বুধবার, ৯ অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৪ আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
চারঘাট প্রতিনিধি:
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর বিভিন্ন অভিযোগে রাজশাহীর চারঘাটে মামলা হয়েছে ৫টি। মামলায় আসামী করা হয়েছে, আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, কৃষকলীগ ও ছাত্রলীগের শীর্ষ পদের একাধিক নেতাকর্মীকে। অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়েছে কয়েকশো জনকে। ফলে মামলা দায়েরের পর থেকে চিহ্নিত এসব নেতাকর্মীরা বাড়ি-ঘর ছেড়ে রয়েছেন আত্মগোপনে।
এ দিকে এসব মামলাকে পুঁজিকে করে কতিপয় সাংবাদিক পুলিশকে জড়িয়ে নেমেছেন তদবির ও মামলা বাণিজ্যে। অভিযোগ উঠেছে কথিত সাংবাদিকরা নিজেদের মত করে তালিকা প্রস্তুত করে মামলা থেকে বাঁচাতে টাকা দাবি করছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
জানা যায়, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায় স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা। এরপর থেকে আওয়ামীলীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা বাড়ি-ঘর ছেড়ে চলে যান আত্মগোপনে। ফলে শুরু হয় মানবতা বিরোধী মামলাসহ খুনের একাধিক মামলা। তারই ধারাবাহিকতায় চারঘাটে বিভিন্ন অপরাধে মামলা হয় ৫টি।
মামলাগুলোতে আসামী করা হয় উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ফকরুল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী মাহমুদুল হাসান মামুন, পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি সাবেক কাউন্সিলর সাজ্জাদ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র একরামুল হক, ছাত্রলীগের সভাপতি আল মামুন তুষার, সাধারণ সম্পাদক রায়হানুল হক রানা, সরদহ ইউপি চেয়ারম্যান হাসানুজ্জামান মধু, সদর ইউপি চেয়ারম্যান মতিউর রহমান মতি, ভায়ালক্ষিপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ, ইউসুফপুর ইউপি চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম মাখনসহ আওয়ামীলীগের সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ পদের একাধিক নেতাকর্মী। অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়েছে কয়েকশো। এসব মামলা থেকে বাঁচতে ও জনরোষের শিকার থেকে রক্ষা পেতে নেতাকর্মীরা রয়েছেন আত্মগোপনে।
ভুক্তভোগিরা জানাচ্ছেন, নিজেদের মত করে কয়েকটি তালিকা প্রস্তুত করে ওই সাংবাদিকরা আওয়ামীলীগ ঘরানার কয়েক ব্যক্তিকে মামলা থেকে রক্ষা করে দেয়ার নাম করে দাবি করছেন টাকা। টাকা দিলে মামলা থেকে নাম বাদ দেয়া হবে বলে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ভুক্তভোগী জানান, কম্পিউটার থেকে একটি তালিকা বের করে চারঘাটের কতিপয় সাংবাদিক কয়েকজনকে ফোন করে জানান তাদের বিরুদ্ধে চারঘাট থানায় মামলা হয়েছে। আমার সঙ্গে পুলিশ আছে। মামলা থেকে রক্ষা পেতে চাইলে যোগাযোগ করেন। মামলা থেকে আপনার নাম বাদ দেয়া যাবে। ওই সাংবাদিকের এমন প্রতিশ্রুতি দিলে ভুক্তভোগীরা যোগাযোগ করলে দাবি করা হয় অর্থ। তবে সন্দেহ দেখা দেয়ায় পরে থানায় যোগাযোগ করা হলে জানা যায়, তাদের নামে মামলাই হয়নি। এভাবে উপজেলা জুড়েই চলছে মামলা বাণিজ্য।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক নেতা এই প্রতিবেদককে জানান, কতিপয় পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে কয়েকজন কতিপয় সাংবাদিক কয়েকজনকে এভাবে ফোন করে মামলা হয়েছে বলে জানায়। পরে যাদের কাছে ফোন করা হয়েছিল তারা আমার কাছে আসলে জানতে পারি তাদের বিরুদ্ধে থানায় কোন মামলা হয়নি। অবৈধ পন্থায় টাকা কামানোর জন্যই সাংবাদিকরা এমন কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন বলে জানান তিনি।
বিষয়টি নিয়ে চারঘাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এএসএম সিদ্দিকুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এমন খবর শুনেছি। তবে কেউ কোন ধরনের অভিযোগ করেনি। কেউ মামলা নিয়ে বাণিজ্য করলে তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে তাক্ওে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান ওসি সিদ্দিকুর রহমান।