চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভা ও জেলা পরিষদের দ্বন্দ্বে ৫০০ মিটার রাস্তা সংস্কার হয় না

আপডেট: ডিসেম্বর ৪, ২০২৪, ৮:৪৩ অপরাহ্ণ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি


চাঁপাইনবাবগঞ্জে ও শিবগঞ্জ পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ দুটি সড়কের প্রায় ৫০০ মিটার দীর্ঘদিন যাবত সংস্কার না হওয়ায় জনদূর্ভোগ চরম অকার ধারণ করেছে।শিবগঞ্জ পৌরসভার মডেল স্কুল মোড় থেকে বাজার রোডের ননী ডাক্তারের মোড় পর্যন্ত ১৭০ মিটার রাস্তাটি বরাদ্দের অভাবে সংস্কার কাজ করতে পারছে না শিবগঞ্জ পৌরসভা।

পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৮সালে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ প্রকল্পের আওতায় এলজিইডির অর্থায়নে এ রাস্তাটুকু সংস্কার হয়েছিল। এ পর্যন্ত এ রাস্তাটুকু সংস্কারের কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ছোট বড় অনেক খানাখন্দে ভরা যানবাহন চলাচলের অযোগ হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার পাওয়ার হাউজ মোড় থেকে ফায়ার সার্ভিস মোড় পর্যন্ত দৈর্ঘ ৩৩০ মিটার রাস্তা সর্বশেষ সংস্কার কাজ করা হয়েছিল ১২ বছর আগে। প্রতিদিন এই সড়ক দুইটি রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে হাজার হাজার মানুষ। এ দুটি রাস্তাই শত শত খানাখন্দে ভরা। অযোগ্য হয়ে পড়েছে জনগনের যাতায়াতের পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় অল্প বৃষ্টি হলেই সড়কটিতে পানি জমতে শুরু করে। ফলে প্রতিনিয়তই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। কিন্তু এপর্যন্ত কেউ পদক্ষেপ নেয়নি।

সড়কটির একপ্রান্তে রয়েছে জেলা পরিষদ কার্যালয়, জেলা ও সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় ও নেসকোর বিতরণ বিভাগ-১ ও ২ কার্যালয়। অন্যপ্রান্তে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জেলা কার্যালয়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ডায়াবেটিক এ্যাসোসিয়েশন, ফায়ার সার্ভিস উপ-সহকারী পরিচালকের কার্যালয়সহ ৫৩ বিজিবি ব্যটালিয়নের সদর দপ্তর। এছাড়া সড়কটিতে মার্কেট, কাঁচা বাজার, মুদির দোকান, ফার্মেসীসহ আছে বিভিন্ন প্রকারের প্রায় দু’শতাধিক দোকান। জেলার গোমস্তাপুর, নাচোল, ভোলাহাটসহ সদরের আমনুরা এলাকার হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন এই সড়কটি দিয়ে যাতায়াত করেন।সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কটিতে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলের যাতায়াত বেশি। বাস-ট্রাকের যাতায়াত কিছুটা কম। রাস্তাটিতে যাতায়াতের সময় অটোরিকশার যাত্রীরা দুর্ঘটনার শঙ্কা নিয়েই যাতায়াত করেন। সবচেয়ে দুর্ভোগে পড়ছেন অন্তঃসত্ত্বা নারী ও ডায়াবেটিক রোগীরা । টি অ্যান্ড ট্রেডার্স মালিক মনিরুজ্জামান বলেন রাস্তাটি সংস্কর অত্যন্ত জরুরী।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী তৌফিকুল ইসলাম বলনে, রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে থাকায় পথচারীদের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাস্তার জায়গাটি পৌরসভার মধ্যে পড়ে, যার কারণে আমরা সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছি। সেজন্য জেলা পরিষদের কাছে অনুমতিপত্র চাওয়া হয়েছে। আশা করছি তারা পত্রটি হস্তান্তর করবে।

অন্যদিকে শিবগঞ্জ পৌরসভার অন্যতম প্রধান গুরুত্বপূর্ণ সড়ক হচ্ছে মডেল স্কুল মোড় থেকে বাজার রোড পর্যন্ত প্রায় ১৭০ মিটার। এ রাস্তার ১৭০ মিটারের মধ্যে রয়েছে শিবগঞ্জ সরকারি মডেল হাইস্কুল, কৃষি ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, আই এফ আই সি, ব্র্যাক, যমুনা ব্যাংকসহ বেশ কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এছাড়া এ সড়কটি কাঁচাবাজার ও মূল বাজারে যাবার অন্যতম প্রধান রাস্তা হওয়ায় প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত লোক চলাচল হয় হাজার হাজার। প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক নুরতাজ আলি বলেন, রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় এবং ড্রেনেজ ব্যবস্থা খারাপ হওয়ায় বাড়ি ভাড়া দেওয়ার পর ভাড়াটিয়ারা থাকতে চান না।

বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে আমার মতো বৃদ্ধদের বাজার করতে যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে।শিবগঞ্জ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী এবং উপ-সহকারী প্রকৌশলীর পদ শূন্য থাকায় এ ব্যাপারে পৌরসভার নক্সাকার প্রকোশলী তৌহিদুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সর্বশেষ ৯৮ সালে ফ্লাড ড্যামেজ প্রজেক্টের আওতায় এলজিইডি থেকে শিবগঞ্জ পৌরসভা যে অর্থ বরাদ্দ পায় সে টাকায় সড়কটি সংস্কার করা হয়। দীর্ঘ দিন পর এ রাস্তাটির জন্য ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ ১১ ফিট ৮ ইঞ্চি চওড়া রাস্তা নির্মাণের জন্য অর্থ বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। দরপত্র দ্রুত আহ্বান করা হবে এবং রাস্তাটি সংস্কার করা হবে।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

Exit mobile version