নিজস্ব প্রতিবেদক:
ছুটির দিনে রাজশাহীতে জমেছে রথের মেলা। অন্যদিনের তুলনায় সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার (১২ জুলাই) মেলায় দর্শনার্থীদের ভীড় লক্ষ্য করা গেছে। এদিন বেচাকেনা ভালো হয়েছে বলে ব্যবসায়ী জানায়।
বিকেলে নগরীর উৎসব সিনেমা হলের মোড় থেকে সাগারপাড়া বটতলা পর্যন্ত রথের মেলার অস্থায়ী স্টলগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় ছিল চোখের পড়ার মতো। মেলায় সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে খাদ্য সামগ্রী। পরবর্তিতে কাঠের তৈরি আসবাবপত্র ছাড়াও মটির তৈরি বিভিন্ন তৈজসপত্র। এছাড়া বিক্রি হচ্ছে শিশুদের বিভিন্ন খেলনাও।
তবে ক্রেতাদের অভিযোগ পণ্যের দাম বেশি রাখা হচ্ছে। আর ব্যবসয়ীরা বলছেন, সবপণ্যের দাম বেড়েছে। তাদের কিছু করার নেই। সেই হিসেবে রথের মেলার পণের দাম কমই আছে। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, নগরীর উৎসব হলের মোড় থেকে সাগরপাড়া বটতলা মোড় পর্যন্ত আধা কিলোমিটার সড়কজুড়ে বসেছে রথের মেলা। রাস্তার দু’পাশে বসেছে হরেক পণ্যের দোকান। এরমধ্যে রয়েছে- মাটির তৈজসপত্র, মিষ্টি, খাবারের দোকান, কাঠের ফার্নিচার, কাপড়, স্টিলের তৈজসপত্র, মাটি ও স্টিলের হাড়ি-পাতিল নিয়ে পসরা সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। মেলায় প্রায় ১ হাজার দোকানি বিভিন্ন জেলা থেকে এসে এখানে পসরা বসিয়েছেন।
দোকানিদের অধিকাংশই খুলনা, নওগাঁ, বগুড়া, পাবনা, নাটোর, সিরাজগঞ্জ, মাদারিপুর থেকে এসেছেন। উল্টোরথ পর্যন্ত চলবে এই মেলা। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন- প্রথম দুই-তিন দিন জমজমাট হয় রথমেলা।
রথের মেলায় কাঠের বিভিন্ন আসবাবপত্র বিক্রি হচ্ছে। এগুলোর মধ্যে খাট, সোফা, ওয়াড্রাপ, চেয়ার-টেবিল, শোকেস, আলমারি ইত্যাদি। মেলায় খাট বিক্রেতা শাহিন আলী জানান, তার দোকানে প্রকারভেদে সাড়ে ৮ থেকে শুরু করে ২৮ হাজার টাকা দাম পর্যন্ত খাট রয়েছে। তবে বেশি বিক্রি হচ্ছে ১২ থেকে ১৬ হাজারের মধ্যের খাট। এছাড়া তার দোকানে সোফা সেট রয়েছে। সোফা সেটগুলো বিক্রি হচ্ছে ১৬ থেকে ৩৫ হাজারের মধ্যে।
কাঠের তৈরি বঙ্খাট ক্রেতা নাসরিন খাতুন বলেন, যে খাটগুলো ভালো লাগছে সেগুলোর দাম বেশি বলছে বিক্রেতারা। বিক্রেতারা যে দাম চাচ্ছে, তাতে করে বাড়িতে মিস্ত্রি দিয়ে তৈরি করলে একই খরচ হবে। তবে এখানে কি কাঠের তৈরি সেটা বোঝা যাচ্ছে না। কিন্তু বাড়িতে তৈরি করলে কাঠটা ভালো পাওয়া যাবে। মানুষ রথের মেলা থেকে জিনিস কেনে অল্প দামে পাওয়ার আাশায়। কিন্তু এখানেই দাম বেশি চাচ্ছে বিক্রেতারা। দরদাম একটি বঙ্খাট কেনা হয়েছে ২১ হাজার ৫০০ টাকায়।
১৩ হাজার টাকায় সাইদুল ইসলাম কিনেছেন একটি সোফা সেট। তিনি বলেন, রথের মেলায় তুলনামূলক কম দামে পাওয়া যায় বিভিন্ন জিনিসপত্র। তবে এবার রথের মেলায় জিনিপত্রের দাম বেশি চাচ্ছে বিক্রেতারা। উদাহারণ হিসেবে তিনি বলেন, গত বছর যে জিনিস তিন হাজার টাকায় কিনতে পাওয়া গেছে। এবার সেই একই জিনিস সাড়ে ৪ হাজার টাকা দাম বলছে। তিন হাজার বা সাড়ে তিন হাজার টাকা দাম বললে তারা দিতে চাচ্ছে না।
রথের মেলায় দড়ির খাট বিক্রেতা রিয়াদ আহম্মেদ নাইম বলেন, গত কয়েকদিনের তুলনায় শুক্রবার বিকেল থেকে বেশি বিক্রি হয়েছে তার দড়ির খাট। এছাড়া সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৫টি দড়ির ঘাট বিক্রি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিক্রি হয়েছিল ১৭টি। এসব দড়ির খাট বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার থেকে ২৫০০ টাকায়। এছাড়া এই দোকানে বিক্রি হচ্ছে চেয়ার ও টেবিল। তবে বৃহস্পতিবারের বৃষ্টিতে অনেক পণ্য ভিজে গেছে। প্রত্যাশা আরও বেশি ছিল। তবে প্রতিদিন বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩২ হাজার টাকা।
দড়ির খাট ক্রেতা সুমাইয়া ইসলাম বলেন, পাটের দড়ির খাট বেশি দিন ব্যবহার করা যায়। কিন্তু লাইলনের রশি ও প্লাস্টিকের রশি দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। আবার এই খাটের তুলানায় পাটের দড়ির খাট ৫০০ টাকা বেশি দাম।