চৈত্রের খরতাপে বিপর্যস্ত রাজশাহীর জনজীবন II মেঘের সঙ্গে বজ্রপাতের পূর্বাভাস

আপডেট: এপ্রিল ১৬, ২০২৪, ১১:০৮ অপরাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক:


চৈত্রের খরতাপে পুড়ছে রাজশাহী। উত্তপ্ত আবহওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। মানুষের পাশাপাশি পশু-পাখিরাও হাঁসফাঁস করছে। ঘরে-বাইরে কোথাও স্বস্তি নেই। প্রখর রোদে পথ-ঘাট-মাঠ সবকিছুই উত্তপ্ত। একটু শীতল প্রশান্তির জন্য শিশু-কিশোররা পুকুর, নদী-নালার পানিতে নেমে দাপাদাপি করছে। পথচারীরা টিউবয়েলের পানিতে মুখ ভিজিয়ে উত্তপ্ত আবহাওয়া থেকে বাঁচার চেষ্টা করছে। সেখানেও নেই স্বস্তি! এমন আবহওয়া জনস্বাস্থ্যের উপরেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

গরমের এ খতিয়ানে কাহিল হয়ে পড়েছেন পদ্মাপাড়ের মানুষ। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন বেশি। উষ্ণ আবহাওয়ায় স্বাভাবিক জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠেছে। সকাল থেকে দুপুর গড়াতেই বাতাসের আর্দ্রতা কমে আসছে। এতে শ্রমজীবী মানুষতো বটেই গাছের ছায়ায় বসে থাকা মানুষের শরীর দিয়েও ঘাম ঝরছে। আর ওপর গরম বাতাস শরীরে বিধছে আগুনের হলকার মতই।

মঙ্গলবার দুপুর ৩ টায় সর্বোচ্চ ৩৯ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। বেলা ১১টা গড়াতেই রাস্তা-ঘাট জনশূন্য হয়ে পড়ে। কিন্তু আগুনঝরা আবহাওয়ায় স্বস্তি মিলছে না ঘরেও। এদিন দুপুরে কয়েক মিনিটের জন্য ঝিরঝির বৃষ্টির দেখা মিলে। কিন্তু কিছুক্ষণ পরই আবারও প্রখর রোদ দেখা যায়। এতে গরমের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। ভোগান্তিতে থাকা মানুষ প্রশান্তির বৃষ্টির জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করছেন।

নগরীর অটোরিকশা চালক সুমন আলী বলেন, রাজশাহীতে দুই শিফটে লাল-সবুজ গাড়ি চলে। সকালের শিফটে প্রচুর গরম পড়ে। কিন্তু আমার এখন সকালের শিফটে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাপদাহ বাড়ে। কষ্টও বাড়ে। যতই রোদ হোক না কেন অটোরিকশা চালাতেই হবে। তবে অসহ্য কষ্ট হচ্ছে।

এই বিপর্যস্ত জনজীবনের মধ্যেও স্বস্তির বার্তা নেই আবহওয়া অফিসের কাছে। রাজশাহী আবহওয়া অফিসের তথ্যমতে, মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সন্ধ্যা ৬ টায় বাতাসের আদ্রর্তা ছিলো ৪৭ শতাংশ। এবং সকাল ৬ টায় আদ্রর্তা ছিলো ৮৯ শতাংশ।

মার্চের শেষের দিকেও রাজশাহীতে এমন আবহাওয়া ছিল না। ওই সময় রাতের দিকে শীত অনুভব হত। তাপমাত্রা উঠানামা করত ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। তবে এপ্রিলের পথম সপ্তাহ থেকেই তাপমাত্রা বাড়তির দিকে।

রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক এসএম গাউসুজ্জামান বলেন, আপাতত রাজশাহীতে বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। তবে মেঘের সঙ্গে বজ্রপাত হতে পারে।
এদিকে, হঠাৎ পরিবর্তিত এই অবহওয়ায় অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। হাসপাতালে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও বেড়েছে বলে জানা গেছে। আর এ সময় সর্তক থাকার আহ্বান জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল’র মেডিসিন বিভাগ’র সাবেক-বিভাগীয় প্রধান ডা. খলিলুর রহমান বলেন, গত কয়েক দিন থেকে হঠাৎ করে আবারও তাপমাত্রা বাড়ায় ডায়রিয়া, জ্বর, সর্দি-কাশিসহ বিভিন্ন উপসর্গে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এসব রোগে বৃদ্ধ-বৃদ্ধা ও শিশুরাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। পাশাপাশি এ তীব্র গরমে উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ও হৃদরোগে আক্রান্তদের দুর্ভোগও বেড়েছে। এ সময় সতর্ক থাকতে হবে। পর্যন্ত বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ