জনসভায় এসে রাজশাহীর সৌন্দর্যে মুগ্ধ হলেন উপস্থিত জনতা

আপডেট: জানুয়ারি ৩০, ২০২৩, ১২:৩৭ পূর্বাহ্ণ

ওয়াসিফ রিয়াদ, রাবি:


বিশুদ্ধ বাতাসের নগরী খ্যাত রাজশাহীর সৌন্দর্য উপভোগ করে মুগ্ধ হলেন আওয়ামীলীগের জনসভায় অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন জেলা থেকে আগত উৎসুক মানুষ। রাজশাহীতে জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুপুর ৩: ৪৮টায় বক্তব্য রাখেন। তবে, জনসভা শুরুর আগে সকাল থেকেই বিভিন্ন জেলা থেকে আসতে শুরু করেন উৎসুক জনতা। অতিরিক্ত সময় কাটাতে জনসভা শুরুর আগে এবং পরে রাজশাহীর পর্যটন এলাকায় ঘোরেন তারা। রোববার (২৯ জানুয়ারি) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত নগরীর বিভিন্ন পর্যটক এলাকা ঘুরে অংশগ্রহণকারীদের এই উপভোগ করার এই চিত্র দেখা গেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, রোববার সকালেই দূর দূরান্ত থেকে আগত নেতাকর্মীদের ঢল নামে পুরো নগরীজুড়ে। বাস, পিকআপ ভ্যান, সিএনজি এবং অটোরিকশা থেকে শুরু করে পায়ে হেঁটেও নেতাকর্মীদের আসতে দেখা যায়। বিভিন্ন নেতা ও সংগঠনের পক্ষে রঙিন টি-শার্ট ও ক্যাপ পরিহিত নেতাকর্মীরা একের পর এক মিছিল নিয়ে নগরীর তালাইমারী, রেলগেট এবং লক্ষ্মীপুর মোড়সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে কড়া নিরাপত্তায় ঐতিহাসিক মাদ্রাসামাঠ অভিমুখে রওনা দেন। তবে, প্রধানমন্ত্রী জনসভায় আসার আগে অতিরিক্ত সময় কাটাতে নগরীর পদ্মা গার্ডেন, ফুলতলা, টি-বাঁধ, আই-বাঁধসহ রাজশাহীতে তৈরি নয়নাভিরাম রাস্তাঘাটে ঘুরছেন তাঁরা। বিভিন্ন ভঙ্গিতে ছবি তুলতেও দেখা যায়।

জনসভায় সিরাজগঞ্জ থেকে আসা আব্দুল জলিল জানান, দীর্ঘ দিন পর তার রাজশাহী আসার সুযোগ হয়েছে। সমাবেশ শুরুর অনেক আগেই তিনি এসেছেন। তিনি বলেন, রাজশাহীতে পদ্মানদী এবং সুন্দর রাস্তাঘাট দেখতে এসেছেন। এর আগে চার বছর আগে একটি প্রয়োজনে এসে দ্রুত ফিরতে হয়েছে। তাই রাজশাহীর সৌন্দর্য উপভোগ করার সুযোগ হয়নি। এজন্য আজ জনসভার উছিলায় দ্রুত এসেছেন, যাতে রাজশাহী ঘুরে যেতে পারেন।

পদ্মা গার্ডেনে বসে থাকতে দেখা যায় রাজশাহীর বাঘা থেকে আসা একদল যুবককে। জনসভা শুরুর আগে এখানে এসে সময় কাটাচ্ছেন তারা। শাহিন, রফিক, মজিদ ও স্বপন বলেন, সাধারণত রাজশাহী শহরে কাজ ছাড়া আসা হয়না। অনেক দিন পদ্মা গার্ডেনেও আসেন নি তারা। এই সুযোগে বন্ধুদের সঙ্গে পদ্মা নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে এসেছেন। এর আগে রাজশাহীর চমৎকার রাস্তাঘাটগুলো ঘুরে দেখেছেন।

পরিচ্ছন্ন নগরীতে নয়নাভিরাম রাস্তায় বিভিন্ন ভঙ্গিতে ছবি তুলছেন কয়েকজন। সুমি, মেহজাবিন ও তন্ময় জানান, আমরা বগুড়া থেকে এসেছি। পরে অনেক যানজট হবে তাই সকালেই এসেছি। জনসভা শুরু হওয়ার আগে পদ্মা গার্ডেন ঘুরে দেখেছি। এখন রাস্তায় এসেছি ছবি তুলতে। এখানকার রাস্তাঘাট পরিচ্ছন্ন এবং চমৎকারভাবে তৈরি। আমরা খুব উপভোগ করছি।

রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলা থেকে জনসভায় যোগ দিতে এসেছেন রাকিবুল হাসান সজিব নামের এক কর্মী। তিনি বলেন, রাজশাহীতে এর আগেও বিভিন্ন জনসভায় এসেছি। তবে প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় এই প্রথম আসলাম। এবারের জনসভায় এসে সুন্দর নগরী ঘুরেছি। জনসভা শেষ করেও রাজশাহীর বিভিন্ন পর্যটন এলাকা ঘোরার ইচ্ছে আছে।

শিক্ষা নগরী খ্যাত রাজশাহীকে এখন অনেকভাবে বিশেষায়িত করা হয়। যার মধ্যে রয়েছে- সিল্কের নগরী, আমের নগরী, সবুজের নগরী ও বিশুদ্ধ বাতাসের নগরী। আর অনেকভাবে বিশেষায়িত রাজশাহী মহানগরীর সৌন্দর্য ক্রমশই বাড়ছে। উন্নত সড়ক ও আধুনিক বাতির পর পদ্মাপাড়ের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে এবার গুরুত্ব দিচ্ছেন নগর কর্তৃপক্ষ। কারণ, মহানগরীর অন্যতম পর্যটন এলাকা হচ্ছে পদ্মাপাড়। তাই বিনোদনের অন্যতম এই এলাকাটি আরও আকর্ষণীয় ও দৃষ্টিনন্দন করতে নানাবিধ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে নগর নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ।

এর আগে ২০১৮ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা ময়দানে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ হাসিনা উপস্থিত জনতার কাছে আওয়ামী লীগের জন্য ভোট চান। এ ছাড়াও ২০১৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর রাজশাহীর বাগমারা ও ২০১৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি চারঘাটে আওয়ামী লীগের জনসভায় যোগ দেন তিনি। ২০১৭ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর রাজশাহীর পবায় দলীয় জনসভায় হাজির হয়েছিলেন শেখ হাসিনা।