ছাত্র আন্দোলনের নেপথ্যে কারা? রাজনীতিই মুখ্য হয়ে উঠেছে

আপডেট: আগস্ট ৩, ২০২৪, ১২:৫৯ পূর্বাহ্ণ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৯ দফাতেও নেই যে সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। কিন্তু মাঠের আন্দোলনে পদত্যাগের বিষয়টি মূল দাবিতে চলে এসেছে। বিভিন্ন সংগঠন এমন কী ব্যক্তি পর্যায়ে কেউ কেউ সরকারের পদত্যাগ দাবি জানাচ্ছে। আরো একটি দিক বিশেষ বিবেচ্য যে, কোটবিরোধী আন্দোলনে হত্যার বিষয়গুলো স্বাধীন বিচারের দাবি আসছে কিন্তু ভয়ঙ্কর তা-বের বিষয়গুলো ছাত্রদের নামে যারা সংঘটিত করেছেন তার বিচারের দাবি করছেন না এই আন্তোলনকারিরা। কীভাবে গানপাউডার দিয়ে সরকারি স্থাপনা পোড়ানো হয়েছে, কী ভাবে পুলিশ সদস্যকে হত্যা তরে টানিয়ে রাখা হয়েছে, কীভাবে নারী সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করা হয়েছে, কীভাবে মসজিদের মাইক ব্যবহার করে ভূযা মৃত্যু সংবাদ ছড়িয়ে সন্ত্রাসী কর্মকা-কে ত্বরান্বিত করা হয়েছে-এ সবের বিচারও তো দেশের মানুষ চায়। সমপাতিকভাবে সব ঘটনারই পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত হওয়া দরকার এবং সন্ত্রাস-তা-বের সাথে যে বা যারাই দায়ি তাদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু আন্দোলনের চরিত্র-বৈশিষ্ট্যের মধ্যে খন্ডাশ স্বার্থ নিয়েই দাবি উত্থাপন হচ্ছে। তাতে ঘটনার সামগ্রিক চরিত্র-বৈাশষ্ট্য ফুটে উঠছে না। এটা যে উদ্দেশ্য প্রণোদিত সেটা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। ছাত্র আন্দোলন কোনো রাজনৈতিক আন্দোলন না হলেও এর রাজনৈতিক বৈশিষ্ট্য প্রকট হয়েছে। আন্দোলনে রাজনীতিটাই খুব বেশি করে সামনে চলে এসেছে।
কোটাবিরোধী আন্দোলনকালে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায় এবং সরকার কর্তৃক কালবিলম্ব না করে প্রজ্ঞাপন জারি আন্দোলনের জয়ই নিশ্চিত হয়েছে। তারপরও আন্দোলন চলছে কেন? এর যৌক্তিকতা খুঁজে পাওয়া কঠিন কোনো বিষয় নয়। যৌক্তিক দাবি নিয়ে যে ছাত্ররা আন্দোলন করেছেন, এটা নিশ্চিতভাবেই বলা যায় যে, তারা কোনো ধরনের সন্ত্রাস-তান্ডব চালায় নি কিংবা প্রশ্রয় দেয়নি। নিশ্চয় তারা গানপাউডার দিয়ে সরকারি স্থাপনা ধ্বংস করবে না, পুলিশ সদস্যকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখবে না কিংবা মসজিদের মাইকের দখল নিয়ে গুজব ছড়িয়ে সন্ত্রাসে উস্কানি দিবে না। এটাই যদি সত্য হয়- তা হলে অবশ্যই ছাত্রদের আন্দোলনের মধ্যে জঙ্গি-সন্ত্রাসী চক্র তৎপর ছিল তারাই সার্বিক তান্ডবে নেতৃত্ব দিয়েছে। এই জঙ্গি সন্ত্রাসীদের বিচার ও শাস্তির দাবিও আসতে হবে।
সরকার সময় মেনে কতটুকু দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম হয়েছে সেটা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হতেই পারে। কিন্তু দেশের প্রধানমন্ত্রীও বলছেন সুষ্ঠু তদন্তের কথা। ইতোমধ্যেই বিচার বিভাগীয় তদন্ত কাজে জাতিসংঘের প্রযুক্তিগত সহায়তা চাওয়া হয়েছে। তদন্তে অন্য দেশেরও সহায়তার কথা বলা হয়েছে। বর্তমানে ছাত্র আন্দোলনের দাবিও সেটি। তা হলে আন্দোলনের নামে সরকার পতনের সম্পর্ক কেন? এটা তো রাজনৈতিক দাবি, রাজনৈতিক দলগুলো করবে। কিন্তু মাঠে স্বনির্ভর আন্দোলনে কোনো রাজনৈতিক দলই নেই। তা হলে ছাত্রদেরকে কেন সরকারের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেয়া হচ্ছে। এই প্রবণতা আখেরে কারো জন্যই শুভফল বয়ে আনবে না। বিষয়টি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদেরও বুঝতে হবে। আত্মঘাতি তৎপরতায় অন্যের ঘরই শুধু নয়- নিজ ঘরেরও সর্বনাশ হবে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

Exit mobile version