ছাদ একাংশের ধস ও শ্রমিক আহতের দায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের: রাবির ৭ ছাত্রসংগঠন

আপডেট: জানুয়ারি ৩১, ২০২৪, ১০:৩৫ অপরাহ্ণ


রাবি প্রতিবেদক:রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতটি ছাত্রসংগঠন দাবি করেছে, নির্মাণাধীন শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান হলের একাংশের ধস ও শ্রমিক আহতের ঘটনার দায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের। বুধবার (৩১ জানুয়ারি) সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমন দাবি করা হয়।

সংগঠন সাতটি হলো- রাবি শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, নাগরিক ছাত্র ঐক্য, বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলন, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ এবং ছাত্র গণমঞ্চ।
বিভিন্ন সময়ে ভবন দুটির নির্মানকাজের সময় দুই শ্রমিক ও এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর বিষয় উল্লেখ করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভবনের একাংশ ধস ও শ্রমিক আহতের এই ঘটনা কোনো অপ্রত্যাশিত বিষয় নয়। আগের তিন ঘটনায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে দুই শ্রমিকের মৃত্যু এবং নির্মাণসামগ্রী বহনকারী ট্রাকের চাপায় শিক্ষার্থীর মৃত্যুর মতোন ধারাবাহিক ঘটনা ভবিষ্যতে আরো বড় ক্ষয়ক্ষতির আভাসই দিয়ে আসছিলো।

অথচ লাগাতার হত্যাকাণ্ডের পরেও প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার দায়িত্বে অবহেলা করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং ভবন গুলোর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘মজিদ সন্স কনস্ট্রাকশন লিমিটেড’ এর বেপরোয়া দুর্নীতি, অবহেলা ও অব্যবস্থাপনায় ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে একটি ‘হত্যা কাঠামো’ সৃষ্টি হয়েছে। যা দ্বারা যেকেউ যেকোনো মুহুর্তে আক্রান্ত হতে পারে।

নির্মাণাধীন ভবনটির কাঠামোটি নিরাপদ নয় উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভবনটির ধসে পড়া অংশে একটি পিলার হেলে গিয়েছে। এই ঘটনায় ভবনের বাকি কাঠামোর স্থায়ীত্ব, রড সহ অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রীর উপযুক্ততা নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে। অনিরাপদ কাঠামো ভবিষ্যতে আরো ভয়াবহ দুর্ঘটনা বয়ে আনবে। তাই নতুন করে কাজ শুরু করার আগে, অবিলম্বে নিরপেক্ষ প্রকৌশল কর্তৃপক্ষ দ্বারা ভবনটির মান যাচাই করতে হবে।

শিক্ষার্থীদের সচেতন ও ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কৃষক, শ্রমিক ও গণমানুষের অর্থায়নে পরিচালিত প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকদের এমন চরম অনিরাপত্তার নজির লজ্জাজনক। এই পরিবেশে শিক্ষার্থীরাও যে নিরাপদ নয়, হিমেল হত্যাকান্ড তার প্রমাণ। এমন অনিরাপদ পরিবেশ দীর্ঘায়িত হতে থাকলে আরো ভয়াবহ হাতাহতের মুখোমুখি হবো আমরা। তাই নিজেদের এবং সকলের নিরাপত্তার স্বার্থে এই ঘটনার বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে।

অতীতের ও আজকের সকল ক্ষয়ক্ষতির দায় নিশ্চিতভাবেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অবিলম্বে মৃত এবং শারীরিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকের পরিবারের জন্যে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ আদায় করে প্রদান করতে হবে। ভবন ধস ও ধারাবাহিক ছাত্র-শ্রমিক হতাহতের ঘটনায় খুনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘মজিদ সন্স কনস্ট্রাকশন লিমিটেড’ এর নামে মামলা এবং শাস্তির মুখোমুখি করতে হবে। ভবনটির নির্মিত কাঠামোর স্থায়ীত্বের ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে, নির্মাণ শ্রমিকদের জন্যে নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করিয়ে, নতুন ঠিকাদার দ্বারা ভবনের কাজ সম্পন্ন করাতে হবে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ