চারঘাটে ১৪০টি নলকূপে আর্সেনিক শনাক্ত নিরাপদ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে আরও প্রচেষ্টা চালাতে হবে

আপডেট: মে ২৩, ২০২৩, ১২:৫৭ পূর্বাহ্ণ

চারঘাটে ১৪০টি নলকূপে আর্সেনিক শনাক্ত হয়েছে। রাজশাহী অঞ্চল কর্তৃক পানি সরবরাহে আর্সেনিক ঝুঁকি নিরসন প্রকল্প-এর আওতায় ১৫ হাজার নলকূপ পরীক্ষা করা হয়েছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সূত্র অনুযায়ী, এর মধ্যে ১৪০টি নলকূপের পানিতে ৫০ পিপিবি-র বেশি মাত্রায় আর্সেনিকের উপস্থিতি মিলেছে। এ নিয়ে গত ১৬ মে সোনার দেশ পত্রিকায় ‘চারঘাটে ১৪০টি নলকূপে আর্সেনিক’ শিরোনামে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
নাগরিকদের নিরাপদ পানি নিশ্চিত করার পথে আর্সেনিক এখনো একটি বড় সমস্যা। দেশের অনেক মানুষকেই বাধ্য হয়ে এমন পানি পান করতে হচ্ছে যাতে সহনীয় মাত্রার চেয়ে অধিক পরিমাণে আর্সেনিকের উপস্থিতি রয়েছে। এক হিসাব অনুযায়ী, দেশের ৪১ শতাংশ মানুষ এখনো নিরাপদ পানি পানের সুযোগ থেকে বঞ্ছিত হচ্ছে। মানুষের জন্য শুধু পানির জোগান নিশ্চিত করলেই চলে না, পানিকে অবশ্যই নিরাপদ হতে হবে। মানুষের সুস্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ খাবার পানি নিশ্চিত করার বিকল্প নেই। খাবার পানি নিরাপদ না হলে মানুষের সামগ্রিক জীবনে এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। বিশেষ করে শিশু ও নারীদের এর জন্য অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, দেশে গত দুই দশকে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিকযুক্ত নলকূপের সংখ্যা অর্ধেক কমেছে। তবে এই তথ্য কতটা সঠিক তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা সন্দিহান। প্রতি লিটার পানিতে কী পরিমাণ আর্সেনিক থাকলে সেটাকে নিরাপদ বলা যাবে, সেটি নিয়ে আন্তর্জাতিক মান এবং দেশীয় মানের মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মান অনুযায়ী, প্রতি লিটার পানিতে আর্সেনিকের সহনীয় মাত্রা দশমিক শূন্য ১ মিলিগ্রাম। অন্যদিকে দেশে নির্ধারিত মান অনুযায়ী, প্রতি লিটার পানিতে আর্সেনিকের সহনীয় মাত্রা হচ্ছে দশমিক শূন্য ৫ মিলিগ্রাম। আন্তর্জাতিক মান বিবেচনা করলে আর্সেনিকযুক্ত নলকূপের সংখ্যা সরকারের দেয়া হিসাবের চেয়ে বেশি হতে পারে বলে অনেকে মনে করেন।
দেশে অগভীর নলকূপের সংখ্যা কমার কারণে আর্সেনিক দূষণের শঙ্কা কমেছে। মানুষও এখন এ বিষয়ে আগের চেয়ে বেশি সচেতন। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আর্সেনিকমুক্ত নলকূপের কাজ আরও দ্রুত গতিতে এগিয়ে নিতে হবে। বর্তমান গতিতে কাজ করলে আর্সেনিকমুক্ত পানি সরবরাহের লক্ষ্য পূরণ করতে হলে এক যুগেরও বেশি সময় লাগতে পারে বলে কেউ কেউ আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
নাগরিকদের আর্সেনিকমুক্ত নিরাপদ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকারকে আরও জোরদার প্রচেষ্টা চালাতে হবে। নিরাপদ খাবার পানি নিশ্চিত করার পথে চ্যালেঞ্জগুলো কী সেটা নীতি-নির্ধারকদের না জানবার কথা নয়। জরুরি হচ্ছে, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ দেয়া। বরাদ্দকৃত অর্থের সুষম বণ্টনও নিশ্চিত করতে হবে।