জমি দখলের মিথ্যা সংবাদ প্রচারের প্রতিবাদে বিএনপি নেতার সংবাদ সম্মেলন

আপডেট: সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৪, ১২:৩৩ অপরাহ্ণ


ডিএম রাশেদ পোরশা (নওগাঁ) :


বিভিন্ন গণমাধ্যমে জমি দখলের মিথ্যা সংবাদ প্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নওগাঁর পোরশা উপজেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি আলহাজ্ব তৌফিকুর রহমান শাহ্ চৌধুরী।

গতকাল বুধবার সকাল ১০টায় পোরশা সদরের নিজ বাসায় সংবাদ সম্মেলন করে প্রকৃত ঘটনা তুলে ধরে বিএনপি নেতা তৌফিকুর রহমান শাহ্ চৌধুরী বলেন, সম্প্রতি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় আমার বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ তুলে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে।

আমাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করে স্বার্থ হাসিলের জন্য উপজেলা বিএনপির একাংশের এক নেতা কতিপয় বর্গাদার কৃষককে দিয়ে থানায় জমি দখলের মিথ্যা অভিযোগ করিয়ে ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশ করিয়েছেন। প্রকাশিত ভিত্তিহীন সংবাদের আমি প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

রাজনৈতিক দলের প্রভাব খাটিয়ে আমি কারও জমি দখল করিনি। বরং গত ১৬ বছরে আমাদের ব্যক্তি মালিকানাধীন ৬৫ বিঘা ও ওয়াকফ এস্টেট করা ৪০০ বিঘা জমি দখল করে নিয়েছে আওয়ামী লীগের লোকজন। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরেও জমিগুলো পুনদখল করিনি আমি। জমি দখলের যে অভিযোগ করা হচ্ছে তার কোনো ভিত্তি নেই।

বিএনপির রাজনীতি করায় একটি মহল আমার ব্যক্তিগত সুনাম ও দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার জন্য মিথ্যা তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জমির দলিলপত্র দেখিয়ে তৌফিকুর রহমান বলেন, আমার বাবা আব্দুল ওহাব শাহ্ চৌধুরী, চাচা কাইয়ুম শাহ্ চৌধুরী ও আমিনুল হক শাহ্ এবং চাচাতো ভাই হাছান শাহ্ চৌধুরী দলিল অনুযায়ী ওয়াকফ সম্পত্তির বৈধ মোতাওয়াল্লী ছিলেন। দলিল অনুযায়ী যুগ যুগ ধরে আমার বাব-চাচা ও তাঁদের পূর্বপুরুষেরা ওয়াকফ করে যাওয়া সম্পত্তি ভোগ-দখল করে আসছিলেন।

কিন্তু বিগত সরকারের সময়ে আমার চাচাতো ভাই হাছান শাহ্ চৌধুরীর ছেলে সাব্বির হামজা শাহ্ চৌধুরী ওয়াকফ করা সম্পত্তির একমাত্র মোতাওয়াল্লী হিসেবে দাবি করে আমাদের ভাগের ওয়াকফ সম্পদ ও ব্যক্তি মালিকানাধীন সম্পদ দখল করে নেয়। সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সাব্বির হামজা চৌধুরী ৪০০ বিঘা ওয়াকফ সম্পত্তি ও আমাদের ব্যক্তি মালিকানাধীন ৬৫ বিঘা সম্পত্তি অবৈধভাবে দখল করে নেন।

গত ৫ আগস্ট ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের সহচর সাব্বির হামজা চৌধুরী ও তাঁর সহচররা এলাকাছাড়া। দখল করা আবাদি জমিতে সাব্বির হামজার বর্গাদাররা রোপা আমন ধান রোপন করেছেন। ওই সব জমিতে আবাদ করা ধান গাছ অক্ষত অবস্থায় রয়েছে। জমি পুনদখলের জন্য কোনো বর্গাদারকে আমি বা আমার লোকজন কোনো প্রকার হুমকি-ধামকি দেয়নি। জমি দখলের যে অভিযোগ করা হচ্ছে তার কোনো ভিত্তিই নেই।

তিনি আরও বলেন, আমার বাবা আব্দুল ওহাব শাহ্ চৌধুরী পোরশা উপজেলা বিএনপির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। দীর্ঘ সময় ধরে তিনি উপজেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বাবার মৃত্যুর পর স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীদের নিয়ে আমি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশিত সকল কর্মসূচি পালন করেছি।

জেল-জুলুমের হুমকি মাথায় নিয়ে গত ১৬ বছর ধরে পোরশায় বিএনপির রাজনীতিতে সরব ছিলাম। এজন্য অনেক অন্যায়-অত্যাচারের শীকার হয়েছি। ১৬ বছরে আমার বিরুদ্ধে ৫২টি মিথ্যা হয়রানিমূলক মামলা হয়েছে। এরপরেও আওয়ামী লীগের সঙ্গে কোনো প্রকার আপোস করিনি।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর হঠাৎ করে কিছু সুবিধাভোগী মানুষ বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। উপজেলা বিএনপির সভাপতি দাবি করা বিএনপির একাংশের এক নেতা আমার সুনাম ক্ষুন্ন করার জন্য ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।

সেই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে জমি দখলের মিথ্যা অভিযোগ করে পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করিয়েছে। সংবাদ প্রকাশের পর বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ওবায়দুর রহমান চন্দন সরেজমিনে এসে অভিযোগের কোনো সত্যতা পাননি।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আজাহার আলী, উপজেলা বিএনপির (একাংশ) জ্যৈষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক এহিয়া শাহ্, পোরশা উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক ইকবাল হাসান শাহ্ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। #

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ