স্কুলের নার্সারির ছাত্রী মেহজাবিন আক্তার মালিহা গত রোববার সকালে নিখোঁজ হয়। ঘটনার দুইদিন পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রতিবেশি ভ্যানচালক ইয়াসিন আলীর বাড়ি থেকে মেঘলা ও মালিহার বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় ওই বাড়ির মালিক ইয়াসিন আলী, তার স্ত্রী তানজিলা বেগম ও ছেলের বউ লাকি আক্তারকে গ্রেফতার করা হয়। বিভিন্নজনের কাছ থেকে চড়া সুদে নেয়া লোনের টাকা পরিশোধের জন্য নিহত শিশু মেঘলার গলায় থাকা চেইন ও কানের দুল আত্মসাত করতেই সে ওই দুই শিশুকে হত্যা করে বলে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী প্রদান করে লাকি।