চারঘাট ও বাঘা প্রতিনিধি:
রাজশাহী-৬ (চারঘাট-বাঘা) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী রাহেনুল হকের সমর্থক-কর্মির ওপর হামলা হয়েছে। এছাড়াও বাঘায় নৌকার নির্বাচনী কার্যালয় পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
চারঘাটে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মি নাজির হোসেন মারাত্মক আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) রাতে উপজেলার সারদাবাজারে এই হামলার ঘটনা ঘটে। আহত নাসিরকে উদ্ধার করে চারঘাট উপজেলা কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আহত ব্যক্তির ভাই উজির উদ্দীন বাদি হয়ে সাত জনের নাম উল্লেখ করে চারঘাট মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী রাহেনুল হক এই হামলার জন্য নৌকা প্রতিকের কর্মি-সমর্থকদের দায়ী করেছেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে চারঘাট মডেল অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এএসএম সিদ্দিকুর রহমান জানান, নাজির হোসেন বৃহস্পতিবার রাতে ট্রাফিক মোড় এলাকায় কাঁচি প্রতীকের প্রচারণা শেষে সাদিপুর এলাকায় তার নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন। এসময় সারদা বাজারে নৌকা প্রতীকের অফিসের সামনে পৌছালে নৌকা প্রতীকের সমর্থক ও উপজেলা বাস্তুহারা লীগের সভাপতি শামীম সরকার এবং সাদীপুরের ইউপি সদস্য আদিল মেম্বারের নেতৃত্বে নৌকা প্রতীকের অফিসের ভেতরে ডেকে নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও মারপিট করেন। এতে নাজির আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্ের ভর্তি করেন। কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, আহত ব্যক্তির মাথায় আটটি সেলাই দেয়া হয়েছে।
এদিকে তাৎক্ষণিক সংবাদের ভিত্তিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী রাহেনুল হক ও ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া বিপ্লবসহ কয়েকশো নেতাকর্মী হাসপাতালে জড়ো হয়ে এবং আহত ব্যক্তির চিকিৎসার খবর নেন।
ঘটনার সংবাদে রাতেই রাজশাহীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী, চারঘাট সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার প্রণব কুমার এবং চারঘাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এএসএম সিদ্দিকুর রহমান আহত নাুিজরের চিকিৎসার খোঁজখবর নিতে হাসপাতালে যান।
এঘটনায় স্বতন্ত্র প্রার্থী রাহেনুল হক বলেন, আমার কর্মীর ওপর অমানবিক মারপিট ছাড়াও, শলুয়াতে প্রচারণা গাড়ি ও অফিস ভাংচুর, পলাশবাড়িতে নৌকা মার্কায় ভোট না দিলে ভোট কেন্দ্রে যেতে বাধা দেয়াসহ কর্মিদের নানাভাবে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় ইতোমধ্যেই আসামী ফয়াসাল হোসেন ডন এবং বাপ্পিকে আটক করা হয়েছে। অন্য আসামিদের ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে- জানান ওসি।
সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইদা খানম জানান, স্বতন্ত্র প্রার্থীর অফিস ভাংচুরসহ অন্যান্য বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে বাঘায় অস্থায়ী নৌকার নির্বাচনী অফিস পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) রাতে বাউসা ইউনিয়নের ১ নম্বর দিঘা ওয়ার্ডের নির্বাচনী অফিস আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়। তবে কে বা কারা এ পুড়িয়ে দিয়েছে, তা কেউ বলতে পারছে না।
এ বিষয়ে ১ নম্বর দিঘা ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মুজিবুর রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) রাত ১১টা পর্যন্ত কয়েকজন কর্মী অফিসে বসেছিল। ভোর ৪টার দিকে বাজার পাহারাদার মাসুদ আলী খবর দেয় অফিস পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ঘটনা থানাকে অবগত করলে ভোর ৫ টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। এ বিষয়ে নৌকার প্রার্থী পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপিকে অবগত করেছি।
এ বিষয়ে বাঘা থানার ওসি আমিনুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। ঘটনার তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবো।