চারঘাট পৌর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে জামানতের কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

আপডেট: সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৪, ৯:৩২ অপরাহ্ণ

চারঘাট (রাজশাহী) প্রতিনিধি:


রাজশাহীর চারঘাট পৌরসভা এলাকার দুটি কিচেন মার্কেটের নামে বরাদ্দকৃত দোকান মালিকদের কাছ থেকে জামানত বাবদ আদায়কৃত কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে চারঘাট পৌরসভা কর্র্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। চারঘাট পৌর মেয়র একরামুল হক গত ৫ আগস্ট থেকে আত্মগোপনে থাকায় পৌরসভার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা বাচ্চুর দাবি মেয়র ও নির্বাহী প্রকৌশলী ছাড়া কেউ জানেন না জামানতের টাকার হদিশ। তবে বরাদ্দকৃত দোকান মালিকদের দাবি পৌরসভার মেয়র একরামুল ছাড়াও অন্যরা আত্মসাত করার পায়তারা করছেন।

এ দিকে দোকানঘর বরাদ্দে লিখিত চুক্তিপত্রে উল্লেখ নেই জামানতের টাকার। ফলে বেকায়দায় পড়েছেন বরাদ্দকৃত দোকান মালিকরা। আবার বরাদ্দকৃত ব্যক্তির নাম তালিকায় থাকলেও সুরাইয়া নামে দোকান বরাদ্দ দেয়া হয়নি।

পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে নগর পরিচালন ও অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ২০২০ সালের ডিসেম্বরে চারঘাট পৌর বাজারে ২ কোটি ৭৪ লাখ টাকায় এবং সরদহ বাজারে ২ কোটি ৫০ লাখ টাকায় ১১৫টি দোকানঘর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এরপর ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসের মাঝামাজি সময়ে দুটি কিচেন মার্কেটের ব্যবসায়ীদের কাছে ১০৬টি দোকান বরাদ্দ দেওয়া হয়। দোকানপ্রতি ৩০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা করে ১০৬ টি দোকানের বিপরীতে জামানত বাবদ মোট ৮৬ লাখ টাকা।

আদায়কৃ টাকা দোকানঘর নির্মাণ কাজে ব্যবহার করা হয়েছে বলে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ দাবি করলেও বরাদ্দকৃত দোকানঘর মালিকদের দাবি পজিশন অনুযায়ী কারো কাছ থেকে ২লাখ টাকা, আবার কারো কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা আদায় করা হয়েছে। এছাড়াও আদায় করা হয়েছে ৫ লাখ টাকা। দোকানঘর ছাড়াও সবজি বিক্রেতা ও মাছ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে আদায় করা হয়েছে ৩০/৩৫ হাজার টাকা। চারঘাট ও সারদা দুটি কিচেন মার্কেট থেকে ১০৬ টি দোকানের বিপরীতে এভাবে আদায় করা হয়েছে কয়েক কোটি টাকা। যার কোন হদিশ মিলছে না পৌরসভার হিসেবরক্ষণ কর্মকর্তার দপ্তরে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, দুটি কিচেন মার্কেটের ১০৬ টি দোকানঘর চুক্তিপত্রের মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের কাছে বরাদ্দ দেয় পৌরসভা কর্র্তৃপক্ষ। চুক্তিপত্রে মেয়াদ তিন বছর উল্লেখ থাকলেও জামানত বাবদ আদায়কৃত টাকার কথা উল্লেখ করা হয়নি চুক্তিপত্রে। এসব আদায়কৃত জামানতের টাকা পৌরসভার মেয়র একরামুল হক পৌরসভার হিসাব কর্মকর্তার সহযোগিতায় আত্মসাত করেছেন বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের।

এ বিষয়ে চারঘাট পৌরসভার হিসাব কর্মকর্তা এমএস আসাদ উজ জামান সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ কা হলে তিনি বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। দোকানঘর বরাদ্দের জন্য একটি কমিটি করা হয়। এছাড়া এ বিষয়ে একটি অ্যাকাউন্ট খোলা হয়। জামানতের টাকা মেয়র ও কমিটি জানে। টাকা আত্মসাতের সঙ্গে তিনি জড়িত নন বলে দাবি করেন হিসেবরক্ষণ কর্মকর্তা।

পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, ১০৬টি দোকানের বিপরীতে জামানত বাবদ ৮৫ লাখ টাকা আদায় করা হয়েছিল। আদায়কৃত টাকা মার্কেট নির্মাণে খরচ করা হয়েছে। টাকা আত্মসাতের বিষয়টি তার জানা নেই বলে দাবি নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিমের।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ