বৃহস্পতিবার, ৮ জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ২৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
সোনার দেশ ডেস্ক
জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় আগামী তিন বছরে বাংলাদেশকে ২০০ কোটি ডলার দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম। মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ আশ্বাস দেন তিনি।
বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্টের তিনদিনের এই সফরে বাংলাদেশের জন্য বিশ্বব্যাংকের ঋণ-সহায়তার দ্বিতীয় ঘোষণা এটি। এর আগে শিশু পুষ্টি ও নারীর কর্মসংস্থান খাতে একশ কোটি ডলার ঋণ সহায়তার ঘোষণা দেন জিম ইয়ং কিম।
প্রেস ব্রিফিংয়ে বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম বরিশাল সফরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। একপর্যায়ে তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ বড় ধরনের ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই ঝুঁকির সৃষ্টি হয়েছে। ক্রমবর্ধমান এ ঝুঁকি মোকাবিলায় আমরা বাংলাদেশকে সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাব।
প্রসঙ্গত, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি মোকাবেলায় বিশ্ব ব্যাংক এর আগে যে অর্থ বাংলাদেশকে দিয়েছে, তা এসেছে ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসিসটেন্সের (আইডিএ) বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায়। আলাদাভাবে এই খাতে বিশ্বব্যাংক তহবিল যোগানোর ঘোষণা দিলো এবারই প্রথম।
বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। আর জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে দরিদ্র মানুষই সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হচ্ছে। বাংলাদেশ যাতে দুর্যোগ প্রশমনে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে, সেজন্য বিশ্ব ব্যাংক গ্রুপ এই খাতে আরও সহায়তা করার পরিকল্পনা করেছে।’
দুর্যোগ প্রশমন ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সামনের কাতারে রয়েছে বলে মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে ঝড়, সাইক্লোন ও বন্যার ক্ষতি কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেকাংশে সফল হয়েছে।’
প্রেস ব্রিফিংয়ে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেন। প্রতিশ্রুতি দেন বাংলাদেশের উন্নয়নে আগের মতো পাশে থাকার। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে যেন প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়ে, সে জন্য বিনিয়োগ করবে বিশ্বব্যাংক। এছাড়া বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বিশ্ব ব্যাংকের নীতি আগের মতোই থাকবে।’
পদ্মা সেতুর ব্যাপারে জিম ইয়ং বলন, ‘বিশ্বব্যাংক মনে করে, যেকোনও প্রকল্প দুর্নীতিমুক্ত হওয়া উচিত।’ পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির প্রমাণ পেলে বিশ্বব্যাংক বিষয়টি আমলে নেবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এর আগের দিন (সোমবার) জিম ইয়ং অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক আগামী দুই বছরে বাংলাদেশকে অতিরিক্ত একশ কোটি ডলার ঋণ সহায়তা দেবে। এই অর্থ ব্যয় হবে শিশু পুষ্টি ও নারীর কর্মসংস্থান খাতে।’ ১৭ অক্টোবর ‘বিশ্ব দারিদ্যমুক্ত দিবস’ ঢাকাতে পালন করেন বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে ‘দারিদ্র্যমুক্ত বিশ্বে বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। এছাড়া, মঙ্গলবার সকালে তিনি বরিশালে যান। সেখানে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে নির্মিত একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও আশ্রয়ন কেন্দ্র পরিদর্শন করেন এবং সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করা একটি বাড়ি ঘুরে দেখেন তিনি। এর বাইরে বিশ্ব ব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় পরিচালিত একটি প্রকল্পের আওতায় ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে গাভী পালন ও মাছ চাষ করে ‘স্বাবলম্বী হওয়া’ নারীদের সঙ্গে মত বিনিময় করেন বিশ্বব্যাংকের এই প্রেসিডেন্ট।-বাংলাট্রিবিউন