রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৭ বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ।
নিজস্ব প্রতিবেদক:ইদ আসতে বাকি এখনও প্রায় ১৬ দিন। এর মধ্যে জমে উঠেছে রাজশাহী নগরীর কেনাকাটা। বিপনীবিতান ও মার্কেটগুলোতে বেশ ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ব্যবসায়ী নেতারা আশা করছেন, এবার বেচাবিক্রি ৫০০ কোটি ছাড়িয়ে যাবে। তারা বলছেন, পরপর দুই বছর করোনায় ব্যবসা নেই। তার রেশ কাটেনি গেল দুই বছরেও। এবার আশা করা যায় তা সবকিছু ছাড়িয়ে যাবে।
তবে ক্রেতাদের অভিযোগ, আগের তুলনা এবার প্রতিটা জামা-কাপড়ের দাম বেড়েছে কয়েকগুন। পুরুষদের তুলনা নারী ও শিশুদের পোষাক বেশি বিক্রি হচ্ছে এবার। তাই প্রতিটা কাপড়ের দাম বেশি দিয়ে কিনতে হচ্ছে। নতুন পোশাকের পসরা সাজানো বিক্রেতাদের দাবি, ক্রয়মূল্য বেশি হওয়ায় বিক্রিও করতে হচ্ছে বাড়তি দামে। পাইকারিতে বেশ দামে পোষাক কিনে নিয়ে আসতে হচ্ছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, রাজশাহীর সাহেববাজার, আরডিএ মার্কেট ও গণকপাড়া এখন বেশ সরগরম। রমজানের প্রথম দশদিন পার হওয়ার পরই ভিড় বাড়তে শুরু করেছে বিপণীবিতানগুলোতে। প্রতি বছরের মতো এবারো ভিন্ন ভিন্ন নামের পোশাক এসেছে বাজারে। এগুলোর মধ্যে আলিয়াকাট, আরিগ্রাউন্ড, ইন্ডিয়ান গ্রাউন্ড, নাইরাকাট, সারারা, গাড়ারা ও পাকিস্তানি গাউন বেশি চলছে। এবার বাজারে ক্রেতাদের প্রধান আকর্ষণ নারীদের আলিয়াকাট আর নাইরাকাট জামায়। এছাড়া বাচ্চাদের পোশাক বিশেষ করে বিভিন্ন নকশার পাঞ্জাবিতেও রয়েছে সমান আকর্ষণ।
১২০০ থেকে শুরু করে ১৩ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে এসব পোশাক। নগরীর সাহেববাজারে অবস্থিত আরডিএ মার্কেটে প্রধানত মধ্যম আয়ের মানুষরা বেশি কেনাকাটা করে থাকেন। এবারও এই মার্কেটে বাহারি রঙের পোশাক এসেছে। তবে দাম বেশি বলে অসন্তুষ্টি জানাচ্ছেন ক্রেতারা।
এই বাজারে ঈদের বাজার করতে এসেছে ছোট্ট শিশু মাসুদা। বাবা মমিনুল ইসলামের হাত ধরে এসেছে সে। তারও পছন্দ নাইরাকাট জামা। বাবা মমিনুল ইসলাম বলেন, দাম অনেক বেশি। গতবারে চেয়ে অন্তত দেড় থেকে দুইগুণ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। এখন উৎসব, যত কষ্টই হোক না কেন বাচ্চাদের কিনে তো দিতে হবে। একটা নাইরাকাট জামা কিনেছি ১৮০০ টাকা নিয়েছে। এটা অনেক বেশি।
মাসুদ রানা বলেন, এবার বিশেষ করে চলছে আলিয়াকাট, আরিগ্রাউন্ড, ইন্ডিয়ান গ্রাউন্ড, নাইরা কাট, সারারা, গাড়ারা, পাকিস্তানি গাউন। তবে তরুণীদের বেশি আগ্রহ আলিয়াকাট ও নাইরাকাটে। এগুলো মান ভেদে ১২০০ থেকে ১৫ হাজার টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে নগরীর সব বিপণিবিতান আর বিভিন্ন ব্র্যান্ডের শো-রুমগুলো ঝলমলে আলোতে সাজানো হয়েছে। বিক্রেতারা আশাবাদী, এবারের ঈদবাজার নিয়ে। ফড়িং রাজশাহী শাখার ম্যানেজার এমরান হোসেন বলেন, আমরা ইদ উপলক্ষে বাড়তি গুরুত্ব দিয়েছি।
তিনি বলেন, ইদ আসতে অনেক সময় এখনও বাকি আছে। আমরা আশা করছি অনেক ক্রেতা হবে। তবে এখন পর্যন্ত ক্রেতা আসলেও তেমন ব্যবসা জমে ওঠেনি। আশা করি শেষ দশ দিনে বেশ ভালো জমে উঠবে।
রাজশাহীর আড়ংয়ে শাড়ি কিনতে এসেছেন শাহনাজ পারভীন। তিনি বলেন, রোজার দিনে একটু স্বাচ্ছন্দ্যে কিনতেই আমি সাধারণত এই শো-রুমগুলোতে আসি। তবে এবার ইদের শাড়িগুলোর দাম একটু বেশি। সবমিলিয়ে বেশি দাম হলেও নতুন নতুন ডিজাইনের পোশাক আছে। এতেই খুশি আমরা।
রাজশাহী ব্যবসায়ী সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সেকেন্দোর আলী বলেন, রাজশাহী জেলায় এখনো তেমন কেনাকাটা জমে ওঠেনি। সাধারণত ঈদের শেষ ১০ দিনে বাজার জমে ওঠে। এবারও তাই হবে। আমরা আশা করছি, এবারের ঈদে শুধুমাত্র জামা-কাপড় ৫০০ কোটি টাকার বেচাকেনা হবে।