রবিবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৫ মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি:
স্বৈরাচার হাসিনা সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দের তৈরি তালিকা দেখে সাধারণ ও বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষকে ধরে নিয়ে গিয়ে জঙ্গি মামলা ও হত্যার অভিযোগ তুলে এর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জে।সোমবার (০২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে আ.লীগ সরকারের আমলে জঙ্গি নাটক সাজিয়ে হত্যা ও হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধনের আয়োজন করে বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষ ও ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে কৃষক, নাপিত, জেলেসহ বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষকে দিনে ও রাতে আটক করে নিয়ে গিয়ে গুম করতো র্যাব ও ডিবি। এরপর জিহাদী বই, অস্ত্র ও গানপাউডার সামনে দিয়ে মিথ্যা নাটক সাজিয়ে ছবি তুলে জঙ্গি মামলা দিতো। পরিবারের একজনকে তুলে নিয়ে যাওয়ার সময় অন্যান্য সদস্যদেরকেও ক্রসফায়ারে হত্যার হুমকি দিতো তারা। এমনকি এসব ঘটনায় কয়েকজন শিক্ষার্থী ও শিক্ষককে তুলে নিয়ে গিয়ে গুম করে ব্যাপক শারীরিক নির্যাতন করে জঙ্গি মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়।
ভুক্তভোগীরা আরও বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের ২০০৮ থেকে ২০২৪ সালে ক্ষমতাচ্যুতির পূর্ব পর্যন্ত শাসনামলে জঙ্গি নাটক সাজিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার তরুণ সমাজের অনেক শিক্ষার্থী ও ক্ষুদে ব্যবসায়ীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে আটক করে। ফলে এ অঞ্চলের অসংখ্য মানুষ ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুক্ষীণ হয়েছেন। আর বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়াতে স্বৈরাচারী সরকারের গুম খুনের ভয়ে কেউই প্রতিবাদ করা তো দূরের কথা মুখ খুলতেও পারেননি। আর তাই স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পরে প্রতিষ্ঠিত গণআকাংক্ষার নিরপেক্ষ সরকারের কাছে উদ্দেশ্যমূলক, বানোয়াট ও সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে ন্যায় প্রতিষ্ঠার স্বার্থে যথাযথ কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
মানববন্ধনে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার করার পাশাপাশি এসব অপকর্মের সাথে জড়িত র্যাব ও ডিবি সদস্যদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন বক্তারা। এসময় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, জঙ্গি নাটকের ভুক্তভূগী সালাউদ্দিন, মোহন, আব্দুল্লাহিল কাফি, আজিজুল, তৌহিদুর ইসলাম, মৃত আবুর স্ত্রী সুমাইয়া, জিয়াউর রহমানসন অন্যান্যরা।
মানববন্ধনে ২০-২৫টি পরিবারের শতাধিক সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও সুষ্ঠ তদন্তের দাবিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টা ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন ভুক্তভোগীরা।