বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৫ আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ।
চারঘাট (রাজশাহী) প্রতিনিধি:
ভয়াবহ লোডশেডিং এর কবলে চারঘাটবাসী। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। দিন রাত সমান তালে চলছে লোডশেডিং। এতে কমলমতি শিশু ও অসুস্থ বৃদ্ধদের নিয়ে চরম বেকায়দায় দিন পার করছেন চারঘাটের মানুষ। দিনের বেলায় বিদ্যুতের দেখা মিললেও রাতের সিংহভাগ সময় বিদ্যুৎ থাকে না । তবে বিদ্যুৎ বিভাগের দাবি চাহিদার চেয়ে বিদ্যুতের ঘাটতি বেশি থাকায় লোডশেডিং বৃদ্ধি পেয়েছে। এটা জাতীয় সমস্যা বলে দাবি করেছেন বিদ্যুৎ বিভাগ এর চারঘাট জোনাল অফিসের ডিজিএম রঞ্জন কুমার সরকার।
জানা যায়, শতভাগ বিদ্যুায়িত উপজেলা হিসেবে ঘোষিত রাজশাহীর চারঘাট উপজেলা। প্রতিটি বাড়িতেই রয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ। সেই শতভাগ বিদ্যুতায়িত উপজেলায় এখন বিদ্যুৎ যায় না, আসে মাঝে মধ্যে। দিনের বেলায় বিদ্যুতের দেখা মেললেও রাতের বেলায় বিদ্যুৎ বিভ্রাটে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এক দিকে প্রচন্ড তাপদাহ, অন্যদিকে লোডশেডিং। গরম আর বিদ্যুৎ বিভ্রাট জনজীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলছে।
গত দুই দিন ধরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা গেছে, চারঘাটে এমনিতেই চরম গরম পড়ছে, সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে বিদ্যুতের লোডশেডিং। দিনে বিভিন্ন গাছ পালার নিচে বসে গরম থেকে রক্ষা পেতে চেষ্টা করা হলেও রাতে অমানবিক কষ্টে রাত যাপন করতে হচ্ছে। গরমে আগে থেকেই জ¦র,সর্দি, ডায়রিয়ায় ভুগছেন অনেকে। লোডশেডিং মরার উপর খরার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
উপজেলার কালুহাটি গ্রামের বাসিন্দা মজনু আহম্মেদ বাবু বলেন, দিনের বেলায় বিদ্যুতের দেখা পাওয়া গেলেও রাতের বেলায় থাকে না বিদ্যুৎ। এতে বাচ্চারা লেখা পড়াসহ দৈনন্দিন কাজও করতে পারছে না। রাত হলেও এলাকা ভুতড়ে অবস্থা বিরাজ করছে। প্রচন্ড গরমে জীবন হাসফাস হয়ে উঠছে। সারা দিনে কাজ কাম করে রাতে একটু শান্তিতে ঘুমাবো সেই অবস্থা আর নাই। তাছাড়া বাচ্চারাও অসুস্থ হয়ে পড়ছে। জ¦র, সর্দি লেগেই আছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. রমজান আলী বলেন, গত ৭ দিনে প্রায় পাঁচ শতাধিক শিশু ও বৃদ্ধরা জ¦র, স্বদী ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে শুধু ডায়রিয়া প্রায় শতাধিক রোগী ভর্তি হয়েছেন। এ ছাড়াও প্রতিদিন গড়ে যেসব রোগী দেখা হচ্ছে তারা অধিকাংশ গরম জনিত কারণে অসুস্থ হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের নিবিড় ভাবে সেবা প্রদান করা হচ্ছে।
নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি -২ এর চারঘাট জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার শ্রী রঞ্জন কুমার সরকার জানান, চারঘাটে দিনের বেলায় বিদ্যুতের গড় চাহিদা ১৩ মেগাওয়াট। এর বিপরীতে বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৬-৭ মেগাওয়াট। অন্য দিকে রাতের বেলায় বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ১৮ মেগাওয়াট। এর বিপরীতে পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৭-৮ মেগাওয়াট। বিদ্যূুতের চাহিদার তুলনায় বিদ্যুতের ঘাটতি অনেক। তাই অনিচ্ছাকৃত ভাবেই বিদ্যুতের লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। আর এটা শুধু চারঘাটেরই সমস্যা তা নয়। এটা জাতীয় সমস্যা বলে দাবি করেছেন তিনি।