চাঁপাইনবাবগঞ্জে মধুমতি এনজিও ১০৫ কোটি টাকা নিয়ে উধাও

আপডেট: এপ্রিল ১, ২০২৩, ১১:০১ অপরাহ্ণ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি:


চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে অতিরিক্ত মুনাফার লোভ দেখিয়ে মধুমতি সমাজ উন্নয়ন সংস্থা নামক একটি এনজিও’র চেয়ারম্যানসহ পরিচালকরা গ্রাহকদের বিনিয়োগকৃত ১০৫ কোটি টাকা নিয়ে উধাও হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে । এতে হাজার হাজার গ্রাহক তাদের বিনিয়োগকৃত টাকা নিয়ে শংকায় রয়েছেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌরসভায় ৪৬ টি শাখা অফিস থেকে প্রায় ১০৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে স্বেচ্ছায় অস্ত্রসহ আটকের নাটক করে পুলিশের কাছে ধরা দিয়ে নিরাপদে জেল হাজতে অবস্থান করছেন এনজিও’র নির্বাহী পরিচালক মাসুদ রানা। মাসুদ রানার স্ত্রী মধুমতি গ্রুপের চেয়ারম্যান মাহমুদা খাতুন ঢাকার বসুন্ধরার নিজস্ব ফ্ল্যাটে তার নিকটতম আত্মীয় স্বজনদের নিয়ে বিলাসবহুল জীবন যাপন করছেন।

শনিবার (১ এপ্রিল) দুপুরে ভুক্তভোগির পক্ষ থেকে নাসিম উদ্দিন চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রেসক্লাবে এক সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন, শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাট ইউনিয়নের আব্বাস বাজার এলাকায় গড়ে উঠে মধুমতি সমাজ উন্নয়ন সংস্থা নামক একটি এনজিও। বাংলাদেশ ব্যাংকের মাইক্রোরেগুলেটরী অথরিটি-এমআরএ’র কোন অনুমতি না থাকলেও শুধুমাত্র সমবায় সমিতির নিবন্ধন নিয়ে ৪৬টি শাখা অফিসের মাধ্যমে এনজিওটির নির্বাহী পরিচালক মাসুদ রানা কার্যক্রম শুরু করেন। পরবর্তীতে কিছু গ্রাহকদের লগ্নিকৃত টাকার মুনাফা দিলেও গত ৬ মাস থেকে সকল প্রকার লাভসহ বিনিয়োগকৃত অর্থ ফেরত দেয়া বন্ধ করে দেয়। ভুক্তভোগি রোকেয়া বেগম সাংবাদিকদের জানান, গ্রাহকের টাকায় আলিশান জীবন-যাপনসহ নিজ পরিবার ও আত্মীয়স্বজনের নামে বেনামে বিভিন্ন সম্পদের পাহাড় তৈরী করেন। গ্রাহকরা তাদের লগ্নিকৃত টাকা ফেরত চাইলে এনজিওটির মালিক বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে কালক্ষেপণ করতে থাকেন এবং নিজেকে রক্ষার জন্য অস্ত্রসহ আটকের নাটক সাজিয়ে গত বছরের ১৭ নভেম্বর মধুমতি এনজিও’র পরিচালক মাসুদ রানা অস্ত্রসহ পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন। এরপর থেকেই তিনি কারাগারে রয়েছেন। আরেক ভুক্তভোগি গোমস্তাপুর উপজেলার মোসাঃ শুকতারা বেগম খাতুন বলেন, আমাদের কষ্টের টাকা মেরে দিয়ে অস্ত্র মামলায় জেলে অসুস্থতার ভান করে আরাম আয়েশে রয়েছেন মাসুদ। এনজিও’র সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে আইনের আওতায় এনে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান। গত ১০ মার্চ শিবগঞ্জে এনজিও মধুমতি থেকে টাকা ফেরতের দাবিতে কয়েক’শ ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে।

এ ব্যাপারে শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আবুল হায়াত জানান, বিষয়টি তিনি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে সমস্যার সমাধান করা হবে। এবিষয় জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খাঁন জানান, এ ঘটনায় শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার কথা বলা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ