চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি :
চাঁপাইনবাবগঞ্জে অটোরাইস মিলের শক্তিশালী সিন্ডিকেট আবারও চালের দাম বাড়িয়েছে বলে অভিযোগ। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে চালের দাম বেড়েছে পাঁচ থেকে ছয় টাকা। প্রশাসন নিরব, ভোক্তাদের ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা দেখার কেউ নাই।
জানা গেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জে খুচরা বাজারে স্বর্ণা, ২৮, জিরা, কাটারিভোগ এবং বাসমতি চালের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। বিক্রেতারা অভিযোগ করছেন, বড় আড়ৎদার ও মিলমালিকেরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সরবরাহ কমিয়ে চালের দাম বাড়াচ্ছেন। তারা বলছেন, চালের দাম বেড়ে যাওয়ার পেছনে মজুতদারদের হাত রয়েছে, যা বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ বরেন্দ্র অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকার জমি তিন ফসলি। এ অঞ্চলে বোরো ও আমন ধানের ব্যাপক চাষ হয়। বর্তমানে বাজারে নতুন আমন ধান উঠছে, তারপরেও সব ধরনের চালের দাম বেড়ে গেছে।
সাত দিন আগে স্বর্ণা চাল প্রতি কেজি ৫০ টাকা ছিল, এখন তা ৫৫ টাকা। ২৮ চাল ৬৭ টাকায় বিক্রি হতো, এখন তা ৭০ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে। জিরা চাল ৭৭ টাকায় বিক্রি হলেও দাম ৫ টাকা বেড়ে গেছে। কাটারিভোগ চালের দাম ৮৫ টাকার ওপরে চলে গেছে এবং বাসমতি চাল ১০০ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে।
ক্রেতারা বলছেন, প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় সিন্ডিকেটের পক্ষ থেকে এ সুযোগ নেওয়া হচ্ছে। চাল ক্রেতা নিয়ামত আলী বলেন, গত সপ্তাহে স্বর্ণা চাল কিনেছিলেন ৫০ টাকায়, আর আজ তা ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তিনি মনে করেন, চালের ভরা মৌসুমে দাম বাড়ানোর সুযোগ নেই। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দাম বাড়ানো হচ্ছে।
আরেক ক্রেতা বিশু বলেন, তিনি ৫০ কেজি চাল কেনার জন্য বাজারে এসেছিলেন, কিন্তু দাম শুনে মাত্র ২০ কেজি চাল কিনে ফিরে গেছেন। তিনি বলেন, বড় আড়তদার ও মিল মালিকেরা বিনা অজুহাতে দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন এবং প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ না থাকায় তারা নিয়মিত এই সুযোগ নিচ্ছেন।
চালের খুচরা বিক্রেতা মোবারক হোসেন বলেন, সয়াবিন তেলের মতো চালের দামও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাড়ানো হচ্ছে এবং সরবরাহ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি মনে করেন, যদি প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নেয়, তবে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। আরেক বিক্রেতা জানান, চাহিদার তুলনায় আড়তদাররা চাল সরবরাহ করছেন না, যা বাজারে সংকট তৈরি করেছে এবং দাম বেড়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক আসাদুজ্জামান রুমেল বলেন, সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তিনি বলেন, টাস্কফোর্স গঠন করে দ্রুত অভিযান চালানো হবে। তিনি আরও বলেন, যদি মিল মালিক বা আড়তদারেরা মজুত করে চালের দাম বাড়ান, তবে তাঁদের ছাড় দেওয়া হবে না।