বৃহস্পতিবার, ২২ মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৮ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ।
নজরুল ইসলাম বাচ্চু, চারঘাট:
বয়সের ভারে নুইয়ে পড়েছেন সোলেমান আলী মণ্ডল। হাঁটাচলাও করতে পারেন না। চোখেও দেখেন না তিনি। তবুও ভোটের আমেজে ঘরে বসে থাকেননি তিনি। তাই ছেলের ঘাড়ে ভর করে এসেছেন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চতুর্থ ধাপের চারঘাট উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট দিতে।
বুধবার (৫ জুন) রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার চারঘাট সদর ইউনিয়নের বড়বড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ দৃশ্যের দেখা মেলে। প্রায় ১০০ বছর বয়সী অন্ধ সোলেমান আলী মণ্ডল ছেলের ঘাড়ে ভর করে এসে ছেলের সাহায্যে ভোট দেন। তার বাড়ি সদর ইউনিয়নের বড়বড়িয়া বাথানপাড়া গ্রামে। তার বাবার নাম মৃত উদ্দত আলী মন্ডল।
ভোট কেন্দ্রে কথা হয় সোলেমান আলী মণ্ডলের সাথে। তিনি বলেন, ভোটার হওয়ার পর থেকে একবারও ভোট দেওয়া বাদ যায়নি আমার। বয়স হয়েছে, শারীরিক নানা জটিলতায় বিছানা থেকে উঠতে পারি না। চোখেও দেখিনা প্রায় ২০ বছর ধরে। তাই শেষ বয়সেও এসে ভোট না দিয়ে থাকতে পারিনি। তাই ছেলের ঘাড়ে ভর করে ভোট দিতে এলাম। ভোট দিতে পেরে আমি আনন্দিত। আর কোন দিন ভোট দিতে পারবো কিনা জানি না। তাই পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়েছি।
কারও চাপে ভোট দিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে বৃদ্ধ সোলেমান বলেন, ‘আরে বাপু কে আমারে চাপ দেবে। আমি নিজেই জানি আর বুঝি কাকে ভোট দিতে হবে। আমাকে কেউ চাপ দেইনি। তবে অনেকেই ভোট চেয়েছেন তার কাছে।
সোলেমান আলী মণ্ডল বলেন, প্রায় ২০ বছর আগে চোখে একটি পোকা পড়ার মত মনে হলো। এরপর ধীরে ধীরে আমার চোখ অন্ধ হয়ে গেলো। আমি আর কিছুই দেখতে পাইনি। চোখে না দেখতে পেলেও সন্তানসহ আত্মীয় স্বজনদের চোখে আমি সব দেখতে পাই। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজও পড়ি
তিনি আরও বলেন, জীবনে আর কোন নির্বাচনে ভোট দিতে পারবো কিনা জানিনা। তবে আমি ভোট দিতে পেরে চরম আনন্দিত।