শুক্রবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৪ আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
নিজস্ব প্রতিবেদক
ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ বলেন, জনগণের কাছে থেকে ভ্যাট ও ট্যাক্স নিয়ে দেশের উন্নয়ন কাজ করা হয়। যেমনটা পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব ব্যাংককে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে কারও সহায়তা ব্যতিত নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ করছেন এ পদ্মা সেতু। পদ্মা সেতু যে টাকা দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে, সেটা বাংলাদেশের জনগণের প্রদত্ত ভ্যাট আর ট্যাক্সের টাকা। অর্থাৎ সেটা আপনাদেরই টাকা তাই নির্মাণ হয়ে গেলে সেতু দিয়ে যাওয়ার সময় আপনার গর্ব করে বলতে পারবেন এটা আমাদের টাকায় নির্মিত।
গতকাল শনিবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ডা. কাইছার রহমান চৌধুরী অডিটোরিয়ামে জাতীয় ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহ ২০১৬ উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সর্বোচ্চ মূসক পরিশোধকারী প্রতিষ্ঠানসমূহকে সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব বলেন ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ।
সভায় সভাপতিত্ব করেন, রাজশাহী কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের কমিশনার মোয়াজ্জেম হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য ড. মাহবুবুর রহমান, রাজশাহী কর অঞ্চলের কর কমিশনার দবির উদ্দিন, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মনির হোসেন, রাজশাহী রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মাসুদুর রহমান ভূইয়া, রাজশাহী মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার সরদার তমিজউদ্দিন আহম্মেদ, রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মনিরুজ্জামান। স্বাগত বক্তব দেন, রাজশাহী কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের অতিরিক্ত কমিশনার একেএম মাহবুবুর রহমান।
ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ বলেন, অর্থনীতিকে শক্ত ভিত্তির উপর দাঁড় করাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তাই তিনি দেশের অর্থনীতিকে আরও সুদৃঢ় করতে সংশ্লিষ্ট সকলকে সদিচ্ছা, সেবার মনোভাব এবং দেশপ্রেমবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে কাজ চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৩ লক্ষ ৪০ হাজার কোটি টাকা সরকারের রাজস্ব আদায় কার্যক্রমকে সফল করার জন্য সকলকে সর্বোচ্চ ন্যায় নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে কাজ করার নির্দেশ প্রদান করে ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ বলেন, প্রথমবারের মত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহের উদ্দেশে ১৯৭২ সালে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড গঠন করেন। বর্তমানে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড মোট অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয়ের প্রায় ৮৬ ভাগ আদায় করে থাকে। ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ বলেন, বঙ্গবন্ধুর সরকার প্রথম ৭৯০ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেন। এ বাজেটের আকার এখন ৩৪০ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। মন্ত্রী আরও বলেন, বিভিন্ন সময়ে দেশে অবৈধ, সামরিক ও অগণতান্ত্রিক সরকারের অধীনে দেশের অর্থনীতি ও প্রবৃদ্ধি অর্জন কাক্সিক্ষত মাত্রায় অর্জিত হয়নি। তবে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশকে পরনির্ভরশীলতার গন্ডি থেকে বের করে স্বনির্ভরতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
মন্ত্রী ভ্যাট বিষয়ে করদাতাদের সচেতনতা বৃদ্ধি এবং কর্মকর্তাদের সেবার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ প্রদান করে ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ বলেন, ভ্যাট ভোক্তা বা জনগণ দেয়। ব্যবসায়ী তার ব্যবসার লভ্যাংশ থেকে দেয় আয়কর।
সরকারি কোষাগারে জমা হওয়া সকল অর্থ জনগণ বহন করে উল্লেখ করে জনগণের এ অর্থ সঠিকভাবে ব্যবহার করার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে নির্দেশ দেন তিনি। এসময় ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ আরো বলেন, ভ্যাট আহরণের সময় ব্যবসায়ী বা জনগণ যাতে কোন অনাকাক্সিক্ষত ভোগান্তির মধ্যে না পড়ে সে বিষয়ে ভ্যাট প্রশাসনকে সতর্ক থাকতে হবে। তিনি বলেন, করদাতারা দেশের সম্মানিত নাগরিক। তাদের পুরস্কার দিয়ে সম্মানিত করছে সরকার।
বক্তব্য শেষে মন্ত্রী তিনটি খাতে সর্বোচ্চ মূসক পরিশোধকারী ১৮টি প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননাপত্র ও ক্রেস্ট প্রদান করেন। সম্মাননা প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলো হলো, উৎপাদন খাতে – রাজশাহীর এসআর ইন্ডাস্ট্রি লি., বগুড়ার আজাদ পাল্প অ্যান্ড পেপার মিলস্, চাপাইনবাবগঞ্জ ভোলাহাটের আকিজ এগ্রো প্রসেসিং ফ্যাক্টরি, নাটোরের নাটোর এগ্রো লি. ও পাবনার স্কায়ার ফার্মাসিউজিক্যালস লি.। ব্যবস্য খাতে – রাজশাহীর সাহেববাজারের ওয়াল্টন প্লাজা, বগুড়ার ঝাউতলার ওয়াল্টন প্লাজা, চাঁপাইনবাবগঞ্জের বড় ইন্দিরা মোড়ের ওয়াল্টন প্লাজা, নাটোরের কানইখালীর ওয়াল্টন প্লাজা, জয়পুরহাটের আরাফাত সুপার মার্কেটের আরাফাত ট্রেডিং, পাবনা গোপালপুরের ওয়াল্টন প্লাজা, এবং সিরাজগঞ্জের ওয়াল্টন প্লাজা। সেবা খাতে – রাজশাহীর রাজশাহী মিষ্টি বাড়ি, বগুড়ার এশিয়া সুইটমিট, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নবাব মিষ্টান্ন ভা-ার, নাটোরের নাটোর টাউন প্রেস, জয়পুরহাটের হোটেল স্বাদ (আবসিক) এবং পাবনার ইয়াকুব অটো সার্ভিস সেন্টার।
অনুষ্ঠানের শুরুতে মন্ত্রী বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে জাতীয় ভ্যাট দিবস ও সপ্তাহ ২০১৬’র উদ্বোধন করেন। মন্ত্রীর নেতৃত্বে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।