চাঁপাইয়ে ইদের কেনাকাটা জমজমাট মার্কেটে উপচেপড়া ভিড়

আপডেট: মার্চ ২৩, ২০২৫, ১১:২৩ অপরাহ্ণ


সাজেদুল হক সাজু, চাঁপাইনবাবগঞ্জ:


চাঁপাইনবাবগঞ্জে জমে উঠেছে ইদের কেনাকাটা। নিউ মার্কেটেসহ অন্যন্য বিপনী বিতানে মানুষের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ইদুল ফিতরের আর সাত দিন বাকি। চলছে কেনাকাটার ধুম।
রোজার দ্বিতীয় দশকেই জমে উঠে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ইদবাজার। বেলা বাড়ার সঙ্গে বাড়ছে ভিড়। মার্কেটগুলোতে বাড়ছে কেনাবেচার ব্যস্ততা। অভিজাত বিপনী বিতান, মার্কেট, ছোট-বড় ব্র্যান্ডের দোকান-আউটলেট এমনকি ফুটপাতেও ধুম পড়েছে কেনাকাটার। রোববার (২৩ মার্চ) শহরের নিউমার্কেট, ক্লাব সুপার মার্কেট শহীদ সাটু হল মার্কেট ডিসি মার্কেট পুরানো বাজার হোলসেল মার্কেট ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।

ক্লাব সুপার মার্কেটের আমেনা বস্ত্রালয়ের মালিক জাকারিয়া ভদ্র জানান, গত বছর বিকেলে কিংবা সন্ধ্যার পর থেকে মার্কেটগুলোতে কেনাকাটার জন্য মানুষজনের উপস্থিতি দেখা গেলেও এ বছর দুপুরের আগে থেকেই মানুষজন ভিড় করছেন। এতে করে আগেভাগেই ইদের বাজারে তৈরি হয়েছে উৎসবমুখর পরিবেশ।
নিউমার্কেট ও ক্লাব সুপার মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, মার্কেট এবং শপিংমলগুলোতে সকাল থেকে শুরু হচ্ছে ব্যস্ততা। নানা ধরনের অফার এবং ইদ স্পেশাল কালেকশন বিক্রি করা হচ্ছে জনপ্রিয় বড়বড় শোরুমগুলোতে।

নিউমার্কেট এর সবচেয়ে বড় শোরুম বিসমিল্লাহ গার্মেন্টসের কয়েকটি শাখায় ঘুরে দেখা গেছে, শোরুম গুলোতে পুরুষদের পায়জামা-পাঞ্জাবি, শার্ট-প্যান্ট, গেঞ্জি, টিশার্ট, নারীদের শাড়ি, থ্রিপিস, ওয়ান পিস, কুর্তা এবং বাচ্চা ও শিশুদের পায়জামা-পাঞ্জাবি, ফ্রক, গেঞ্জিসেটসহ আধুনিক ডিজাইনের পোশাক পাওয়া যাচ্ছে। একইসঙ্গে কসমেটিকস, জুতা, ঘর সাজানোর সামগ্রী এবং গহনার দোকানগুলোতেও ভিড় জমাচ্ছেন মানুষজন।

নিউমার্কেট মোশাররফ গার্মেন্টসে ইদ বাজার করতে আসা শিরিন আক্তার জানান, সিজনাল ডিসকাউন্ট ও ফেস্টিভ অফারের এবং নির্দিষ্ট ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার করে কিংবা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করলেও মিলছে ছাড় এবং ক্যাশব্যাক অফার।

মোশাররফ গার্মেন্টসের মালিক মোশাররফ হোসেন জানান, এ বছর ইদের কেনাকাটা আগেভাগেই শুরু হয়েছে। প্রতিদিনই বাড়ছে ভিড়। এবার নারী, পুরুষ ও শিশুর জন্য বিভিন্ন ডিজাইনের নতুন পোশাকগুলো বিক্রি হচ্ছে ব্যাপক হারে। এছাড়াও মসলিন, সিল্ক, জামদানি, কাতান, কাশ্মীরি কাজ করা শাড়ি ও লেহেঙ্গা, পুরুষদের পায়জামা-পাঞ্জাবি, টিশার্ট এবং শিশুদের জন্য নানা রঙের আরামদায়ক পোশাকের চাহিদা বেশি। গরমকে প্রাধান্য দিয়ে ক্রেতারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সুতি কাপড়কে প্রাধান্য দিচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

নিউমার্কেটের স্মার্ট ফ্যাশনের মালিক নাহিদ হাসান জানান, রমজানের প্রথম থেকে বাজারগুলোতে কেনাকাটা আগেভাগেই থেকেই শুরু হয়েছে। ক্রেতাদের আনাগোনা বাড়ায় বেচাকেনা শুরু হয়েছে এবং সেই সঙ্গে কেনাকাটায় নতুনমাত্রা যোগ হয়েছে। আর ক্রেতাদের সমাগম বাড়তে থাকায় দোকানীরাও বেশ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন। ক্রেতাদের চাহিদা জিন্স জাতীয় প্যান্ট, গ্যাবাডিন, টি-কার্ট, সর্ট-কার্ট, পাঞ্জাবী ও থ্রি-পিসের।
ক্লাব মার্কেটে পরিবারসহ কিনতে আসা শ্যামলী বেগম জানান, তুলনামূলকভাবে এবারও কিছুটা দাম বাড়লেও ঈদে নতুন পোশাক কিনতে হচ্ছে। দোকানগুলোতে পাওয়া যাচ্ছে ল্যাহেঙ্গা, জয়পুরী/কলমকাড়ি, বুটিকস, চোষা, জিপসি, দেশীয় সূতি ও বিভিন্ন থ্রি-পিস, নাইরাকাট পোশাক। মেয়েদের বিভিন্ন ডিজাইনের ডিভাইডার, জিপসি ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা, লেহেঙ্গা ৭০০০ থেকে ৮০০০ টাকা পর্যন্ত দরে পাওয়া যাচ্ছে। অন্যান্য থ্রি-পিস ১৫০০ থেকে ২৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

নিউমার্কেট ও ক্লাব সুপার মার্কেটে বহুল পরিচিত পোষাক ও কাপড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান, মোশারফ থ্রী পিস হাউস, মোশারফ কিডস গ্যালারি, মোশারফ জেন্টস গ্যালারি, সুতরাং গার্মেন্টস, উৎসব, রুপমস বুটিকস অ্যান্ড লেডিস কর্তার, জুনায়েদ ফ্যাশন, মুশকান ফ্যাশন, ‘ইসলাম এন্ড ব্রাদার্স’, সুমন ক্লথ স্টোর, ফ্যাশন ওয়ার্ল্ড, বাঁধন ফ্যাশন, ফ্যাশন গার্মেন্টস, ‘থ্রি-পিস কালেকশন’, বিসমিল্লাহ গার্মেন্টস, বিসমিল্লাহ টি-কার্ট, এক্সপোর্ট গ্যালারী, ‘মা বস্ত্র এ্যান্ড গার্মেন্টস’, আমেনা বস্ত্রালয়, রাজশাহী স্টোর, মিলন গার্মেন্টস, আমেনা ফ্যাশনসহ অন্যান্য শো-রুমে নিত্যনতুন শাড়ী ও ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী বাহারী পোশাকের সমারহ ঘটিয়েছে।

দোকানীরা জানান, দোকান খোলার পর থেকে বেলা ৪টা পর্যন্ত ক্রেতারা আসছেন। তারপর ক্রেতাদের আনাগোনা কমে গেলেও আবার সন্ধ্যার পর বেচাকেনা শুরু হচ্ছে। প্রায় সব পণ্যের দাম তুলনামূলক কিছুটা বেড়েছে। এরপরও সাধ্যের মধ্যে কিনছেন ক্রেতারা। বিক্রেতারা বলছেন, সময় যতই গড়াচ্ছে ভিড় ততই বাড়বে এবং চাঁদরাত পর্যন্ত চলবে বেচাকেনা।