চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি:দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষ হতেই শুরু হয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংরক্ষিত আসনে সংসদ সদস্য হতে নারী নেত্রীগণ দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) থেকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যলয় থেকে সংরক্ষিত মহিলা আসনের মনোনয়ন ফরম কেনার জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জের নারী নেত্রীরা ঢাকায় অবস্থান করছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে সংরক্ষিত নারী আসনে দৌড়ে নবীন-প্রবীণ মিলিয়ে মাঠে নেমেছেন বেশ কয়েকজন নারী নেত্রী। চালাচ্ছেন জোর লবিং এবং বিরতিহীনভাবে এ প্রচেষ্টায় কমতি না রাখতে কয়েকদিন ধরে এ সব নেত্রীরা ঢাকায় অবস্থান করছেন এবং কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে সাক্ষাৎ করে নিজেদের পক্ষে নানা তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে আওয়ামী লীগের প্রভাশালী নেতা-নেত্রীদের বাসাবাড়িতে গিয়েও উপস্থিত হচ্ছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। বিদ্যমান আইন অনুযায়ী, সরাসরি ভোটে জয়ী দল গুলোর আসন সংখ্যার অনুপাতে নারী আসন বণ্টন করা হয়। সংসদের সাধারণ আসনে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা সংরক্ষিত আসনের নির্বাচনের ভোটার হন। দুটি সংরক্ষিত আসন বাদে ৪৮টি আসনই আওয়ামী লীগ সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা হাতে রয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে সংরক্ষিত আসনে নবীন-প্রবীণ নারী সংসদ সদস্য কে হচ্ছেন তা নিয়ে সব জায়গায় চলছে আলোচনা চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে সংরক্ষিত আসনে সংসদ সদস্য হিসেবে মনোনয়নের জন্য এবার বেশ কয়েকজন নারী নেত্রী দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। তারা হলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ আওয়ামী লীগের সদস্য ও প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা কাইয়ুম রেজা চৌধুরীর কন্যা জারা জাবিন মাহবুব, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাকিনা খাতুন পারুল, সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য ও জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মোসাঃ হালিমা খাতুন, সাবেক এমপি ডা. মঈন উদ্দীন আহমেদ মন্টুর সুযোগ্য কন্যা সুরাইয়া সুলতানা শর্মি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক এ্যাডভোকেট শামসুল হকের কন্যা ও জেলা মহিলা আওয়ামী যুব লীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট ইয়াসমিন সুলতানা রুমা ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম ডা. মেসবাহুল হক বা”চুর জেষ্ট্য কন্যা ও বর্তমান সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ ফেরদৌসী ইসলাম জেসী। তার মেয়াদ কালে নাচোল উপজেলার কার্তিক ক্ষুদ্র নূ-গোষ্ঠি অধ্যুষিত এলাকার ধরাইল দীঘি পাড়া গোপিনাথপুর ও কার্তিক পুর এলাকায় তেভাগা আন্দোলনের মহিয়সী নারী নেত্রী ইলা মিত্রের নামে ১টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। এছাড়া তিনি অসহায়, প্রতিবন্ধি ও ত্যাগী বয়স্ক আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের প্রধান মন্ত্রীর ত্রান তহবিল থেকে অর্থ বরাদ্দ করেন।
সূত্র জানায়, দ্বাদশ সংসদে সংরক্ষিত নবীন-প্রবীণ নারী আসনগুলোতে নতুনদের সুযোগ দিতে চায় আওয়ামী লীগ। সে কারণে বাদ পড়বেন বেশিরভাগ বর্তমান এমপি। তবে দলের সভানেত্রীর বিশেষ বিবেচনা আর ব্যতিক্রম ক্ষেত্রে ‘চার-পাঁচজন’ পুনরায় সংসদে আসতে পারেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের সম্ভাব্য প্রার্থী জারা জাবিন মাহবুব জানান, দলের সভানেত্রীর সুবিবেচনায়ই তাদের একমাত্র ভরসা। দীর্ঘদিন ধরে দলীয় নানা সামাজিক সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড পরিচালনা করছেন। নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করে আসছেন। সংসদ সদস্যের পদটি অত্যন্ত গুরুত্বপৃর্ণ। এজন্য জ্ঞান, মেধা, দক্ষতা সর্বোপরি সুশিক্ষিত হতে হবে। জননেত্রী শেখ হাসিনা স্মাট বাংলাদেশের রূপকার। তিনি আরও বলেন করোনাসহ দুর্যোগ কালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার অবহেলিত চরসহ বিভিন্ন এলাকায় ত্রান সামগ্রী বিতরন করেছেন। আশা করি মাননীয় সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আমার ও আমার পরিবারের র্দীঘ দিনের কর্মকান্ড পর্যালোচনা করে তাকে মনোনয়ন দিবেন ইনশাল্লাহ্।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নেতা জানান, এমপি প্রার্থীদের মধ্যে কয়েকজন রয়েছেন পারিবারিকভাবেই দলের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জড়িত। আবার কয়েকজন রয়েছেন বেশ নবীন। প্রার্থীদের কেউ কেউ দলের দুর্দিনে-সুদিনে দলের পতাকা ধরে রেখেছিলেন। আবার কেউ কেউ দলের সুবিধাজনক অবস্থা দেখে নতুন রাজনীতিতে নেমেছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিয়াউর রহমান এমপি বলেন, এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারী ভোটারদের উৎসাহিত করতে মাঠে যারা সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন। আশা করি তাদের মধ্য থেকে যোগ্যতা সম্পন্য সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য নির্বাচিত করা হবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওদুদ এমপি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সকল ধরনের যোগ্যতা বিবেচনা করে সংরক্ষিত নারী সংসদ উপহার দিবেন।
তিনি আরও বলেন, এই বৃহৎ এলাকার জন্য যোগ্য নারীকেই এমপি বানাবেন তা নিঃসন্দেহে বলা যায়।